‘পথে প্রবাসে’ বইয়ের পরিচায়িকাঃ বাংলা ভাষায় সার্থক ভ্ৰমণ-কাহিনী খুব বেশি নেই। তার কারণ কী, বলা কঠিন। একালের বাঙালীকে ঘরকুনো অপবাদ দেওয়া যায় না। এদেশে ইংরেজ শাসন পত্তন হয়েছিল বাংলা বোম্বাই মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে। তার মধ্যে বাংলা প্রেসিডেন্সি ছিল প্রধান। এখানেই ছিল গভর্নর-জেনারেল ও ভাইসরয়ের সদর দফতর। কলকাতা বহুকাল ছিল ব্রিটিশ-শাসিত ভারতের রাজধানী। ১৯১১ সালে রাজধানী উঠে যায় দিল্লীতে। তার পূর্ব পর্যন্ত কলকাতা ও বাংলা প্রেসিডেন্সির প্রাধান্য ছিল অবশ্য-স্বীকার্য। ইংরেজের সঙ্গে বাঙালী কোথায় না গেছে! ইংরেজ যেমন যেমন ভারত-বর্মা-আফগানিস্তান-মালয় দখল করেছে, বাঙালীও তেমন তেমন ইংরেজ অনুচর হয়ে ঐ সব অঞ্চলে থানা গেড়েছে। বাঙালী ডাক্তার, শিক্ষক, উকিল আর যুদ্ধের সরবরাহ বা কমিসারিয়েট-বিভাগের কেরানী ভারতের সর্বত্র পৌছেছে। আর যেখানেই গেছে সেখানেই গড়েছে একটি করে কালীবাড়ি। গত শতাব্দীর বাঙালীকে তাই ভারতের সব মুল্লুকে দেখতে পাওয়া যেত। ঐ সব এলাকায় বাঙালী নিছক পরিব্রাজক হয়ে যায়নি, গিয়েছিল ইংরেজ অনুচর রূপে। তবু নতুন দেশ নতুন লোক-সমাজ নতুন পরিবেশ তাকে আগ্রহী আর উৎসুক করে তুলেছিল। এই শ্রেণীভুক্ত কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চীন-ভ্রমণবৃত্তান্ত তার পরিচয়স্থল। উনবিংশ শতকের বাঙালী সাহিত্যে অনেক নতুন পথের সন্ধান দিল। খুলে দিল অনেক নতুন দরজা। মহাকাব্য, আখ্যানকাব্য, গীতিকাব্য, নাট্যকাব্য, সনেট, ট্রাজেডি, কমেডি, প্রহসন, উপন্যাস, ছোটগল্প, গুরুপ্রবন্ধ, লঘু নিবন্ধ, ব্যক্তিক গদ্যরচনা, কমিক নকশা : সবই দেখা গেল গত শতকে, তদনুপাতে সাৰ্থক ভ্ৰমণ কাহিনীর পরিমাণ অল্প। সার্থক ভ্ৰমণকাহিনী রচনা সোজা নয়। তার জন্য চাই পাকা হাত আর সজাগ দৃষ্টি। নতুন দেশে এলে ভ্ৰমণকারীর মন সজাগ হয়ে ওঠে, দশ ইন্দ্ৰিয় দিয়ে পেতে চায় অভিনবকে; জীবনের নব নব আনন্দের জানলা খুলে যায় তার সামনে। সেই আনন্দ যখন নিপুণভাবে পরিবেষিত হয়—বস্তুপিণ্ড-বর্জিত হয়ে সার পরিবেষিত হয়— তখন পাঠক হয়ে ওঠে ভ্রমণকারীর মানসসঙ্গী। কোনো নতুন শহরে বা বন্দরে বা তীর্থে ভ্রমণের পরিচয় নয়, সেখানকার সুস্বাদু ভোজ্য-তালিকা, সুলভ বস্তুতালিকাও নয়, বা হোটেল-বিবরণ নয়। ভ্ৰমণ-কাহিনী তার চেয়ে অতিরিক্ত কিছু। এই অতিরিক্ত তিনিই দিতে পারেন যাঁর চোখ কান খোলা, ইন্দ্ৰিয়গ্রাম থাকে সচেতন। ভ্ৰমণকাহিনী ভ্ৰমণ ও কাহিনীর যোগফল মাত্র নয়, তার চেয়ে স্বতন্ত্র কিছু। এই স্বাতন্ত্র্য তার চরিত্রে, তার মেজাজে, তার উপস্থাপনায়। বাংলা ভাষায় অনেক সময় ভ্ৰমণকাহিনীর নামে ছদ্মবেশী কাহিনী পরিবেষিত হয়। তাকে বলা উচিত ভেজাল ভ্রমণকাহিনী। ভ্রমণের অছিলায় এক জোড়া নরনারীর হৃদয় আদান-প্রদানের বৃত্তান্তকে ভ্ৰমণকাহিনী বলা উচিত নয়। আবার ট্রেনে টাইম-টেবিল ধরে