"আল্লাহর পরিচয়" বইটির, অনুবাদকের নিবেদন অংশ থেকে নেয়াঃ পাকিস্তানের লাহাের কিং এডওয়ার্ড মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র। হঠাৎ বাংলাদেশী একটি জামাতের হাতে তাশকিল হলেন চিল্লায়। তাবলীগ জামাতের সেই প্রথম চিল্লাতেই তার চেতনার উপর দিয়ে বয়ে গেল প্রচণ্ড এক ঝড়। যা একেবারে আমূল পাল্টে দিল তাঁর জীবন ও জীবনের গতিপথ। নতুন ইসলামী চেতনা ধারণ করে চিল্লা থেকে যখন ফিরলেন, মেডিকেলের লােভনীয় জীবনে তিনি আর ফিরে গেলেন না। ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ'র হাতছানি অগ্রাহ্য করে ভর্তি হলেন দীন শিক্ষার অদম্য আগ্রহ নিয়ে মাদরাসায়। লাহােরের অদূরে রায়বেন্ডের জামেয়া আরাবিয়া থেকে ফারেগ হলেন কুরআন, হাদীস, ফিক্হ এর একজন পারদর্শী ও তুখাের আলেম হিসেবে। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে জন্ম নেওয়া সেই বিরল ব্যক্তিত্বই আজকের বিশ্বব্যাপী দাওয়াত ও তাবলীগের জীবন্ত কিংবদন্তি আলেম হযরত মাওলানা তারিক জামিল। তাঁর বয়ানের অসাধারণ সম্মােহনী শক্তি শ্রোতার সামনে আখেরাতকে করে তােলে জীবন্ত, ক্ষণস্থায়ী জীবনের মােহ-মায়াজাল ছিন্ন করে মানুষকে জাহান্নামের ভয়াবহ আযাব থেকে বাঁচার জন্য করে ব্যাকুল, জান্নাতী জীবনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কুরবানী দিতে তাকে করে দেয় উদগ্রীব। ‘আল্লাহর পরিচয়’ পুস্তিকাটি মাওলানা তারিক জামিলের একটি বয়ান সংকলন থেকে মহান আল্লাহ্র তাওহীদ-অদ্বিতীয়তা ও তাঁর পরিচিতিমূলক অসাধারণ দু’টি বয়ানের তরজমা। আমরা বয়ান ও বক্তব্যের ধারাটিকেই তরজমায় অপরিবর্তিত রেখেছি। পাঠকের সুবিধা বিবেচনা করে কুরআনের আয়াতসমূহের ক্ষেত্রে সূরা ও আয়াত নম্বর উদ্ধৃত করা হয়েছে। শুধু এই বাড়তি সংযােজনটুকুই আমরা করেছি। খুব তাড়াহুড়া করে কাজটি সম্পাদিত হলেও আমরা পাঠকের কাছে যথাসাধ্য নির্ভুল একটি পুস্তক উপহার দেওয়ার আন্তরিক প্রচেষ্টা পরিপূর্ণরূপেই করেছি। সাধ ও সাধ্যের বাইরের ভুলত্রুটিগুলাে পরবর্তীতে শােধরানাের সংকল্প রইল। এ ব্যাপারে পাঠকেরও আন্তরিক সহযােগিতা কামনা করি। আল্লাহ তাআলা মাওলানা তারিক জামিলকে দীর্ঘজীবি করুন। তাঁর সকল মেহনত, কষ্ট, মুজাহাদা কক্ল করুন। বিশ্বব্যাপী মেহনতকে ব্যাপকতর করে দিন। আমীন।
তারিক জামিল (যিনি মাওলানা তারিক জামিল নামে অধিক পরিচিত, জন্ম: ১ অক্টোবর ১৯৫৩) একজন প্রভাবশালী পাকিস্তানি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, দায়ী এবং তাবলিগ জামাতের সদস্য। ইসলাম প্রচারক হিসেবে তার সাধারণ জীবনযাত্রা এবং পাশাপাশি উর্দু ও আরবিতে সাবলীল বক্তৃতা তাকে মুসলিম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে। মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, অভিনেতা, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষকে তিনি প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন।[১] শিক্ষাজীবনে তিনি তাবলিগ জামাত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ডাক্তারি পড়াশোনা ছেড়ে নিজেকে ইসলাম শিক্ষায় নিয়োজিত করেছিলেন। ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সমাজসেবা ও শিক্ষায় অবদানের অংশ হিসেবে তিনি মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন, জামিয়া আল হুসায়নিয়া মাদ্রাসা ও মিম একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২১ সালে তিনি এমটিজে ব্র্যান্ড নামে একটি কাপড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে তিনি সবসময় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিম জরিপে শীর্ষ ৫০-এ অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি দুইবার প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছেন।