"সীরাতে রসূলের পয়গাম" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: দু’টি জিনিসের পরখ ভালােভাবে বুঝে নিতে হবে, যাতে করে আলােচনায়। কোনাে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়। একটি হলাে, এমন কিছু তত্ত্বজ্ঞান আছে যা ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে আপনারা লাভ করতে পারেন এবং তার থেকে চিন্তা, গবেষণা, যুক্তি, পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নতুন নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার করতে পারেন। এসব ব্যাপারে উর্ধ্ব জগত থেকে কোনাে জ্ঞান লাভের প্রয়ােজন পড়েনা। এগুলাে আপনাদের নিজস্ব অনুসন্ধান, চিন্তা-গবেষণা, পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ ও আবিষ্কারের কাজ। এ দায়িত্ব আপনাদের। আপনাদের চার পাশে যা কিছু আছে, তা অনুসন্ধান করে বের করুন। তাতে ক্রিয়াশীল শক্তিগুলাে সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করুন। তাতে যে প্রাকৃতিক বিধি-বিধান কার্যকর রয়েছে তা উপলব্ধি করুন। তারপর উন্নতির পথে অগ্রসর হােন। কিন্তু এ ব্যাপারে আপনাদের স্রষ্টা আপনাদেরকে একাকী ছেড়ে দেননি। তিনি ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে অবচেতন উপায়ে পর্যায়ক্রমে তাঁর সৃষ্ট জগতের সাথে আপনাদের পরিচয় করাতে থাকেন। নতুন নতুন তথ্যের দ্বার উন্মুক্ত করতে থাকেন। মাঝে মাঝে ইলহামের পদ্ধতিতে কোনাে কোনাে মানুষকে এমন ইংগিত দান করতে থাকেন যে, সে নতুন কিছু আবিষ্কার করতে অথবা নতুন কোনাে নীতি পদ্ধতি জানতে পারে। তথাপি এসব কিছু মানুষের জ্ঞানেরই আওতাভুক্ত। এর জন্যে কোনাে নবী কিংবা কোনাে আসমানি কিতাবের। প্রয়ােজন হয়না। এ ব্যাপারে প্রয়ােজনীয় তথ্য লাভ করার উপায় উপাদানও মানুষকে দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এমন কিছু বিষয় আছে, যা আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভূতির উর্ধ্বে। তা আমাদের একেবারে নাগালের বাইরে। তা আমরা না পরিমাপ করতে পারি, আর না আমাদের নিজস্ব জ্ঞানের মাধ্যমে তা আমরা জানতে পারি। দার্শনিক এবং বৈজ্ঞানিকরা সে সম্পর্কে কোনাে অভিমত পেশ করলে তা নিছক আন্দাজ অনুমানের ভিত্তিতে করেন। সেটাকে জ্ঞান বলা যেতে পারেনা। সেটা হচ্ছে তাদের মত বা মতবাদ। যাঁরা মতবাদ পেশ করেছেন স্বয়ং তাঁরাও মতবাদকে নিশ্চিত বলে ঘােষণা করতে পারেননা। যদি স্বীয় জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন থাকেন, তাহলে তাঁরা নিজেরাও তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেননা এবং অন্য কাউকে তা বিশ্বাস করার কথা বলতেই পারেননা।