"কার্ল মার্কস" বইয়ের ভূমিকা থেকে নেয়াঃ আমাদের জাতীয় জীবনে নৈতিক অধঃপতন এবং মূল্যবােধের অবক্ষয় আজ তীব্র আকার ধারণ করেছে। কবি জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) তাঁর সময়ে এ সংকট অনুভব করেছিলেন : অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা; যাদের হৃদয়ে কোনাে প্রেম নেই, প্রীতি নেই, করুণার আলােড়ন নেই- পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া... জীবনানন্দ-কথিত এই আঁধার আক্ষরিক অর্থে সত্য নয়। তবে মানুষের অন্তর্গত যেসব প্রবণতা সমাজে আঁধারের শক্তিকে প্রবল করে, সেগুলাে আজ ভীষণভাবে সক্রিয়। জাতীয় বিপর্যয়ের এই দিনে আমরা সমস্ত সত্তা দিয়ে উপলব্ধি করি যে, আজকের দিনে নতুন প্রজন্মের প্রতি, বিশেষ করে শিশুদের প্রতি বেশি মনােযােগী হওয়া উচিত। কারণ আগামী দিনে তারাই জাতীয় উন্নয়নের অগ্রদূত। জাতি শুধু বাইরের ঐশ্বর্যসম্ভার, দালান-কোঠার সংখ্যা বৃদ্ধি করে বড় হয় না, বড় হয় অন্তরের শক্তিতে, নৈতিক চেতনায় আর জীবন পণ করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানাের ক্ষমতায়। আত্মিক মূল্যবােধ ছাড়া জাতীয় সত্তার ভিত কখনাে মজবুত হয় না। নৈতিক চেতনা ও মূল্যবােধ জীবনাশ্রয়ী হয়ে জাতির সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে পড়লে তবেই জাতি অর্জন করে মহত্ত্ব আর মহৎ কাজের যােগ্যতা। তাই আমরা চাচ্ছি এ সময়ের লেখকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে মানবজাতির আলােকিত সন্তানদের জীবনকথা অবলম্বন করে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি গ্রন্থমালা প্রকাশ করতে। এ গ্রন্থমালার মাধ্যমে আমরা তাদের জানাতে চাই—মানুষ সবসময় এতটা অপরাধী ছিল না, এতটা অনৈতিক ও মূল্যবােধহীন ছিল না, এতটা দুর্বল ও নির্জীব ছিল না, যেমন আজকে আমরা আছি । এই গ্রন্থমালার মাধ্যমে আমরা তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বড় মাপের মানুষ, মহৎপ্রাণের মানুষ আমাদের জাতীয় জীবনে অতীতেও ছিলেন এবং বর্তমানেও আছেন। যারা চিন্তা ও কর্মের মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদ বয়ে এনেছেন। সমগ্র জাতি যখন অন্ধকারে গা ভাসিয়ে নিরুদ্দেশ গন্তব্যের দিকে ধাবিত ঠিক তখন এই গ্রন্থমালা প্রকাশের প্রয়ােজন অনুভব করছি।
জন্ম ১ আগস্ট ১৯৬৬। পৈত্রিক নিবাস পিরােজপুর জেলার জোলাগাতী গ্রামে। শিক্ষা এম. এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কথাসাহিত্যের পাশাপাশি গদ্যসাহিত্যেও সিদ্ধহস্ত প্রকাশিত গ্রন্থ রাত যখন ঘরের মধ্যে ঘর নয়া সন্ত্রাসবাদ মধ্যরাতে তিনটি মেয়ে সাযুজ্যে ও বৈপরীত্যে।