দাঙ্গা! শব্দটি কানে যাওয়া মাত্র সর্বাঙ্গ দিয়ে হিম-শিহরণ প্রবাহিত হয়ে যায়। কারণ এর সঙ্গে অপরিহার্যভাবে যুক্ত নির্বিচারে হত্যা, নিরপরাধের রক্তস্রোত, আঘাত, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অসহায়ের বুকফাটা হাহাকার, অগ্নিসংযােগে। ভস্মসাৎ দরিদ্র দেশের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। মানুষের শত শতাব্দীর সাধনায় অর্জিত সভ্যতা-সংস্কৃতি- যুক্তিবাদের অনুশীলনকে নিমেষে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে তাকে রক্তলােলুপ উন্মত্ত এক জীবে পরিণত করে তার আদিম বর্বরতার যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। হিন্দু-মুসলমান, হিন্দু-শিখ, শিয়া-সুন্নি, হিন্দুবৌদ্ধ-জৈন-খ্রিস্টান, মুসলমান-বৌদ্ধ প্রমুখ 'ধর্মের নামে দাঙ্গা ছাড়াও সমাজের অগ্রসর অনগ্রসর ও আদিবাসী, ভাষার নামে মারাঠী গুজরাটি-কন্নড়-অসমীয়া-বাঙলা ওড়িয়া-হিন্দ উর্দুসহ বিভিন্ন ভাষা নিয়েও দাঙ্গা সজ্ঞাটিত হয়ে চলেছে ভারতে প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । নানা অজুহাতে দাঙ্গার যেন আর শেষ নেই। ' এইসব দাঙ্গার কারণ ও পরিণতির কথা। ' বিশদভাবে আলােচিত হয়েছে এই গ্রন্থে। দাঙ্গা ' নিয়ে এই রকম একখানি গবেষণামূলক পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ এযাবৎ প্রকাশিত হয়নি।
১৯২৬ খ্রি. ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরে জন্ম। স্কুল-পর্ব শেষ হবার পরই ১৯৪২ খ্রি. “ভারত ছাড়” আন্দোলনে যোগদান ও দু'বার গ্রেপ্তার। ১৯৪৪ খ্রি. টাটানগরে রেলওয়েতে কর্মের সঙ্গে সঙ্গে জনসেবার জীবনের সূত্রপাত। ১৯৪৬ খ্রি. বিহারের বিখ্যাত কংগ্রেস ও শ্রমিক সঙ্ঘের নেতা অধ্যাপক আবদুল বারীর প্রেরণায় চাকরি ছেড়ে পূর্ণ সময়ের কংগ্রেস কর্মী হিসাবে পল্লী সংগঠনে আত্মনিয়োগ। ১৯৫১ খ্রি. রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করে সেবাগ্রামের মহাত্মা গান্ধী প্রতিষ্ঠিত চরখা সঙ্ঘে যোগদান। ১৯৬১ খ্রি. ভারত সরকারের খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশন কর্তৃক আমন্ত্রিত হয়ে ১৯৮৪ খ্রি. অবসর গ্রহণ করা পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যে গ্রামীণ জনতার কর্ম সংস্থানের উদ্যোগে নেতৃত্বদান। এর পর ২০০১ খ্রি. পর্যন্ত গান্ধীপন্থায় গঠনকর্মের সর্বভারতীয় প্রতিষ্ঠান দিল্লীস্থ “গান্ধী স্মারকনিধি”-র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন। ২০০৬-১১ খাদি গ্রামোদ্যোগ কমিশনের পূর্বাঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য। বাংলা-হিন্দি-ইংরেজিতে মৌলিক রচনা, অনুবাদ ও সংকলন নিয়ে প্রায় চল্লিশটি গ্রন্থ প্রকাশিত । আনন্দ পুরস্কার, বাংলা আকাদেমি, বিশ্বভারতী, গজেন্দ্রকুমার মিত্র ট্রাস্ট, পুণের “গান্ধী রাষ্ট্রীয় স্মরক সমিতি” ও ঢাকার “স্বদেশ চিন্তা সঙ্ঘ” প্রমুখের পুরস্কার ছাড়াও জনসেবার জন্য ভারত সরকার কর্তৃক “পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত।