ভূমিকা পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস হলো পাশ্চাত্যের সমাজ সম্পর্কে দার্শনিক চিন্তন, সমাজ পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন মতবাদের মূল্যায়ন, সমাজের প্রকৃতি, কার্যাবলি, মূল্য, সামাজিক অভিজ্ঞতার সত্যতা, জীবন ও জগতের সার্থকতা হিসেবে সামাজিক অভিজ্ঞতার যথার্থতা সম্পর্কে দার্শনিক অনুসন্ধান লাভের প্রচেষ্টা। জগতের বিভিন্ন সামাজিক বিবর্তনে, সামাজিক ব্যবস্থা পরিবর্তনে দার্শনিকদের ভূমিকা নেহায়েত কম নয় । এ প্রসঙ্গে প্লেটো, এরিস্টটল, ম্যাকিয়াভেলী, জন লক, ভল্টেয়ার, রুশো, মিল, স্পেন্সার, কার্ল মার্কস, বার্ট্রান্ড রাসেল প্রমুখ মনীষীর নাম করা যায়। কোনো জাতির প্রজ্ঞার প্রতিফলনে সে জাতির জাতীয় দর্শন ক্রিয়াশীল। বাঙালিদের জাতীয় জীবনে বিভিন্ন সংগ্রাম ও সাধনার মধ্যে জাতীয় দর্শনের প্রতিফলন ঘটেছে এবং আগামীতেও সুষ্ঠু দার্শনিক জীবনবোধের প্রতিফলন আবশ্যক। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বৎসর মেয়াদি অনার্স কোর্সের বিভিন্ন বর্ষের পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস। বিষয়টি অধিক গুরুত্ব সহকারে বাংলা, ইংরেজী, দর্শন, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে অনার্স ১ম ও এম. এ. ১ম পর্ব ও ৩য় বর্ষে অনুষঙ্গী কোর্স হিসেবে চালু হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে একখানা সৃজনশীল পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যপুস্তক না থাকায় আমি বর্তমান পুস্তক রচনা করার চেষ্টা করেছি। বইটি দেশের মানুষের উপকারে আসলে পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো। অনার্স পরীক্ষায়ও অনেকটা সৃজনশীল পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে যা এসএসসি বা এইচএসসি এর উন্নত রূপ। যেকোনো ক্ষেত্রে নতুন একটা পদ্ধতি নেওয়ার সময় খানিকটা বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়। বাংলাদেশে সেটা অনেক প্রকট হওয়ার আশঙ্কা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা পুরাতন আমলের রচনামূলকের বিভিন্ন অংশের সর্টকাটরূপ দিয়ে যেনতেনভাবে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও অনেক কলেজের শিক্ষকেরা এখনো পুরোপুরি ব্যাপারটা ধরতে পারেননি। তাঁরা অনেকসময় ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু জাতীয় পরীক্ষাগুলোয় তার কোন আশঙ্কা নেই। এ পদ্ধতির কারণে ধীরে ধীরে প্রাইভেট কোচিং উঠে যাবে এবং নোট বা গাইড বইয়ের মৃত্যু ঘটবে। সবচেয়ে বড় লাভ হবে দেশের। কারণ, ছেলেমেয়েরা একটা শাণিত মস্তিস্ক নিয়ে বড় হবে। সৃজনশীল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করে যারা বড় হচ্ছে, আমরা আগ্রহের সঙ্গে তাদের জন্য অপেক্ষা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পর্যায়ে তারা যখন পৌঁছাবে, তখন তারা সবাই হবে ক্ষুরধার মস্তিষ্কের বুদ্ধিদীপ্ত সৃজনশীল একটি প্রজন্ম। বর্তমানে অনার্সে Credit