আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে বিজ্ঞানের নানারকম উপযোগিতা। আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাপনের কোন অংশেই বিজ্ঞানের প্রভাব অস্বীকার করতে পারবো না। কারণ, আমাদের সভ্যতার প্রতিটি স্তর, প্রতিটি পদক্ষেপকে বিজ্ঞান করে তুলেছে প্রগতিশীল আর উন্নয়নমূলক। বিজ্ঞানের অবদান তাই মানবসভ্যতার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। কিন্তু তবুও আমাদের চারপাশের মানুষগুলো শুধু মোবাইল ফোন ব্যবহার ছাড়া বিজ্ঞানের তেমন কোন চর্চা করে বলে মনে হয় না। অথচ, মানবসভ্যতার প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের চর্চা অপরিহার্য্য। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানচর্চার কোন বিকল্প নেই। বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাই বিভিন্ন স্কুল-কলেজে বিভিন্ন সময় আয়োজন করা হয় বিজ্ঞান মেলার। এই সাথে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় বিজ্ঞান এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে। সেসব এক্সপেরিমেন্টে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা অংশগ্রহণ করে থাকে। আর সেখানে উপস্থাপিত হয় তাদের উদ্ভাবিত নানা ধরনের বিজ্ঞান প্রজেক্ট বা বিজ্ঞান মডেল। এগুলো অবশ্যই ক্রিয়েটিভিটির লক্ষণ। আমাদের কোমলমতি ছেলেমেয়েরা বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ঠ হচ্ছে আর নিজেরাই তৈরি করছে দারুণ সব এক্সপেরিমেন্টাল মডেল- ভাবতেই ভাল লাগে । সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট সমৃদ্ধ বইয়ের অভাব নেই বাজারে। কিন্তু তার মধ্যে কোনটি সঠিক গুণগত মানসম্পন্ন তা খুঁজে বের করা বেশ মুশকিল। ফলে বিজ্ঞানের প্রজেক্ট তৈরির সময় সঠিক উপাদান বা উপকরণ মেলানোও কঠিন হয়ে পড়ে। আমার এই বইতে হাতের কাছে পাওয়া বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে সহজে তৈরি করা যায় এমনসব সায়েন্স প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। আমার বইয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এক্সপেরিমেন্টের প্রতিটি স্টেপের ছবি সংযোজন। যাতে পাঠক-পাঠিকার বুঝতে কোন অসুবিধা না হয় । তারা যাতে সহজেই প্রজেক্টগুলো বানাতে পারে। এই বইতে ১০০০টি বিজ্ঞান প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই সাথে রয়েছে মজার কিছু ইলেকট্রনিক্স প্রজেক্ট। আশা করা যায় পাঠক-পাঠিকা তাদের এক্সপেরিমেন্টাল বিজ্ঞান প্রজেক্টের দীর্ঘদিনের চাহিদা এই বই থেকে পূরণ করতে পারবে। পরিশেষে, বইটি বিজ্ঞানচর্চার প্রতি পাঠক-পাঠিকাকে আকৃষ্ট করতে পারলেই আমার শ্রম সার্থক হবে।