মনের জীবনের পরমার্থিক সত্য কী? মানুষ অজ্ঞানতার অন্ধকারে আপদমস্তক নিমজ্জিত। তাই সে বুঝতে পারে না কোন সময়ে কোন কাজটি করতে হবে। অর্থাৎ মানুষ সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করে না। মানুষ বড়ই নির্বোধ কেননা যে নিজের জীবনের পরমার্থ কিসে নিহিত। তা বুঝে না। খাওয়া, ঘুম, মৈথুন ইত্যাদিতে কি মানব জীবনের পরমার্থ নিহিত? না, বরং মানব জীবনের হিরন্ময় সময় যৌবনকে পরমার্থিক কাজে ব্যবহার করার মধ্যেই মানব জীবনের পরমার্থ নিহিত। বড় কথা হচ্ছে মানুষের জীবনের স্বর্ণময় সময় অতিক্রম হয়ে যায় অথচ পরমার্থিক সত্য লাভের জন্য কাজ করা হয় না। সময় পার হয়ে গেলে মানুষ বুঝতে পারে যদি ঐ সময়ে ঐ যথার্থ কাজটি করতে পারতেন তাহলে জীবনে পরম সাফল্য বা পরমার্থিক জীবন লাভ করা যেত। আসলে তখন আর সময় থাকে না সেই পরমার্থিক কাজটি করার আর পরমার্থিক জীবনও লাভ করা হয় না। তাই তো কথায় বলে-"সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড়।” হায়রে নির্বোধ মানুষ! খেয়ে আর ঘুমিয়ে জীবনের হিরন্ময় সময়টুকু নিঃশেষ করে দিলে অথচ সময় থাকতে ঈশ্বরের নাম জপ করলে না, ঈশ্বরের গুণের স্মরণ-সংযোগ করলে না। সব সময় ঈশ্বরের নাম-রূপ গুণের স্মরণ- সংযোগ কর আর ঈশ্বরের নাম জপ কর, সম্যক গুরুর কথামৃত পান কর জীবনকে মহাকালের বুকে ভাস্বর করে রাখ। এই কর্মের মধ্যেই পরমার্থিক জীবন নিহিত। মানুষ রূপেই ঈশ্বর লীলা করছেন। মানুষই ঈশ্বর এমনটি নয়, তবে মানুষ ঈশ্বর থেকে পৃথক কোনো সত্তা নয়। ফুল ও ঘ্রাণ যেমন অবিচ্ছেদ্য মানুষ ও ঈশ্বর তেমনি অবিচ্ছেদ্য। মানুষের দুর্বল আমিত্ব বিলুপ্ত হলে তার মধ্যে আল্লাহিয়াত বিকশিত হয়। আপন সত্তায় আল্লাহিয়াত বিকশিত হওয়ার মধ্যেই মানব জীবনের পরমার্থিক সত্য নিহিত। মহান আল্লাহই মানব জীবনের পরমার্থিক সত্য একথা পরম সত্য হলেও মানুষ জৈবিক তাড়নায় তা ভুলে যায়। আর পরমার্থিক জীবন ভুলে ক্ষণিকের দুনিয়ায় অর্থকেই পরমার্থ মনে করে এমনকি অর্থ উপার্জনের জন্য মূল্যবান জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দেয়।
মিজানুর রহমান ফকির। তিনি ১৯৯৩ সালে নেত্রকোণা জেলার কংস নদীর তীরে বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজারস্থ চরপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ফকির বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল কুদ্দুস ফকির। তিনি এলাকার প্রাচীনতম দীনি বিদ্যাপিঠ ‘হিফজুল উলুম মাদ্রাসা’য় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে কওমী শিক্ষাধারা ক্রমচক্রে সর্বশেষ ২০০৯ সালে ‘জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম (মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্স), মিরপুর-১, ঢাকা’ থেকে তাকমীল (দাওরায়ে হাদীস)-এ কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। সেই সাথে বহুমুখী শিক্ষায় নিজেকে তৈরি করার অদম্য স্পৃহা নিয়ে ২০০৮ সালে নেত্রকোণা জেলার ‘দশধার মিসবাহুল উলূম দাখিল মাদ্রাসা’ থেকে দাখিল, ২০১০ সালে ‘এন. আকন্দ কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসা নেত্রকোণা’ থেকে আলিম, ২০১৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতক (সম্মান) এবং ২০১৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ‘মোহনগঞ্জ আলিম মাদ্রাসা নেত্রকোণা’য় আরবি প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি তিনি কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার ইনিশিয়েটিভ (CWI)-এ Assistant Editor & Admin Officer হিসেবেও কাজ করছেন। ইতোমধ্যে তাঁর লেখা ও অনূদিত বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে।