বইটি সম্পর্কে লেখকের কিছু কথাঃ ইতিহাস প্রীতি আমার ছােটবেলা থেকেই ছিল। কিশাের বয়স থেকেই আমি ক্ষুদে বিল্পবী। অন্যায় অনর্থ বরাবরই আমি অপছন্দ করতাম, কারণ বৃহত্তর বাংলার বিপ্লবীদের জীবনী পড়া ৮ম শ্রেণীতে উঠার আগেই শেষ করি। সামাজিক অনাচার, লিঙ্গ বৈষম্য, ধর্মীয় গোঁড়ামি ইত্যাদি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছি বরাবর। এরপর পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক, বৈষম্য, অবিচার, কিছু নামী মানুষের রাজনৈতিক বেশ্যাবৃত্তি। মুক্তিযুদ্ধে গমন, মুক্তিযযাদ্ধাদের একশ্রেণীর ক্ষমতাবানদের করুণা ও ঘৃণা যা এখনও অব্যাহত আছে যা আমাকে আহত করে। ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চ বঙ্গভবনে দাওয়াতে যােগদানকারী যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযােদ্ধা পরিবারের সদস্যদের খাবার কুড়ানাের দৃশ্য, পুলিশ ও প্রশাসনে মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতি নাকসিটকানাে ভাব এখন আরও বৃদ্ধি পাওয়া সবই বঙ্গবন্ধুর হত্যার কুফল বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। চাকরিরত থাকার সময় হতে সমাজে সরকারের রাষ্ট্রের যে অনাচার দুর্নীতি ও অন্যায় দেখেছি তার বিরুদ্ধে লেখনীর মাধ্যমে প্রতিবাদ জানতাম। দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হতাে সেই ১৯৮৬ সাল হতে, অবশ্য বেনামে। আমার অপছন্দের ২ ব্যক্তিত্ব হাজী শফিউর রহমান ও আনিসুর রহমান নামে লিখতাম। অবহেলার কারণে সে লেখাগুলাে হারিয়ে গেছে। ২০০৩ সালে আকস্মিকভাবে বে-আইনি ও এক্তিয়ার বহির্ভূত চাকরিচ্যুতি, রাষ্ট্রক্ষমতার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আমার বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাবােধ শূন্যের কোটায় নামিয়ে দেয়। আমি বিশ্বাস করি অতি বড় অন্যায় ও পাপের ফলাফল মানুষ নিজ জীবনকালেই পায়। তখন সবকিছু অসহনীয় মনে হলেও তখনও নিজ কৃত পাপের ফল বলে তা মানতে পারে না। এক্ষেত্রেই মানুষ পশুর চেয়েও অধম। অথচ অধম প্রাণী ও মানুষের তফাৎ এক জায়গায় মানুষের মস্তিষ্কে বিবেক বলে একটা ‘সেল’ দেয়া আছে। বিবেককে কাজে লাগানাের জন্য পশুদের সেটা নেই। এদেশের রাজাবাদশাদের ক্ষমতার জন্য প্রসাদ ষড়যন্ত্র, হানাহানি, গুম, খুন ইত্যাদির সাথে আমরা পরিচিত। এত কিছুর পরও অনেকে ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছিলেন স্বল্পমেয়াদের জন্য। যিনি অনেক কৌশল ষড়যন্ত্র করে মসনদে বসেন তখন তিনি ভাবেন অমর হয়ে রইবেন এবং মসনদও যুগযুগ ধরে থাকবে। অন্নসংস্থানের জন্য পেশায় পুলিশ হলেও উল্লিখিত বিষয় বরাবরই আমাকে আকৃষ্ট এবং পীড়া দিত। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে তার নিকট জনেরা ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দেয় এবং নির্মমভাবে হত্যা করে। সুবে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার রাজনৈতিক চাকা উল্টো পথে চলতে শুরু করে। কয়েক বার হাত বদলের পর অন্তরালের সেই ইংরেজরা প্রকাশ্যে মসনদ দখল করে। এর পরে ইতিহাস সবাব জানা। পাকিস্তান সৃষ্টি, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা লাভ। মাঝে অনেক ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তানের জেলখানা থেকে স্বদেশে আগমন ও দেশের হাল ধরা। দেশকে যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা থেকে সচল করার প্রক্রিয়া নিয়ে অগ্রসর হবার মুহূর্তে যে সব রাষ্ট্র এবং দেশের অভ্যন্তরীন শক্তি স্বাধীনতার বিরােধিতা করেছিল তারা প্রথমে দেশকে আশান্ত করে জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে এবং এই ডামাডােলে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়। এর পর ৪ জাতীয় নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হয়। ফলে রাষ্ট্রের ভাগ্যের চাকা আবারও একবাক উল্টো ঘুরে গেল। গােপালগঞ্জে দীর্ঘ ৪ বছর চাকরি করা কালে বঙ্গবন্ধুর চাচা ও মামা খান সাহেব শেখ মােশারফ হােসেন মাঝে মাঝে আমার বাসায় আসতেন। আলাপচারিতায় তিনি বঙ্গবন্ধুর আকাশছোঁয়া গুণাবলির কথা বলেছেন। সেই সাথে তার হত্যাকাণ্ডের আঁচ তিনি পেয়ে বঙ্গবন্ধুকে সাবধান করতে গিয়েও একাকী না পাওয়াতে বলতে পারেননি। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদ তাকে (খান সাহেবকে) অনুরােধ করেছিলেন বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর কানে দিতে। এই আলাপচারিতায় বঙ্গবন্ধুর হত্যার জন্য তার পরিবারের একজন সদস্যের অজ্ঞাত ভুলের কথা উল্লেখ করেছেন, যা এই মুহূর্তে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকলাম জাতির পিতার হত্যার সরাসরি সবিধাভােগী মেজর জেনারেল জিয়া, তিনি ক্ষমতাকে পাকাপােক্ত করার জন্য সামরিক অভ্যুত্থানের অভিযােগে বহু মুক্তিযােদ্ধা অফিসার, সৈনিক ও বৈমানিককে হত্যা, জেল, নিদেন পক্ষে চাকরিচ্যুত করেন। মেজর জেনারেল মঞ্জুরের মতাে প্রতিভাবান মুক্তিযােদ্ধাকে সেনা প্রধান না করে বহু কারিশমায় পারদর্শী আপাত নিরীহ এরশাদকে সেনা প্রধান করেন। সেই জিয়াকেও নিজ সেনা অফিসারদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে। এই হত্যাটির পিছনে মূল মস্তিষ্কটি কার সেটা জানার একটা তথ্যভিত্তিক প্রচেষ্টা এই বইটি। জিয়াকে হত্যা করা হয়েছে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের কিছু সামরিক অফিসারকে সেই অভিযােগে তড়িঘড়ি করে ফাঁসি দেয়া হয় এবং জিওসি মঞ্জুরকে গ্রেপ্তারের পর সেনানিবাসে নিয়ে কপালে ১টি গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এই হত্যাটির পিছনে মূল ব্যক্তিটি কে তা নিয়ে যে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছিল তা ভেদ করার একটা ক্ষুদ্র উদ্যোগও এই বইটিতে আছে। উল্লিখিত প্রথম ঘটনাটি যখন ঘটে তখন আমি ডিএসপি (প্রবেশনার) ময়মনসিংহ জেলার, নিয়ােজিত করা হয়েছিল ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর (১৫ আগস্ট ১৯৭৫), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় নির্মিত এনেক্স বিল্ডিং এ সকালের বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্বে। ফলে সেদিনকার অনেক বেদনাদায়ক ঘটনা প্রত্যক্ষ করার দুর্ভাগ্য হয়েছে আমার। পরবর্তীতে ১৯৭৯-৮৩ পর্যন্ত গােপালগঞ্জের শেষ মহকুমা পুলিশ অফিসারের দায়িত্ব পালনের কারণে আমার মনে সেদিনকার ঘটনাবলি যা প্রত্যক্ষ করি তা প্রকাশের একটা তাগাদা অনুভব করি। টুঙ্গিপাড়া থানা প্রথম পরিদর্শনের দিনই মহা-মানবের কবরে দাফনের দিন থেকে নিয়ােজিত সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরা প্রত্যাহার করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিই। এরপর বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া এসে ৪ দিন থাকেন। তাকেও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়ার কারণে তার কাছে যাবার, কথা বলা ও শােনার সুযােগ আমার হয়েছিল। অবশিষ্ট ২টি হত্যাকাণ্ডের সংবাদটি ফরিদপুর সার্কিট হাউসে অবস্থান কালে ভােরেই