সর্বপ্রথমে ঐ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে আলীশানে শতকোটি শোকর আদায় করছি, যিনি সমগ্র সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে মানুষকে নির্বাচিত করে জ্ঞান, বিবেক-বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা দান করে তাকে সজ্জিত করেছেন। মানুষকে চোখ, কান ও মস্তিষ্ক- এ তিনটি জিনিস দান করে দেখে, শুনে এবং মস্তিষ্ক দিয়ে চিন্তা-গবেষণা করার মতো যোগ্যতা দান করেছেন। অজানাকে জানা এবং নবতর আবিষ্কারের অনুপ্রেরণা তিনিই মানব সত্তার মধ্যে প্রবিষ্ট করে দিয়েছেন। মানব জীবনের একটি বিশেষ মেয়াদকালও তিনিই নির্ধারিত করে দিয়েছেন। যে মেয়াদ পর্যন্ত মানব জাতি এই পৃথিবীতে টিকে থাকবে, সে মেয়াদ পর্যন্ত মানুষ যেনো একের পর এক গবেষণায়রত হয়, সে ব্যবস্থাও তিনিই করেছেন। অগণিত দরুদ ও সালাম বিশ্বমানবতার মহান মুক্তির দূত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি, যাঁকে সমগ্র সৃষ্টির জন্য করুণার মূর্তপ্রতীক হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছিলো। যাঁকে কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানব মন্ডলীর জন্য একমাত্র পথপ্রদর্শক, শিক্ষক, সতর্ককারী, সত্যপথে অনুপ্রেরণা দানকারী, সফলতা ও ব্যর্থতার পথের পার্থক্যরেখা সৃষ্টিকারী এবং সাম্য-মৈত্রীর বাণী বাহক হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছিলো। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর সম্মানিত স্ত্রীগণ ও •
Title
সহীহ্ বঙ্গানুবাদ বোখারী শরীফ ১ থেকে ১০ খণ্ড একত্রে (ছোট)
মুহাদ্দিস শব্দের আভিধানিক অর্থ হাদিসবেত্তা। বলা হয়ে থাকে সকল মুহাদ্দিসের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ছিলেন মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ। ১৯৪ হিজরী, ১৩ই শাওয়াল শুক্রবার খোরসানের বোখারাতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল বোখারী (র) এর বই সমূহ এর জন্যই তিনি স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। মুসলিম জগতে ইমাম বোখারী নামে অধিক পরিচিত তিনি। তাঁর পিতা ইসমাইল ইবনে ইব্রাহিম মুসলিম জগতের আরেক পরিচিত ব্যক্তিত্ব, যার ওঠা-বসা ছিলো হাদিসবীদ আল্লামা হাম্মাদ (রহঃ) এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহঃ) এর। অঢেল ধন-সম্পত্তির মালিকও ছিলেন তিনি। তাই খুবই অল্প বয়সে ইমাম বোখারী পিতাহারা হলেও কোনো সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। এর আরেক কারণ তাঁর মা। তাঁর মা ছিলেন এক বিদূষী ও পরহেজগার নারী। পুত্রকে তিনি সঠিক শিক্ষাটাই দিয়েছিলেন। তাই মাত্র ৬ বছর বয়সে বোখারী (রঃ) কোরআনের হাফিজ হন এবং এরপর হাদিস শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। ষোল বছর বয়সে হজ্জে গমন করে মক্কায় থেকে যান দক্ষ হাদিসবীদদের থেকে হাদিসের জ্ঞান নিতে। হাদিস সংগ্রহের আশায় ইরাক, সিরিয়া, মিশর, মদিনাসহ বহু অঞ্চলে ভ্রমণের পর ষোল বছর পর আবার বোখারায় ফেরত যান। ব্যক্তি হিসেবে তিনি ছিলেন দানশীল। তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিলো প্রখর। ফলে হাদিস শুনেই মনে রাখতে পারতেন। বলা হয়ে থাকে, তিনি ছয় লক্ষ হাদিস মুখস্থ বলতে পারতেন, ক্ষুদ্র ত্রুটিও তার নজর এড়াতো না। ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল বোখারী (র) এর বই সমগ্র বলতে আমরা বুঝি বুখারী শরীফ, যাতে স্থান পেয়েছে ইমাম বোখারী (রঃ) দ্বারা সংগ্রহকৃত সহীহ হাদিস। তার সংকলিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০টিরও বেশি। শেষ বয়সে তিনি নিজ বাসভূম থেকে বিতাড়িত হন এবং সমরকন্দের খরতঙ্গ নামক স্থানে চলে আসেন। এ অঞ্চলেই তিনি ২৫৬ হিজরীর, ১লা শাওয়াল ইন্তেকাল করেন।