”না-মানুষী বিশ্বকোষ- ২য়”বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা : জীবজগতে মানুষ আজ ‘বড়দা’। অন্তত নৈতিক দিক থেকে ছােটভাইদের দেখভাল করার দায়িত্ব তার অনস্বীকার্য। শুধু নৈতিক কারণে নয়, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে ঐ ছােটভাইদের গুম খুন করে প্রাকৃতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য। মানুষ তাহলে বিশ্ব থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই ভালবাসতে হবে জীবজন্তু-পশু-পাখিদের। আমরা যে ভুল করেছি, আগামী প্রজন্মের মানুষ যেন তা না করে। তাই ওদের নিবিড় করে চিনতে হবে। ইংরেজিতে প্রতিবছর এ নিয়ে অনবদ্য সব গ্রন্থ লেখা হয়, আর মৃত্যুমন্ত্রে দীক্ষিত আমরা কিশাের-বয়স্কদের জন্য আজও লিখে চলেছি শিকারের বই! এজন্য এই তিন খণ্ডে না-মানুষী ‘বিশ্বকোষ’ প্রকাশের প্রয়াস। প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত হয়েছে। জানুয়ারি 1988-এ, তাতে ছিল শুধুমাত্র ‘অমেরুদণ্ডী প্রাণীর কথা! আলােচ্য দ্বিতীয় খণ্ডে মেরুদণ্ডী প্রাণীর চারটি শ্রেণীর সম্বন্ধ আলােচনা করা হয়েছে : মৎস্য, উভচর, সরীসৃপ ও পাখি। ভারতে প্রাপ্তবাদের প্রাধান্য দিলেও সারা বিশ্বের উল্লেখযােগ্য সকলকেই সম্মান জানানাে হয়েছে। অসংখ্য সাদা-কালাে ও রঙিন ছবি। শুধু জীববিজ্ঞানের ছাত্র নয়, গ্রন্থটি সর্বসাধারণের অবশ্যপাঠ্য। আসন্ন তৃতীয় খণ্ডে থাকবে শুধু স্তন্যপায়ী প্রাণীর কথা।
Narayon Sanyal ( ২৬শে এপ্রিল, ১৯২৪ - ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৫) আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত লেখক। এছাড়াও তিনি একজন পুর প্রকৌশলী । নিত্য নতুন বিষয়বস্তু নির্বাচন ছিল তাঁর রচনাশৈলীর এক বৈশিষ্ট্য। লেখকের আদি নিবাস নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর। তিনি কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ছিলেন। স্কুলের খাতায় নাম ছিল নারায়নদাস সান্যাল। ১৯৪৮ সালে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি.ই. সম্পন্ন করেন। তিনি ইন্সটিট্যুট অব ইঞ্জিনিয়ার্স (ইন্ডিয়া)-এর ফেলো ছিলেন। ১৯৮২ সালে সরকারী চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছিলেন। সাহিত্যজগতে নারায়ন সান্যাল তাঁর বকুলতলা পি এল ক্যাম্প ও দন্ডক শবরি গ্রন্থের জন্য বিশেষভাবে পরিচত। পি.ডব্লু.ডি তে চাকরি করাকালীন দণ্ডকারণ্য অঞ্চলে তাঁর পোস্টিং হয়, জীবনের অভিজ্ঞতায় এই দুটি উপন্যাস লেখেন যা বিদগ্ধ পাঠক মহলে সমাদৃত হয়। এছাড়া বিজ্ঞান, শিল্প স্থাপত্য ভাস্কর্য ও সামাজিক, ঐতিহাসিক উপন্যাস প্রচুর লিখেছেন। শিশু কিশোরদের জন্যেও তাঁর রচনা সুখপাঠ্য। তাঁর অন্যান্য রচনাগুলির মধ্যে বিশ্বাসঘাতক, ষাট একষট্টি, হে হংসবলাকা, নক্ষত্রলোকের দেবতাত্মা, আবার যদি ইচ্ছা করো, অরণ্য দন্ডক, অশ্লীলতার দায়ে, না মানুষের পাঁচালী উল্লেখযোগ্য। রহস্য গোয়েন্দা কাহিনীও লিখেছেন, তাঁর কাঁটা সিরিজ নামে খ্যাত বইগুলির মূল চরিত্র ব্যারিস্টার পি কে বাসু স্ট্যানলি গার্ডেনারের প্যারি ম্যাসন এর আদলে তৈরি। তার রচিত কাহিনী নাগচম্পা (যদি জানতেম), সত্যকাম, পাষণ্ড পন্ডিত চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। রবীন্দ্র পুরস্কার - অজন্তা অপরূপা-১৯৬৯, বঙ্কিম পুরস্কার - রূপমঞ্জরী-২০০০, পুরস্কারে ভূষিত হন।