জানতে পারি। এ ঘটনায় ফাঁসি প্রাপ্ত কয়েকজন অফিসার আমার পূর্ব পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ ছিলেন এর মধ্যে কর্নেল আব্দুর রশিদ উল্লেখযােগ্য। সে সময়কার সাত্তার সরকার ও সেনা সদরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এক অংশের কার্যকলাপ আমার নিকট পরিকল্পিত ও ছকে আঁকা মনে হয়েছিল। জিওসি মঞ্জুরকে, বান্দরবান এবং কুমিল্লায় চাকরি করার সুবাদে বহুবার নিকট থেকে দেখার সুযােগ হয়েছে। প্রথম দেখা হয়ে কশবার তার দুই মামার পুকুর পাড়ের বিরােধ মিটানােকে কেন্দ্র করে। এরপর বান্দরবানের গজালিয়া থানার ওসি হারুনসহ ১১ জন পুলিশ হত্যা (শান্তিবাহিনীর হাতে) মামলার বিষয়ে দীর্ঘ একান্ত আলােচনায়। অবশেষে ট্রাইবাল কনভেনশন’ এর অন্তত ১১টি সভায় তার সাথে জুনিয়র অফিসার হিসেবে যােগদানের কারণে খুবই নিকট হতে তাকে দেখার সুযােগ পেয়েছি। তাকে একরােখা কিন্তু খুবই মেধাবী মনে হয়েছিল আমার নিকট। তার গ্রেপ্তার ও সেনা বাহিনীর নিকট হস্তান্তরের সাথে জড়িত পুলিশ অফিসারগণ আমার ঘনিষ্ঠ বা পরিচিত ছিলেন। ২০০৩ সালে তৎকালীন সরকার কর্তৃক চাকরিচ্যুত হবার পর জিয়া হত্যা, লাশ উদ্ধার, মঞ্জুরের গ্রেপ্তার, হস্তান্তর ইত্যাদি সম্পর্কিত কিছু পুলিশি চিঠিপত্র যা এখনও প্রকাশিত হতে দেখিনি, তা হতে আসে। সে সময় যে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, যারা চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন এমন সামরিক কর্মকর্তা, মঞ্জুরকে গ্রেপ্তারকারী মেজর এমদাদ, মঞ্জুর হত্যার বাদী ব্যারিস্টার আবুল মনসুর, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ সুপার আবুল কাহার আকন্দ, ফাঁসি থেকে রক্ষা প্রাপ্ত লে. মােসলেউদ্দিন, পুলিশ কর্মকর্তা ধনঞ্জয় সরকার, ডিআইজি (অব.) মােস্তফা গােলাম কুদুস, এএসপি উখিয়া আব্দুর রব, পুলিশ সুপার শেখ মারুফুল হকসহ আরও অনেকে আমার পরিচিত। কথাও হয়েছে তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে। এই ৩টি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে গ্রহণযােগ্য প্রথম বইটি লেখেন সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকার্নহাস A Legacy of Blood নামে। এরপর তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা নামে লে. কর্নেল (অব.) আব্দুল হামিদ একটি তথ্য বহুল ও গ্রহণযােগ্য পুস্তক লেখেন, চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দিন চৌধুরী একটি সুচিন্তত বই লেখেন বইটির শিরােনাম “দ্য এ্যাসাইসিনেশন অব জিয়াউর রহমান অ্যান্ড ইটস আফটার ম্যাথ”। সেই সময় সেনাসদরে কর্মরত একমাত্র মুক্তিযােদ্ধা অফিসার মেজর জেনারেল ময়নুল হােসেন চৌধুরী প্রণীত “এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য : স্বাধীনতার প্রথম দশক”, মেজর সামসুল আরেফিন এর বই এবং সবশেষে মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফসুলৎজের জিয়া-মঞ্জুর হত্যাকাণ্ডের ওপর প্রকাশিত ৩ কিস্তির গবেষণা পস্তক (প্রকাশ কাল- ২০১৪ সন), তখনকার সংবাদপত্র, হালে ইন্টারনেটে প্রাপ্ত তথ্য থেকে সংশ্লিষ্ট অংশ এই বইটিতে উল্লেখ করেছি। আরও অনেক তথ্য উল্লেখ করা বাকী রয়ে গেছে, স্থানাভাবে সেটা সম্ভব হয়নি। যারা ঘটনাবলি নিয়ে নির্মোহ দৃষ্টিতে সত্য প্রকাশের চেষ্টা করেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বইটিতে আমি যতটুকু সম্ভব সত্য তথ্য সন্নিবেশ করার চেষ্টা করেছি। উক্ত পুস্তকগুলাে আমার এই বইটি লিখতে অনুপ্রেরণা দিয়েছে ও সহায়ক হয়েছে।
জন্ম, জন্মস্থান স্রষ্টা কর্তৃক নির্ধারিত। ১৯৫০ সালের শীতের শুরুতে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন সংলগ্ন এক রেলওয়ের বাংলোতে জন্ম, অথচ তার বড় বোনের জন্ম ১৯৪৭ এর আগস্টে আসামের রাজধানী গৌহাটি শহরে। পিতা সিরাজুল মুস্তাফা এবং মাতা তৈয়বা বেগম (উভয়ে জান্নাতবাসী) চট্টগ্রাম জেলার মান্দারী টোলা গ্রামের অধিবাসী । পিতা আসাম বেঙ্গল, নর্থইস্টার্ন এবং পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। ফলত পিতার কর্মস্থানকে ঘিরে শিক্ষা জীবন শুরু হয় । সর্বশেষ এলএলএম ডিগ্রি লাভ করেন । তার ৫ বোনও এম.এ । ২ জন। সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন এর মধ্যে একজন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করন । তার পিতার মামা চট্টগ্রাম জেলার প্রথম ২জন ডিসটিংশন (মুসলিম) গ্ৰেজুয়েটদের মধ্যে একজন । তার পিতাও ১৯৩৪ সালে ম্যাট্রিক, ১৯৩৬ সালে আইএ পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। দেশাত্মবোধ ও বিপবী তাড়না হতে মহান যুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। অধিক্ষেত্র ছিল ৩নং সেক্টর। যুদ্ধশেষে ১৯৭৩ সনে অল্প সময়ের ব্যবধানে ৩টি প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরি পান । ৮ ডিসেম্বর ১৯৭৩ ডি.এস.পি পদে যোগ দেন । কর্মজীবনে দীর্ঘ প্ৰায় ৪ বছর গোপালগঞ্জের শেষ মহকুমা পুলিশ অফিসার ছিলেন। চাকরিকালে তিনি ৭টি জেলায় পুলিশ সুপার। (রেলওয়ে চট্টগ্রামসহ) ঢাকা মহানগর পুলিশের ২বার উপ-পুলিশ কমিশনার, পুলিশ হেডকোয়াটার্স-এ এআইজি এবং এপি ব্যাটালিয়নে ২ বার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯-২০০০ সালে বসনিয়া এবং হার্জেগোভিনায় জাতিসংঘ শান্তিমিশনে বাংলাদেশ পালন করেন । ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৩ সালে পদোন্নতি সভার ৩দিন পূর্বে, ৫০ বছর বয়সে, ২৫ বছর চাকরি পূর্তি হওয়ার কারণে প্রথম বিসিএস (মুক্তিযোদ্ধা) ব্যাচের ৬৮ জন কর্মকর্তার সাথে অবৈধ ও এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে চাকরিচুত্যুত হন। লড়াকু ও দুঃসাহসী এই লেখক মামলা করে প্রথম জয়লাভ করেন। চাকরিচুত্যুতদের মধ্যে ২০০৭ সালে পুনঃনিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে তখনকার পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরাগভাজন হন। তাদের অসহযোগিতা ও প্রবল প্রতিরোধের মুখেও সরাসরি ডি.আই.জি পদে পদোন্নতি পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো অবসরে যান । পরবর্তীতে আদালতের আদেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সরকার ২০০৩ সাল হতে ডিআইজি, ২০০৫ হতে অতিরিক্ত আইজি এবং ২০০৬ সাল হতে আইজিপি পদে পদোন্নতি দিয়ে অবসর দেন । ইতিপূর্বে ‘একুশের গুলিবর্ষণ, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর কারিশমা ও কিছু অনালোচিত তথ্য” ও “বঙ্গবন্ধু, জিয়া ও মঞ্জর হত্যাকাণ্ড জতুগৃহ একটিই’ নামক তার দুইটি বই প্রকাশিত হয়েছে। পুলিশের কতকথা নামে একটি বই প্রকাশের প্রস্তুতি পর্বে আছে। সেই বইটিতে পুলিশের মঙ্গলময় দিকের সাথে বাহিনীর ভিতরকার অনাচার, দুনীতি, ভর্তি, প্রশিক্ষণ, বদলি, পদোন্নতি, মিশনে গমন যৌন নির্যাতন ইত্যাদি নিয়ে নিন্ পদের কান্না ও হাহাকারের করুণ বিবরণ পাওয়া যাবে। বাংলা ভাষার অতীত নিয়েও লেখা সম্পন্ন হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্ত্রী এক কন্যা এক পুত্ৰ তিন নাতি-নাতনী রয়েছে।