“কুরআন ও হাদীসের আলোকে তাওবার ফযীলত ও আত্মশুদ্ধি” -বইয়ের সূচীপত্র * তওবার গুরুত্ব * তাওবার ফয়ীলত * তওবার প্রকৃত পরিচয় * প্ৰত্যেক সময়ে প্রত্যেক ব্যক্তির প্রতি তওবা ওয়াজিব * ক্রমবর্ধমান কল্যাণের পথে ওয়াজিব তওবার ধারাবাহিক বিবরণ * যথা সময়ে তওবা না করলে মৃত্যুকালে অনুশোচনা বিফল * তাওবা কবুল হওয়ার বিবরণ * তাওবা কবুল হওয়া সম্বন্ধে হাদীস বাণী * তাওবা কবুল হওয়া সম্বন্ধে বুযুৰ্গানের উক্তি * তাওবা কবুল হওয়ার দৃষ্টান্তে কাহিনী * ছগীরা গুনাহ অর্থাৎ লঘু পাপের বিবরণ * কবীরা গুনাহ অর্থাৎ মহা পাপগুলোর বিবরণ * পরপীড়ন জনিত পাপ * ছগীরা গুনাহ কবীরা গুনাহে পরিণত হওয়ার কারণ * খাঁটি তওবার শর্ত ও লক্ষণ * খাঁটি তওবার প্রথম লক্ষণ-লজা * খাঁটি তওবার অপর লক্ষণ সৎকাজের ইচ্ছা উৎপন্ন হওয়া * আল্লাহর হকসমূহ প্রতিপালনে অতীত ক্ৰটি সংশোধন * মানুষের হক প্রতিপালনে অতীত ক্রটির সংশোধন * সৰ্বক্ষণ তওবা করার ফল * এস্তেগফার অর্থাৎ ক্ষমা প্রার্থনার বিবরণ * মৌখিক ক্ষমা প্রার্থনার বিরুদ্ধে শয়তানের ধোকা * তাওবা ব্যাতিরেকে অবিরত পাপে লিপ্ত থাকার কারণ * সমুদয় পাপ হতে একযোগে তওবা না করে ক্রমান্বয়ে করা * দুনিয়ার অপকারিতা থেকে হাঁশিয়ার! * দুনিয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আরও কথা * দুনিয়ার ধোকা ও প্রতারণার বয়ান * দুনিয়ার তুচ্ছতা ও অপকারিতা এবং দুনিয়া থেকে সতকীকরণ * তাওরাতের বাণী * আল্লাহর বন্টনে তুষ্টি ও সম্মতি প্রসংগে * লোভ-লালসা ও অতি আশার কুফল * কামনা বাসনা ও উহার কুফল
বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ., সংক্ষেপে ইমাম গাজ্জালী ছিলেন একজন সুফিসাধক ও মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ, যিনি তাঁর দর্শন ও চিন্তাধারা বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর পারিবারিক ব্যবসা সুতা সংক্রান্ত হওয়ায়, সেখান থেকে তার নাম গাজ্জালী হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যেহেতু 'গাজ্জাল' শব্দের অর্থ সুতা। ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দে (হিজরি ৪৫০ সাল) ইমাম গাজ্জালী ইরানের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং এই তুস নগরীতেই তার শৈশবকাল ও শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি ইসলামের স্বর্ণযুগে জন্ম নেন, যে যুগে শিক্ষা, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে মুসলমানরা অনেক এগিয়ে গিয়েছিলো। একইসাথে বিস্তার লাভ করেছিলো পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনেরও। ইমাম গাজ্জালী এসকল বিষয়েই দীক্ষা লাভ করেন এবং বিশেষ করে ঐ যুগের বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ আলেম ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনির কাছ থেকে ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। মুসলিম দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, ফিকহশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী । জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থস্থান বাগদাদের সেরা বিদ্যাপীঠ নিযামিয়া মাদ্রাসায় তিনি অধ্যাপনা করেন। তিনি তৎকালীন বাদশাহর দরবারেও আসন লাভ করেন। তবে সুফিবাদ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়ে তীব্র আকর্ষণ থাকায় তিনি জ্ঞান আহরণের জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন ও নানা বিষয় সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান অর্জন করেন। ইমাম গাজ্জালী রহ. বই রচনার মাধ্যমে তাঁর অর্জিত এসকল জ্ঞান মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমূহ-তে তিনি আলোচনা করেছেন সুফিবাদ, ইসলামি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে, এবং তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চার শতাধিক। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'আসমাউল হুসনা', 'মিশকাতুল আনোয়ার', 'ফাতাওয়া', 'মিআর আল ইলম', 'হাকিকাতুর রুহু', 'দাকায়েকুল আখবার' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১১১১ খ্রিস্টাব্দে (৫০৫ হিজরি) তিনি নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে মৃত্যবরণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় একজন মনীষী।