"মায়াকোভস্কির শ্রেষ্ঠ কবিতা" বইটির 'দ্বিতীয় সংস্করণের নিবেদন' অংশ থেকে নেয়াঃ ঠিক দশ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর মায়াকোভস্কির শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটি পুনর্মুদ্রিত হচ্ছে। সহৃদয় প্রকাশকের এই সিদ্ধান্ত থেকে অবশ্যই অনুমান করে নেওয়া যেতে পারে যে এই কবিতা বাঙালি পাঠক এখনও পড়তে চাইছেন। কারণ এই গ্রন্থের প্রকাশক স্বয়ং পাঠকের মনের খোঁজ খবর যে অনেকটাই রাখেন সে প্রমাণ আমরা ইতিপূর্বে বারবার পেয়েছি। হয়তাে এমন হতে পারে যে পূর্ব ইয়ােররাপের সাম্প্রতিক পালাবদলের টানে মায়াকোভস্কি সম্পর্কে মানুষের কৌতুহল কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, আবার হয়তাে মায়াকোভস্কির কবিতা পর্যালােচনায় নতুন মাত্রা সংযােজিত হয়েছে—আমরা সে সব বিচারের বিতর্কে প্রবেশ করতে চাইছি না। সে সব করবেন বিদগ্ধ তাত্ত্বিকরা। আমাদের শুধু বিশুদ্ধ মায়াকোভস্কিকে সাধারণ কাব্য রসিকদের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস। দ্বিতীয় সংস্করণে ইচ্ছে থাকলেও সাধ্য হল না নতুন কিছু কবিতার সংযােজন করতে। সময়টি এমনই যে সে প্রয়াস নিতে গেলে বইটির প্রকাশ অনেক পিছিয়ে যেত। তবে আমরা যেহেতু এই ব্যাপারে কিছুটা প্রস্তুতি নিচ্ছিলামই, তাই যদি তৃতীয় কোনাে সংস্করণ হয় তাহলে অবশ্যই আরও কিছু কবিতা সংযােজিত করার চেষ্টা করব।
জন্ম: নভেম্বর ২৫, ১৯৩৪ সালে জীবনানন্দ-উত্তর যুগের বাংলা সাহিত্যের একজন প্রধান আধুনিক কবি। বাঙালি-ভারতীয় এই কবি বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে বিশেষভাবে পরিচিত এবং আলোচিত ছিলেন। শক্তি চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ এর জয়নগর - মজিলপুরের দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম বামানাথ চট্টোপাধ্যায়। কলকাতার কাশিমবাজার স্কুলে পড়তেন। দারিদ্রের কারণে তিনি স্নাতক পাঠ অর্ধসমাপ্ত রেখে প্রেসিডেন্সি কলেজ ছাড়েন এবং সাহিত্যকে জীবিকা করার উদ্দেশ্যে উপন্যাস লেখা আরম্ভ করেন। কলেজজীবনে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। প্রথম উপন্যাস লেখেন কুয়োতলা। কিন্তু কলেজ - জীবনের বন্ধু সমীর রায়চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বনাঞ্চল - কুটির চাইবাসায় আড়াই বছর থাকার সময়ে শক্তি চট্টোপাধ্যায় একজন সফল লিরিকাল কবিতে পরিণত হন। একই দিনে বেশ কয়েকটি কবিতা লিখে ফেলার অভ্যাস গড়ে ফেলেন তিনি। শক্তি নিজের কবিতাকে বলতেন পদ্য। ভারবি প্রকাশনায় কাজ করার সূত্রে তার শ্রেষ্ঠ কবিতার সিরিজ বের হয়। পঞ্চাশের দশকে কবিদের মুখপত্র কৃত্তিবাস পত্রিকার অন্যতম কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তার উপন্যাস অবনী বাড়ি আছো? দাঁড়াবার জায়গা ইত্যাদি প্রকাশিত হয়। রূপচাঁদ পক্ষী ছদ্মনামে অনেক ফিচার লিখেছেন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'হে প্রেম, হে নৈশব্দ' ১৯৬১ সালে প্রকাশিত হয় দেবকুমার বসুর চেষ্টায়। ১৯৭০ - ১৯৯৪ আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি করেছেন। ১৯৬১ সালের নভেম্বরে ইশতাহার প্রকাশের মাধ্যমে যে চারজন কবিকে হাংরি আন্দোলন - এর জনক মনে করা হয় তাঁদের মধ্যে শক্তি চট্টোপাধ্যায় অন্যতম । সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার সহ তিনি একাধিক পুরস্কারে সন্মানিত । তিনি মার্চ ২৩, ১৯৯৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন।