“জেনারেল ওসমানী" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ মহম্মদ আতাউল গনি ওসমানী বাংলাদেশের জন্ম-ইতিহাসের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত একটি নাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পূর্বে, ১৯৩৯ সালের ৩ জুলাই ওসমানী যােগ দেন ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর চতুর্থ আরবান ইনফ্যান্টিতে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্নেল পদ থেকে ১৯৬৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গঠিত হয়। মুজিবনগর সরকার। এ সরকার ওসমানীকে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করে। এর পরের ঘটনা ইতিহাসের অংশ। তাঁর সময়ােপযােগী সিদ্ধান্ত, রণনীতি ও রণকৌশলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় অভীষ্ট লক্ষ্যে। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম নেপথ্য কারিগর জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী। এ বীরযােদ্ধা, সমরকুশলীর অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। যুদ্ধের আগে তাে বটেই, স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনেও ওসমানীর জোর উদ্যোগ ও আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিলাে লক্ষণীয়। বঙ্গবীরখ্যাত এ জননায়ক আমৃত্যু গণমানুষের অধিকার আদায়ে রাজনীতির মাঠে সরব থেকেছেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ওসমানীর সমগ্র জীবনের প্রতি দৃষ্টিসম্পাত করেছেন লেখক-অধ্যাপক মাে. আব্দুল আজিজ। তাঁর লেখনীতে এই সমরনায়কের বীরত্বগাথাঋদ্ধ জীবন মূর্ত হয়েছে জেনারেল ওসমানী’ গ্রন্থে। বইটি পাঠান্তে পাঠক নতুন এক ওসমানীর সন্ধান পাবেন।
১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে ৩১ মার্চ সিলেটের তদানীন্তন বালাগঞ্জ থানার এক নিভৃত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দেশে বিদেশে শিক্ষা জীবন শেষে তিনি অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন দেশের প্রধান কয়েকটি কলেজে, অধ্যক্ষ ছিলেন নোয়াখালী কলেজ, নরসিংদী কলেজ ও সিলেট এমসি কলেজে। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড ও কুমিল্লার শিক্ষাবোর্ডে। ১৯৯৩ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে রেজিস্ট্রার, খণ্ডকালীন শিক্ষক ও ট্রেজারার নিযুক্ত হন। পরে নবপ্রতিষ্ঠিত সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেন ও বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত থাকার পর ইউনিভার্সিটির উপাচার্য নিযুক্ত হন। সে পদের মেয়াদান্তে বর্তমানে তিনি এমেরিটাস প্রফেসর। একজন নিষ্ঠাবান গবেষক ও লেখক প্রফেসর আজিজ বিভিন্ন বিষয়ে ২৩টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এছাড়া কয়েকটি স্মারক গ্রন্থ ও ইতিহাস গ্রন্থের সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রকাশিতব্য সিলেট জেলা গেজেটিয়ারের সম্পাদনা পরিষদেরও তিনি একজন সদস্য। জেনারেল ওসমানীর পিতা খান বাহাদুর মফিজুর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ছদরুন্নেছা এমই মাদ্রাসার স্কুল বিভাগে পড়াশোনা করার সুযোগে তিনি তাঁর পরিবার সম্পর্কে জানাশোনারও সুযোগ লাভ করেছিলেন। ২০০০ সালে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সর্বাধিনায়ক ওসমানী' নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও ওসমানী সম্পর্কে তাঁর লেখা প্রবন্ধ বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে।