বর্ণনা: কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবন ও সাহিত্য-কর্ম নিয়ে আব্দুর রউফ চৌধুরীর লেখা ‘নজরুল : সৃজনের অন্দরমহল’ গ্রন্থটি প্রকাশের আগেই আমার পড়ার সুযোগ হয়েছে। নজরুলকে নিয়ে যে কোনো কাজের ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত আগ্রহ অপরিসীম। তার কারণ নজরুল কেবল আমাদের জাতীয় কবিই নন, তার জীবন-যাপন, বেড়েওঠা ও কর্মের মধ্যে রয়েছে সমকালীন সংকট উত্তরণের নানা উপায়।
ঔপনিবেশিক ভারতের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা নজরুল-সাহিত্যের মূল প্রবনতা হলেও উত্তর-উপনিবেশিক কালেও তার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি। নজরুলের সাহিত্য রচনাকালে বিদেশী প্রভুরা এ দেশের ওপর খবরদারি করতো আর এ দেশের সম্পদ তাদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দিত। বর্তমানে শাসকের জাত পরিবর্তন হলেও চরিত্র তেমন বদলায়নি। স্বাধীন দেশের শাসকরাও তাদের নিজ নাগরিককে নানা বলে-কৌশলে দাবিয়ে রাখতে চেষ্টা করে; পাশাপাশি নিজ দেশের ধন-সম্পদ অধিকতর উন্নত দেশে পাঠিয়ে নিজেদের নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলতে চায়; অনেক ক্ষেত্রে তারা নিজের দেশকেই উপনিবেশ বানিয়ে ফেলে। বলা চলে, নজরুলের সমকালের চেয়ে বর্তমান কালে অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। এই পরিস্থিতিকে বলা যায়, ‘কালো চামড়া শাদা মুখোশ’। ফ্রান্স ফাঁনো নামের একজন উত্তর-উপনিবেশিক তাত্ত্বিক এই শিরোনামে একটি গ্রন্থলিখেছেন, ‘ব্ল্যাক স্কিন হোয়াইট মাস্ক।’ শাদা প্রভুরা চলে গেলেও স্থানীয় শাসকরা তাদের রূপ ধরে শাসন করছে। যেটি ইংরেজ ঔপনিবেশিক কালে ব্রিটিশ রাজনীতিক ও দার্শনিক মেকলের আকাঙ্ক্ষার অনেকটা প্রতিফলন। নজরুল-সাহিত্যের সর্বাধিক আলোকিত স্থান তাঁর অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ। তিনি এমন একটা দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যেখানে ইতিহাসের কাল থেকে বহু ধর্মও শ্রেণির মানুষ বসবাস করে আসছিল। বিশেষ করে হিন্দুও মুসলিম দুটি বহৃ ত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয় তীব্রপার্থক্য থাকা সত্ত্বে তারা একত্রে বসবাস করে আসছিল; কিন্তু ইংরেজ তার শাসনের সুবিধার্থে বিভেদ নীতির মাধ্যমে শাসনের সুবিধা জারি রাখার চেষ্টা করে; এর ফলে উপনিবেশিক কালে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে ধর্মের নামে পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস, ঘৃণা ও রক্তক্ষয়ী বিরোধিতার জন্ম হয়। নজরুল এই সাম্প্রদায়িকতার বিরোধ নির্মূলের জন্য তার সাহিত্যে যুক্তিবাদি মানবধর্মের বিকাশ ঘটান। উগ্রধর্মবিশ্বাসীদের অযৌক্তিক বিষয়াদিকে তিনি নিপণু দক্ষতায় প্রকাশের মাধ্যমে তাদের অসারতা প্রমাণের পাশাপাশি উভয় ধর্মের মুক্তি ও ভক্তির উপায় তার কবিতা-গানে পরম দরদের সঙ্গে প্রকাশ করেন। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে এখনো সাম্প্রদায়িকতার বিষ-বাষ্প নিঃশেষিত হয়ে যায়নি। কেবল ব্যক্তির সঙ্কীর্ণ স্বার্থবাদিতার জন্য নয়, রাষ্ট্রও রাজনীতির দুষ্টচক্রও এ পরিস্থিতি থেকে মক্তু নয়। তা-ই নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা এখন আরো তীব্রভাবে দেখা দিয়েছে।
পৃথিবীতে সম্পদের অভাব না থাকলেও কালে কালে দেশে দেশে রয়েছে এর বন্টন ব্যবস্থার কৃপণতা। অন্যের শ্রমের ওপরে নিজের সাচ্ছন্দ্য তৈরি করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি; তাই সারা বিশ্বে স্বল্পসংখ্যক মানুষের কাছে রয়েছে অধিকাংশ সম্পদ। নজরুল এই অবস্থার অবসান চেয়েছিলেন; তার কাব্যগ্রন্থের নাম দিয়েছেন, ‘সাম্যবাদী’, ‘সর্বহারা’। কাব্যসাহিত্যে এ ধরনের নাম নজরুলের আগে খুব একটা দেখা যায়নি। নজরুল-সাহিত্যের এইসব প্রণতা সামনে রেখে আব্দুর রউফ চৌধুরী ‘নজরুল : সজৃনের অন্দর মহল’ গ্রন্থটি রচনা করেছেন।
স্বীকার করতেই হয়, এর আগে আমি আব্দুর রউফ চৌধুরীর কোনো রচনা এত মনোযোগ দিয়ে পাঠ করিনি। তাই নজরুলকে নিয়ে তার বক্ষ্যমাণ পাণ্ডুলিপিটি আমার হাতে আসায় পাঠে কিছুটা বিলম্বঘটে। কিন্তু আমার প্রাক-ধারণা সঠিক ছিল না। গ্রন্থটি একজন প্রকৃত নজরুল-গবেষকের দৃষ্টিতে ও পরিশ্রমে রচিত হয়েছে। কেবল গবেষক বললে ঠিক হবে না, কারণ নজরুল আবিষ্কারের ক্ষেত্রে এ গ্রন্থে তার রয়েছে সৃজনশীল ও মননশীল দৃষ্টিভঙ্গি। এমন অনেক বিষয়ের প্রতি তিনি আলোকপাত করেছেন, যার গুরুত্ব আগে আমাদের কাছে তেমন করে প্রতিভাত হয়নি। আমার কাছে মনে হয়েছে, নজরুল-সাহিত্য ও চিন্তা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তিনি একজন বিদগ্ধ গবেষকের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করেছেন। যার নিজস্ব চিন্তাপ্রক্রিয়ার সঙ্গে নজরুল-চেতনার সহজাত মিল রয়েছে। তবে প্রণতার ঐক্যের ফলে তিনি মত প্রকাশের ক্ষেত্রে তেমন উচ্চকিত নন। সাহিত্যিক ও যৌক্তিক পারম্পার্যের মধ্যে তিনি তার নজরুল-সাহিত্যের ব্যাখ্যামূলক রচনা এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এখানে একটি উদাহরণ দেয়া যাক। রবীন্দ্র-বলয় থেকে বাংলা কবিতার মুক্তির প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, ‘তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী কবিতার জন্যই ‘তিরিশোত্তর আধুনিক কবিতার সৃষ্টি সহজতর হয়।’ সচরাচর এসব ক্ষেত্রে দাবি হয়ে থাকে একরৈখিক, কিন্তু লেখকের সতর্কতা নজরুল সাহিত্যের নিরপেক্ষ পাঠভাষ্য রচনার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। তাই বলে নজরুল-গবেষকের আবেগটি তিনি পরিহার করেননি; যেমন, ‘শৈশবে রুটির দোকানে চাকরি জীবনে ময়দা মাখতে মাখতে হয়তো তার মনে উদয় হয়, দুনিয়াটাকে দলে-মলে মনের মতো করে গড়বেন।’ নজরুল-আলোচনার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থকার উপমা-প্রতীকের গুরুত্ব কখনো কম করে দেখেননি।
এ গ্রন্থের লেখক সাতটি অধ্যায়ে গ্রন্থের পাঠ বিন্যাস করেছেন। নজরুল ইসলামের সৃষ্টশীলতার নানা মাত্রা তিনি ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের দ্বারা তার যথার্থতা প্রতিপন্ন করেছেন। প্রবেশিকা ও নজরুল জীবনীর আলোচনা ছাড়াও তিনি নজরুলের কথা-সাহিত্য, প্রবন্ধ, কাব্য, শিশু-কিশোর রচনা ও সঙ্গীত নিয়ে পৃথক অধ্যায় রচনা করেছেন। এখানেও তার কিছটুা ব্যতিক্রম দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে নজরুল-গবেষকগণ তাঁর কবিতা ও সঙ্গীতের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে থাকেন। এমনকি অনেকেই এ মন্তব্য করতে পিছপা হন না যে, নজরুলের প্রবন্ধ ও কথা-সাহিত্য তেমন উল্লেখ্য নয়। নজরুলপ্রতিভা তার গান কবিতার মধ্যেই সর্বোচ্চ উৎকর্ষলাভ করেছে। কিন্তু আলোচ্য গ্রন্থকার দেখাতে চেষ্টা করেছেন, নজরুল কিভাবে তার সমকালীন কথাশিল্পীদের চেয়ে আলাদা এবং কবিতার মতোই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য-মণ্ডিত। আমার মনে হয়, তিনি প্রমাণ করতেও সক্ষম হয়েছেন যে, নজরুল কিভাবে কথা-সাহিত্যে আলাদা। কারণ গদ্য-সাহিত্যের মধ্যে নজরুল সমকালীন সমাজ রাজনীতি ও সংস্কৃতির এমন সব বিষয় তুলে ধরেছেন, যা ছিল তার আগে তুলনারহিত। এমনকি এসব রচনায় ফর্মের দাসত্বও তিনি স্বীকার করেননি। তাছাড়া নজরুলের কথা-সাহিত্যের প্রতিভা যে তাঁর কবিতা ও সঙ্গীতের মতোই স্বতঃস্ফূর্ত তার প্রমাণ - কবিতা নয় গল্প দিয়েই তাঁর সাহিত্যিক যাত্রা শুরু হয়েছিল; এবং নিবন্ধ ও কথা-সাহিত্য গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয়। নজরুলের গল্প-উপন্যাসে বিপ্লব ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের যে-সব উপাদান সন্নিবেশিত হয় তা তৎকালীন সাহিত্যে বিরল ছিল। আর এ সবই ঘটা সম্ভব হয়েছিল নজরুলের বাস্তব অভিজ্ঞতা, বিপব্লী ও রোমান্টিক চেতনার ফলে। তাছাড়া কৃষিভিত্তিক বাঙালি মসুলমানের পারিবারিক ও সমাজ-জীবন তার গল্প-উপন্যাসে প্রকটিত হয়েছে। গ্রন্থকারে বিবেচনায় নজরুলকে কথাসাহিত্যের জগতে মৌলিক প্রতিভা বলতে বাধা নেই।
প্রবন্ধ সাহিত্যেও নজরুলের মৌলিকত্ব রয়েছে। কবিতা ও সঙ্গীতের মতোই তার প্রবন্ধ নতুন ও উদ্দীপক। পাঠক কিংবা শ্রোতা তার বক্তব্যে এবং যৌক্তিক পারম্পার্যে অভিভূত না হয়ে পারে না। তবে স্বীকার করতে বুঝি দ্বিধা থাকা উচিত নয় যে, নজরুলের প্রবন্ধ সাহিত্য সংখ্যাধিক্যের মাপে বিচার করা যাবে না। তাছাড়া তার প্রবন্ধ রচিত হয়েছে তাৎক্ষণিকতার প্রয়োজনে, জবাবি আক্রমণ প্রতিহত করার কারণে; জীবন ও জগতের বোধ ও ব্যাখ্যা- যা তার কবিতার সম্পূরক হিসাবে রচিত হয়েছে। প্রবন্ধ রচনার চেতনা থেকে নজরুল এই মাধ্যমটি খুব একটা ব্যবহার করেছেন বলে মনে হয় না। তবে সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় উপসম্পাদকীয় রচনার প্রয়োজনে তৎকালীন সমাজ ও রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে তিনি যে নিবন্ধ রচনা করেন, তার বক্তব্যের তীক্ষ্ণতা, যুক্তিবাদিতা তৎকালীন ব্রিটিশ সকরারের কর্তা-ব্যক্তিদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। একের পর এক তার সম্পাদিত পত্রিকা ও গ্রন্থবাজেয়াপ্ত করে তারা তাদের শাসনের অসারতা প্রমাণ করছিল। নজরুল সৃষ্টিশীল সকল ক্ষেত্রেই নিজস্ব স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। এমনকি তার প্রবন্ধ-সাহিত্যেও সেই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ‘বর্তমান বিশ্বসাহিত্য’-এর মতো প্রবন্ধ এই প্রমাণ করে যে নজরুলের পাঠ অভিজ্ঞতা ও দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ব্যতিক্রম। নরুলের রোমান্টিক ও বিপ্লবি মানসিকতা সেই সঙ্গে তার সৈনিক জীবন, ভারতবর্ষীয় হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতির উত্তরাধিকীত্ব এবং রুশবিপব্লী চেতনা আত্মীকরণের ফলে তার রচনা এক অনন্য বৈশিষ্ট্যে উন্নিত হয়েছিল। আব্দুর রউফ চৌধুরী তার রচনায় এ-সব বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
আব্দুর রউফ চৌধুরী নজরুলের কাব্যসহিত্য নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তার যুক্তির সপক্ষে বিদগ্ধ নজরুল-গবেষক ও সাহিত্য সমালোচকদের মতামত হাজির করেছেন। নজরুলের শিশু সাহিত্য ও সঙ্গীত নিয়েও তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যদিও নজরুল সাহিত্য ও জীবন নিয়ে বর্তমানে আমাদের পক্ষে নতুন তথ্য হাজির করা সহজ নয়; তবু নিত্য-নতুন ব্যাখ্যা ও উপস্থাপনার দক্ষতা দিয়ে নতুন দিনের পাঠকের উপযোগী করে প্রকাশ করার সুযোগ রয়েছে। তিনি সেই কাজটিই দক্ষতার সঙ্গে করেছেন। এ কথা আজ প্রতিষ্ঠিত বাংলা কবিতা ও গানে নজরুল আশ্চর্য-বিষ্ময়। ভাবি কালের বাংলা ভাষা সাহিত্যে নজরুলের সৃষ্টি কর্মসমান গুরুত্বপাবে বলে মনে হয়। তবে এই গ্রন্থটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য এটি নজরুলকে নিয়ে রচিত যথাসম্ভব একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ। নজরুলের জীবন ও সাহিত্য খুঁটিনাটি বিষয়ও লেখক এ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন। তাছাড়া দেখার অনপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গ্রন্থকার নজরুল চেতনার সমান্তরালে যেতে পেরেছেন। নজরুল নিয়ে গ্রন্থ রচনা বাংলাভাষায় একেবারে কম হয়নি; কিন্তু অধিকাংশ গ্রন্থ নজরুলের সাহিত্য, শিল্প ও দাশর্নিক চেতনার অনাগুমী নয়। এসব গ্রন্থে নজরুলের সৃষ্টিশীল জগতের কেবল খণ্ডিতাংশ প্রকাশিত হয়েছে। আর সেই সব লেখকগণ তাদের নিজেদের মানসিক অবস্থানকে নজরুলীয় দৃষ্টিভঙ্গি হিসাবে দেখাতে চেষ্টা করেছেন। জনাব চৌধুরীর গ্রন্থটি এ ধরনের সঙ্কীর্ণতা থেকে মুক্ত। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজনে এই গ্রন্থটি ছাত্রছাত্রীদের নজরুল সাহিত্য বোঝার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমার মনে হয়।
সবচেয়ে আশ্চর্য, গ্রন্থটি রচিত হওয়ার প্রায় বিশ বছর পরে প্রথম প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। তবু এই গন্থের ভাষাশৈলী, গ্রন্থকারের বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও বিষয়ের প্রাসঙ্গিকতায় কোনো মলিনতা স্পর্শ করেনি। লেখকের জীবদ্দশায় গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে বাড়তি আনন্দের কারণ হতো। তবে যাই হোক, নজরুল গবেষণার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থটি যে আরো একটি নতুন ধাপ তাতে সন্দেহ নেই।
জন্ম : ১লা মার্চ ১৯২৯। মুকিমপুর গ্রাম, হবিগঞ্জ। মৃত্যু : ২৩ ফেব্র“য়ারি ১৯৯৬। স্কাউট ভবন, হবিগঞ্জ সদর। হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে বি.এ শেষ বর্ষ সমাপ্তির পূর্বেই আউশকান্দি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগদান। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে সপরিবারে পাকিস্তানে বসবাস শুরু। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে বিমান বাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সপরিবারে দেশে প্রত্যাবর্তন। ১০ জানুয়ারি ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে পৌঁছানো ও পরে ব্রিটিশ সরকারের এরোপ্লেন গবেষণা কেন্দ্রে স্পেশাল গ্রেডের চাকরিতে যোগদান। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্রমাগত পেশা বদল। ম্যানেজার, ইলেকট্রিক, মিস্টি, ফিটার। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ থেকেই তিনি তাঁর বিচিত্র জীবনের অভিজ্ঞতা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখতে শুরু করেন। আবদুর রউফ চৌধুরীর প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত অসংখ্য উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, সাহিত্য ও রচনাসম্ভার বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।