বইটির নামই বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত বহন করে। তবে এটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী একটি ডিটেকটিভ বই, যেখানে গোয়েন্দা কাহিনী বর্ণনার গতানুগতিক ধারা থেকে উঠে এসে সম্পূর্ণ নুতন ধারায় লেখক আমাদের সমাজে যুগ যুগ ধরে প্রচলিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা, কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির শৃঙ্খল থেকে যুবসম্প্রদায়কে মুক্ত করে তাদের মনোজগৎ তথা মনন ও চিন্তনে আধুনিক বৈজ্ঞানিক চিন্তার উন্মেষ ঘটানোর বলিষ্ঠ প্রয়াস পেয়েছেন। প্রকৃতিতে প্রতিটি রহস্যের মূলেই কিছু কারণ ও উদ্দেশ্য রয়েছে যার বেশির ভাগই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যেয়। আবার মানুষ তার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে যেসব ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ব্যর্থ, সেসব ঘটনাকেই অলৌকিক ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করে। যুগে যুগে অন্ধকারে নিমজ্জিত মানবজাতিকে পথ দেখাতে বিভিন্ন ধর্মাবতার এসেছেন, ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের পোশাক পরে মূলত একই বাণী নিয়ে, কিন্তু কালের বিবর্তনে সে বাণীসমূহ বিকৃত হয়ে বিভিন্ন জাতির মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে। সময় এবং প্রকৃতিই মানুষের সবচেয়ে বড় শিক্ষক আর মানবতাই পৃথিবীর মানুষের একমাত্র ধর্ম-এ বিষয়টিকে সামনে রেখে লেখক মো. নজরুল ইসলাম এই বইটিতে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের একটি পশ্চাদপদ জনপদের জীবনযাত্রার চালচিত্র, ধর্মীয় অনুভূতি ও বিশ্বাস এবং অস্থিমজ্জায় প্রোথিত সংস্কারের শেকড়মূলে কুঠারাঘাত করে, শিক্ষাবঞ্চিত জনপদকে একটি আলোকিত জীবনের সন্ধান দিতে চেয়েছেন। বইটির চরিত্র ও ঘটনাসমূহ কাল্পনিক, যদি কারও জীবনের সাথে হুবহু মিলে যায় তাহলে তা হবে একান্তই কাকতালীয় ।