ধারাবাহিকভাবে স্টেশনঅনুবর্তী স্থানগুলির বৃত্তান্তও সত্যিকারের ভ্রমণ-কাহিনী নয়। এই সব ভেজাল ভ্ৰমণকাহিনীর উদাহরণ আমাদের চোখের সামনেই আছে, সেগুলির উল্লেখ বাহুল্যমাত্র। সার্থক ভ্ৰমণকাহিনী কোন কারণে বিরলসংখ্যক, তা এতক্ষণে আমরা অনুমান করতে পারছি। বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক ভ্ৰমণকাহিনীর উদাহরণ বঙ্কিমচন্দ্রের অগ্রজ সঞ্জীবচন্দ্ৰ চট্টোপাধ্যায়ের ‘পালামৗ’। তঁর রচনাশক্তির শ্রেষ্ঠ নিদর্শন পালামৗ ভ্ৰমণকাহিনী। তাঁর দৃষ্টির নবীনতা ও সজীবতা ‘পালামৗ’-পাঠক পদে পদে অনুভব করেন। পালামৗ ভ্ৰমণবৃত্তান্ত সঞ্জীবচন্দ্ৰ যে ছাঁদে লিখেছেন, তাতে প্রসঙ্গক্রমে আশপাশের নানা কথা এসেছে। পালামৗবাসী কোল সমাজ, আপনি বাঙালী সমাজ, অরণ্য-প্রকৃতি, বিশ্বপ্রকৃতি, বনবাসীদের সঙ্গে বনের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক, লেখকের সংস্কার-মুক্ত রূপরসিক মন, লেখকের প্রৌঢ়জীবনের স্বাগত চিন্তা—সবই এখানে স্থান পেয়েছে। সব কিছুকে ছাপিয়ে উঠেছে সঞ্জীবচন্দ্রের মন, যা নতুন জায়গায় সচেতন ও সজাগ হয়ে উঠে আনন্দ আহরণ করতে পারে। সঞ্জীবচন্দ্র ছিলেন শিল্পী। তাই নিছক ‘কবিত্ব’ করেন নি, নিপুণ অনিবার্য রেখাপাতে একটি ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। লাতেহার পাহাড়ের বর্ণনাটি তার পরিচয়স্থল: ‘নিত্য অপরাহ্ণে আমি লাতেহার পাহাড়ের মোড়ে গিয়া বসিতাম, তাঁবুতে শতকার্য থাকিলেও আমি তাহা ফেলিয়া যাইতাম! চারিটা বাজিলে আমি অস্থির হইতাম। কেন কখনও ভাবিতাম না; পাহাড়ে কিছুই নূতন নাই; কাহারও সহিত সাক্ষাৎ হইবে না, কোন গল্প হইবে না, তথাপি কেন আমার সেখানে যাইতে হইবে জানি না। এখন দেখি এ রোগ আমার একার নহে। যে সময়ে উঠানে ছায়া পড়ে, নিত্য সে সময় কুলবধুর মন মাতিয়া উঠে, জল আনিতে যাইবে; জলে যে যাইতে পাইল না সে অভাগিনী, সে গৃহে বসিয়া দেখে উঠানে ছায়া পড়িয়ছে, আকাশে ছায়া পড়িতেছে, পৃথিবীর রং ফিরিতেছে, বাহির হইয়া যে তাহা দেখিতে পাইল না, তাহার কত দুঃখ। বোধ হয় আমিও পৃথিবীর রং ফেরা দেখিতে পাইতাম। কিন্তু আর একটি আছে, সেই নির্জন স্থানে মনকে একা পাইতাম, বালকের ন্যায় মনের সহিত ক্রীড়া করিতাম। এখানে কবিত্ব করার কোন প্রয়াস নেই, অথচ লেখক তাঁর প্রকৃতি-ব্যাকুলতাকে নিপুণভাবে প্রকাশে সমর্থ হয়েছেন। বিকেলের পৃথিবীর রং ফিরছে, এই দৃশ্য দেখার জন্য প্রত্যেক মানুষই অস্থির হয়ে ওঠে : লেখক এই জীবনসত্যকে এখানে অবলীলায় প্রকাশ করেছেন। শহরের দৈনন্দিন জীবনের নিশ্চিছদ্র অবসরহীন কর্মপ্রবাহে আমরা বিকেলে পৃথিবীর রঙ ফেরা দেখি না, একা আপন মনের মুখোমুখি হই না। তার জন্য প্রয়োজন ছুটি— দৈনন্দিন জীবনের কর্মপ্রবাহ থেকে ছুটি। সেই ছুটি আমরা পাই ভ্ৰমণে আর সেই ছুটি আনন্দ রূপ পায় সার্থক ভ্রমণ-সাহিত্যে। এ না হলে সব আয়োজন বৃথা। অল্প বয়সে-আঠারো-বিশ বছর বয়সে-রবীন্দ্ৰনাথ গিয়েছিলেন ইউরোপে। একটি সচেতন অনুভূতিপ্রবণ তরুণ মনের উপর চঞ্চল ইউরোপ যে গভীর প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তার পরিচয়স্থল ‘য়ুরোপে প্রবাসীর পত্ৰ’ আর ‘য়ুরোপ যাত্রীর ডায়েরি’। যৌবনের উন্মাদনা আর চাঞ্চল্য; প্রাণাবেগের উৎসাহ আর স্মৃর্তি শত তরঙ্গভঙ্গে প্রাচী-র প্রতিনিধি তরুণ রবীন্দ্রনাথের চিত্ততটভূমিতে আছড়ে পড়েছে, তারই প্রতিক্রিয়া এ দুই ভ্ৰমণকাহিনী, এ দুটির মধ্য দিয়ে আমরা এক তরুণ ভ্ৰমণকারীকে পাই—যাঁর মন সদাজাগ্ৰত, কৌতুহলী, জীবন সম্পর্কে সদা-সচেতন। রবীন্দ্রনাথের সার্থক ভ্রমণকাহিনী— ‘ছোটনাগপুর’ (১২৯২ আষাঢ়)—প্রমাণ করে লেখকের সচেতন মনের ক্রিয়া। আসল কথা, এই জাগ্ৰত কৌতুহলী সদাসচেতন মন একটা সার্থক ভ্রমণ-কাহিনীর মূলে সক্রিয় থাকে। নিখুঁত পর্যবেক্ষণ ও তার নিপুণ রূপায়ন ভ্ৰমণ-কাহিনীর সফলতার মূলে অনেকটা কাজ করে। সব সময় এই সব ক’টি উপাদানের সমাবেশ হয় না বলেই অনেক লেখাই সার্থক ভ্ৰমণকাহিনী হয়ে ওঠে না। নবীনচন্দ্র সেনের ‘প্রবাসের পত্র’ বা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘বিলাতের পত্ৰ’ তাই সার্থক হয়ে ওঠে নি। বরং জলধর সেনের ‘হিমালয়’ ভ্ৰমণকাহিনী হিসেবে সার্থক হয়ে উঠেছে। এই লেখকের কোনো সাজ বা ঠাঁট নেই, আছে সহজ অন্তরঙ্গতা, আছে ঘরোয়া ঢঙ, আছে সাবলীলতা। তিনি যা দেখেছেন তা অন্তরঙ্গভাবে ঘরোয়া ভঙ্গিতে পাঠকের কাছে পেশ করেছেন। বিংশ শতাব্দীতে ভ্ৰমণকাহিনীতে ভেজাল দেখা যায়। বোধ করি তার সূচনা শরৎচন্দ্রের রচনায়, যদিচ তাঁর সে সচেতন অভিলাষ ছিল না। ‘শ্ৰীকান্তের ভ্রমণকাহিনী’ নাম দিয়ে শরৎচন্দ্ৰ পর্বে পর্বে উপন্যাস লিখেছিলেন; পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশের সময় তার নাম হয় শ্ৰীকান্ত। ভ্রমণবৃত্তান্তের শিথিলগ্রথিত কাহিনীর আধারে নরনারীর প্ৰেমাখ্যান পরিবেষণের সেই সূচনা। পরে এই রীতি বাংলায় বহুল প্রচলিত হয়েছে। বস্তুত বিশুদ্ধ ভ্ৰমণকাহিনী কমই লেখা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের পূর্বোক্ত তিনটি গ্রন্থ ছাড়া পরবর্তী ভ্ৰমণবিবরণসমূহ (জাপানযাত্রী’, ‘জাভাযাত্রীর পত্র’, ‘পশ্চিম-যাত্রীর ডায়ারী’)বিশুদ্ধ ভ্ৰমণকাহিনী নয়। এগুলি ডায়ারি-সচেতন মনের অবিরাম বকুনি’। আর এক-ধরনের রচনা আছে, যা সৌন্দর্য উপভোগের ফল, বিশুদ্ধ ভ্ৰমণকাহিনী নয়;— যেমন বলেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কণারক’,—যা কণারকের মতোই সৌন্দর্যে মদির হয়ে উঠেছে। একালের উৎকৃষ্ট ভ্রমণকাহিনীর উদাহরণ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পথে বিপথে', অতুলচন্দ্র গুপ্তের ‘নদীপথে’, উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হিমালয়-সম্পর্কিত ভ্ৰমণ গ্রন্থাবলী। প্রথমটিকে বিশুদ্ধ ভ্ৰমণকাহিনী বলতে অনেকেই রাজী হবেন না, কারণ এখানে মাঝে মাঝে বাস্তব ও স্বপ্ন, রিয়ালিটি ও ফ্যান্সির সংমিশ্রণ ঘটেছে। পরবর্তী লেখক দুজনের রচনা বিশুদ্ধ ভ্ৰমণকাহিনী, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই।
(মার্চ ১৫, ১৯০৪ - অক্টোবর ২৮, ২০০২), একজন স্বনামধন্য বাঙালি কবি ও লেখক। ভারতের উড়িষ্যা জেলার তার জন্ম। তিনি একজন বিখ্যাত ছড়াকারও। অন্নদাশঙ্করের জন্ম হয় ব্রিটিশ ভারতে বর্তমান উড়িষ্যার ঢেঙ্কানলে । তাঁর পিতা ছিলেন ঢেঙ্কানল রাজস্টেটের কর্মী নিমাইচরণ রায় এবং তাঁর মাতা ছিলেন কটকের প্রসিদ্ধ পালিত বংশের কন্যা হেমনলিনী । ছোটবেলায় ঢেঙ্কানলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় । ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন । এরপর সংবাদপত্রের সম্পাদনা শিখতে কলকাতা বসুমতী পত্রিকার সম্পাদক হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষের কাছে যান । তিনি শর্টহ্যান্ড, টাইপরাইটিং এবং প্রুফরিডিং-ও শেখেন । কিন্তু এই কাজ তাঁর ভালো লাগেনি । এরপর তিনি কটকের র্যাভেনশ কলেজ থেকে আই.এ পরীক্ষা দেন এবং তাতে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন । ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পরীক্ষাতেও তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম স্থানাধিকারী হন । ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে এম.এ পড়তে পড়তে আই.সি.এস পরীক্ষায় তিনি দ্বিতীয়বারে পূর্ববর্তী রেকর্ড ভেঙে প্রথম স্থান অধিকার করেন । তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে এ গৌরব লাভ করেন। সেই বছরেই তিনি সরকারি খরচে আই.সি.এস হতে ইংল্যান্ড যান । সেখানে তিনি দুই বছর ছিলেন । এই সময়ে তাঁর ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনী পথে প্রবাসে বিচিত্রায় প্রকাশিত হয় । ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন কন্যা অ্যালিস ভার্জিনিয়া অনফোর্ডকে বিবাহ করে তিনি তাঁর নাম দেন লীলা রায় । লীলা রায় বহু বই বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন । অন্নদাশঙ্করের অনেক লেখা লীলাময় ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়েছিল । ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম নদীয়া জেলার ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে কাজে যোগ দেন । তিনি বছর এই পদে থেকে বিভিন্ন জেলায় কাজ করে কুমিল্লা জেলায় জজ হিসাবে নিযুক্ত হন । ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সরকারী কাজে নিযুক্ত থেকে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিচার বিভাগের সেক্রেটারি হন । ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্বেচ্ছায় সরকারী চাকরি থেকে অবসর নেন । ২৮ অক্টোবর , ২০০২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।