"তাফহীমুল কুরআন ১০ম খণ্ড "বইটির প্রথমের কিছু অংশ: সূরা আল ফুরকান নামকরণ প্রথম আয়াতঃ 1 1 থেকে সূরার নাম গৃহীত হয়েছে। কুরআনের অধিকাংশ সূরার মতাে এ নামটিও বিষয়বস্তু ভিত্তিক শিরােনাম নয়, বরং আলামত হিসেবে সন্নিবেশিত হয়েছে। তবুও সূরার বিষয়বস্তুর সাথে নামটির একটি ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। সামনের দিকের আলোচনা থেকে একথা জানা যাবে। <ন>নাযিলের সময়কাল বর্ণনাভংগী ও বিষয়বস্তু পর্যালােচনা করলে পরিষ্কার মনে হয়, এ সূরাও সূরা মু'মিনূন ইত্যাদি। সূরাগুলাের সমসময়ে নাযিল হয়। অর্থাৎ সময়টি হচ্ছে, রসূলুল্লাহ সা.-এর মক্কায় অবস্থানকালের মাঝামাঝি সময়। ইবনে জারীর ও ইমাম রাযী দাহ্হাক ইবনে মুযাহিম ও মুকাতিল ইবনে সুলাইমানের একটি রেওয়ায়াত উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, এ সূরাটি সূরা নিসার ৮ বছর আগে নাযিল হয়। এ হিসেবেও এর নাযিল হবার সময়টি হয় মক্কী যুগের মাঝামাঝি সময় (ইবনে জারীর, ১৯ খণ্ড, ২৮-৩০ পৃষ্ঠা ও তাফসীরে কবীর, ৬ খণ্ড, ৩৫৮ পৃষ্ঠা)। <ন>বিষয়বস্তু ও কেন্দ্রীয় আলােচ্য বিষয় কুরআন, মুহাম্মদ সা.-এর নবুওয়াত এবং তাঁর পেশকৃত শিক্ষার বিরুদ্ধে মক্কার কাফেরদের পক্ষ থেকে যেসব সন্দেহ ও আপত্তি উত্থাপন করা হতাে সেগুলাে সম্পর্কে এখানে আলােচনা করা হয়েছে। এর প্রতিটির যথাযথ জবাব দেয়া হয়েছে এবং সাথে সাথে সত্যের দাওয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার খারাপ পরিণামও পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। শেষে সূরা মু'মিনূনের মতাে মু'মিনদের নৈতিক গুণাবলীর একটি নকশা তৈরি করে সেই মানদণ্ডে যাচাই করে খাটি ও ভেজাল নির্ণয় করার জন্য সাধারণ মানুষের সামনে রেখে দেয়া হয়েছে। একদিকে রয়েছে এমন চরিত্রসম্পন্ন লােকেরা যারা এ পর্যন্ত মুহাম্মদ সা.-এর শিক্ষার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে এবং আগামীতে যাদেরকে তৈরি করার প্রচেষ্টা চলছে। অন্যদিকে রয়েছে এমন নৈতিক আদর্শ যা সাধারণ আরববাসীদের মধ্যে পাওয়া যায় এবং যাকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য জাহিলিয়াতের পতাকাবাহীরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন আরববাসীরা এ দু’টি আদর্শের মধ্যে কোন্টি পসন্দ করবে তার ফয়সালা তাদের নিজেদেরকেই করতে হবে। এটি ছিলাে একটি নীরব প্রশ্ন। আরবের প্রত্যেক অধিবাসীর সামনে এ প্রশ্ন রেখে দেয়া হয়। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে একটি ক্ষুদ্রতম সংখ্যালঘু গােষ্ঠী ছাড়া বাকি সমগ্র জাতি এর যে জবাব দেয় ইতিহাসের পাতায় তা অম্লান হয়ে আছে।