বাঙালিদের মধ্যে স্বাস্থ্য-সচেতনা বেড়েছে তবু তেলের ঝোঁক বিশেষত সর্ষের তেলের ঝোঁক যায় কই। এখন অবশ্য অনেকেই বুঝেছেন অম্লরুগি হয়ে বেঁচে থাকায় এবং ঘন ঘন হজমের ওষুধ খাওয়ার মধ্যে কোনো সুখ নেই সেইজন্যে অনেকেই অল্প তেল খান, অনেকে আবার সেদ্ধ করা খাদ্য বস্তুর দিকে ঝুঁকেছেন। এই সব ভেবেই ‘বিনা তেলে রান্না' বইটি লেখা । এই বইটিতে শুধু বিনা তেলে রান্নার কথাই লেখা হয়নি—লো ক্যালরি ডায়েটের কথা লেখা হয়েছে—যাতে শরীরে বাড়তি চর্বি বা মেদ জমতে না পারে এবং শরীর স্লিম ও ঝরঝরে থাকে। সেইজন্যেই স্যুপ ইত্যাদিতে মাখন-তোলা বা স্কিমড্ মিল্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কোথাও তেল ঘি বা মাখনের ব্যবহার নেই এই রেসিপিগুলোয় — শুধু বেকিং টিন ‘গ্রিজ’ করতে টিনে একটু মাখন লাগাতে বলা হয়েছে এইমাত্র। বারোটি অধ্যায়ে বিভক্ত এই বইয়ে শতাধিক রান্নার পদ্ধতি বা রেসিপি লেখা হয়েছে। সমস্ত ডিনার বা লাঞ্চ এমন কি চায়ের সঙ্গে জলখাবারও এই বই-এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি করে নেওয়া যায়। বইটি শুরু হয়েছে ক্ষুধাবর্ধক বা অ্যাপেটাইজার কিম্বা পানীয় দিয়ে। তারপরে একে একে এসেছে স্যুপ, স্যালাড, ডিপ রায়তা, আচার চাটনি, ভাত, রুটি, তরি তরকারি ও ডাল, মাছ, মটন, চিকেন, ডিম, ডেজার্ট বা মিষ্টিপদ এবং সব শেষে চায়ের সঙ্গে টা। এই বইটি পড়ে যদি কেউ রান্নাগুলো করে দেখেন, সফল হন এবং নিজে খেয়ে ও সকলকে খাইয়ে পরিতৃপ্ত হন তাহলেই আমাদের এই প্রচেষ্টা সার্থক হবে।
সাধনা মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ৬ ডিসেম্বর ১৯৩৪, এলাহাবাদে। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্রী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও পড়াশুনা করেছেন। কর্মজীবন শিক্ষকতা দিয়ে শুরু। পরে আনন্দবাজার পত্রিকা সংস্থায় দীর্ঘদিন সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। অবসর নেওয়ার পর অবৈতনিক শিক্ষাদান ও সমাজ সেবামূলক কাজে নিযুক্ত।। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তাঁর কবিতা ‘দেশ’ ও অন্যান্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম প্রকাশিত কবিতার বইয়ের নাম ‘আকাশ কন্যা’, পরে রমণী গোলাপ’, ‘ছুঁই মুই লজ্জাবতী’, ক্যাপ্টেনের স্ত্রীর রবীন্দ্রসঙ্গীত ইত্যাদি। ভৌগোলিক বিষয়ক ও শিশুদের জন্যে। ‘জানা-অজানা (দু খণ্ডে) ‘দুঃসাহসিক অভিযান’, ‘বারো মাসের কথা ইত্যাদি বইয়ের সংখ্যা সাতটি। ছোটদের গল্পের বইও প্রকাশিত হয়েছে। রান্নাবান্না নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তাঁর হবি। রান্না। ও রান্না সংক্রান্ত বই শুরু করেছিলেন রান্না করে দেখুন বই দিয়ে। তারপর চায়ের সঙ্গে টা’, ‘জ্যাম জেলি আচার চাটনি’, ‘সুস্থ থাকতে খাওয়া-দাওয়ায় শাকসবজি মশলাপাতি’ ইত্যাদি। সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি হিসেবে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।