মানুষ অদম্য । অপরাজেয় । শারীরিক প্রতিবন্ধিতাও তাকে নিরস্ত্র করতে পারে না । ক্রাচে ভর করে মানুষ উঠে পড়ে সুউচ্চ পর্বতের চূড়ায় । দুই হাত নেই, দুই পায়ে লিখে কেউ-বা অর্জন করে সর্বোচ্চ ডিগ্রি। তেমনি অর্থনৈতিক বাধা, সামাজিক বাধা, প্রাকৃতিক বাধা জয় করেই মানুষ এগোতে থাকে । রংপুরের পায়রান্দের ছোট্ট বালিকাটি বাড়িতে বাংলা পড়া ছিল পাপ, ইংরেজি পড়া ছিল মহাপাপ। তবু রাতের অন্ধকারে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে সে মোমবাতির মৃদু আলোয় লেখাপড়া করত। কী সুন্দর বাংলা শিখল সে, কী দারুণ ইংরেজি! তার সুলতানা'স ড্রিম নামের বইটি পড়লে আজও আমরা অভিভূত হই, তেমনি তাঁর অবরোধবাসিনী কিংবা মতিচূর আজও আমাদের আলোড়িত করে। কেবল তিনি ভালো লিখতে শিখলেন তা নয়, তাঁর চিন্তাও ছিল বৈপবিক । বড় হয়ে তিনি স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন কলকাতায়, সেই স্কুলে ছাত্রী যোগাড় করতে তাঁকে যেতে হয়েছিল বাড়ি বাড়ি। একদিন তিনি নিজে বাধা অতিক্রম করতে পেরেছিলেন বলেই আজ বাংলাদেশের মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে স্পিকার নারী, মেয়েরা পৌছে যাচ্ছে এভারেস্টের চূড়ায় শুধু ইতিহাসের পাতা থেকে নয়, আমাদের চারপাশে প্রতিদিনের জীবনেও তেমনি রয়েছেন যুদ্ধজয়ী নায়কেরা। যাঁরা সব বাধা পেরিয়ে চলেছেন বহুদূর। যাঁদের দিকে তাকিয়ে আমরা বলতে পারি, পথ হারাবে না বাংলাদেশ। নাটোরের মহরম আলী হুইলচেয়ার নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন পৃথিবীর পথে, আবার নাটোরেই গড়ে তুলেছেন ‘ইউনাইটেড অ্যাকশন' নামের সংস্থা । আমাদের প্রত্যেকেরই আছে নিজস্ব বাধা পেরোনোর গল্প, তেমনি আমাদের চারপাশে আছে এমন মানুষ, যাদের বাধা পেরোনোর গল্পটা সত্যি অনন্য, অসাধারণ, আর দারুণ উজ্জীবক, প্রেরণদায়ী । আমরা এসব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়া বিজয়ীদের কথা বলি, শুনি, শোনাই- আসলে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দিই; একইসঙ্গে বাংলদেশের বিজয়ের ব্যাপারে হই প্রত্যয়ী।
জীবন ঘনিষ্ঠ বহুমাত্রিক লেখক রাজিব আহমেদ বাংলা মননশীল সাহিত্যকে ক্রমেই সমৃদ্ধ করে চলেছেন। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম বিক্রয় ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ। মোট প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫০ অতিক্রম করে গেছে। বাংলাদেশে আত্মোন্নয়নমূলক অভিনন্দন লাভ করেছেন। রাজিব আহমেদ চারটি স্বনামধন্য বহুজাতিক কোম্পানিতে (রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভার, বাংলালিংক ও রবি) দশ বছরের কর্মজীবন থেকে স্বেচ্ছায় ছুটি নিয়ে এখন মুক্ত বিক্রয় প্রশিক্ষক ও অনুপ্রেরণামূলক বক্তা; জয় করে চলেছেন অসংখ্য বিক্রয় পেশাজীবী, শিক্ষার্থী ও দর্শক শ্রোতার হৃদয়। লেখালেখি তার নেশা আর ভালোবাসেন দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে।