‘জীবনের গল্প' বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ আমি লেখক নই। লেখালেখির মতো ধৈৰ্য্যও আমার নেই। বর্ণ প্রকাশের সাইদুর ভাইকে কাঠ খোর পোড়াতে হয়েছে এই বই আমাকে দিয়ে লেখাতে। ধন্যবাদ প্রাপ্য এই বই এর দুই সহ লেখক আব্দুলাহ আল মোমিন এবং এস এম আব্দুর রহমান এর। উনারা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন বইটির জন্যে। লাখ লাখ শ্রোতার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই এবিসি রেডিও’র হ্যালো ৮৯২০ অনুষ্ঠানটিকে এত ভালোবাসা দেবার জন্যে। প্রায় ২০০ পর্ব প্রচারিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটির। ১০টি গল্প আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। এর মধ্যে নয়টি গল্প শ্রোতাজরিপে সর্বাধিক ভোট প্রাপ্ত। আর একটি গল্প রেডিওতে প্রচার করা সম্ভব হয়নি। এই জীবনের গল্পটি শুধুই বইয়ের পাঠকের জন্য। রেডিওতে যখন অনুষ্ঠান প্রচার হয় অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন এই গল্পগুলো আমি সহ্য করি কি করে! আমার কি কান্না পায় না! হ্যা, কিছু কিছু জীবনের গল্পে আমি কাঁদি। মাইক্রোফোনে সে কান্নার শব্দ আপনারা শুনতে পান না। দু'একটি জীবনের গল্প শোনার পর কয়েক দিন ঘুমোতে পারিনি এমন ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিটি জীবনের গল্পের শেষে আমি গুরুত্বপূর্ণ কিছু নোট দিয়েছি। এই অনুষ্ঠানের পিছনে যেসব মানুষ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তারা। আমার সহকর্মী লোবান, খালিদ, আপেল এবং এক সাবেক সহকর্মী আরজে শাকিলকে কৃতজ্ঞতা জানাই ঢাকার বাইরে এবং দেশের বাইরে যারা অনেক কষ্টে এই অনুষ্ঠান শোনেন। এই বইটি তাদের জন্যে আমার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। একটি কৃতজ্ঞতা শুধুই শব্দ। এই শব্দ থেকেও বেশি কিছু সে আমার কাছে। তিনি আমার বড় ভাই এবং সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা, এবিসি রেডিও’র সানাউল্লাহ লাবলু। বর্তমানে রংধনু টেলিভিশনের প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে আছেন। এক দিন কাছে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন কিবরিয়া এবিসি রেডিওটাকে জনপ্রিয়তার এক নাম্বার বানাতে হবে। টার্গেট ছিলো ৬ মাস। আমরা ৪ মাসে এক নাম্বার হয়েছিলাম জনপ্রিয়তায়। তখন থেকে শ্রোতাপ্রিয়তায় এবিসি রেডিও এখনো এক নাম্বার। আলহামদুলিল্লাহ! হ্যালো ৮৯২০ অনুষ্ঠানের গাইডেন্স তার কাছ থেকে না। পেলে এই অনুষ্ঠান এত দূর আসতে পারতো না। রাত ২ টায় অনুষ্ঠানে ফোন করে বলতেন কিবরিয়া এইটা বলেন ঐটা বলেন রেডিওতে। ধন্যবাদ ড্যানিয়েল ভাইকে। তিনি এবিসি রেডিও’র বর্তমান সিওও। আপনার সহযোগিতা না পেলে বইটা বাজারে আনা সম্ভব ছিলো না। সূচিপত্রঃ সুমন উল্লাস ১ নূরী ১২ আল আমিন ১৯ বর্ষা ২৯ মুন্নি ৩৫ প্রেমা ৪২ লিমন ৪৬ নিগার ৫৪ নূপুর ৫৯ রিপা ৬৫ বইয়ের কিছু অংশঃ জনগণ সুমন উল্লাস আমি সুমন উল্লাস। বর্তমান বয়স পঁচিশ । টিউসনি করি। বত্রিশ জন ছাত্রকে পড়াই। তখন ক্লাস টুতে পড়ি। বার্ষিক পরীক্ষার আগের কথা। ১৯৯৭ সাল। স্কুলে স্যার আসেনি। বন্ধুকে বলি- চল, মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করি। ও বলে, মোরগ লড়াই খেলব। যদি তুই হারিস তাহলে আইসক্রিম খাওয়াবি। আর আমি হারলে তোকে খাওয়াব। লড়াই শুরু করলাম। লড়াই শুরু করতেই ইটের খোয়ার উপর পা পড়ে । পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা পাই। পা সোজা করে দাঁড়াতে পারিনা। আমার জ্যাঠাতো ভাই কাঁধে করে বাড়িতে নিয়ে যায়। পরেরদিন এক্সরে রিপোর্টে ধরা পড়ে পা ভেঙে গেছে। আব্বু অনেক বকাঝকা করে। তিনি একজন ক্লিনার। যাকে বলা হয় সুইপার। বাজার ক্লিনার হিসেবে আছেন আরো সহজ করে বলা যায় ঝাড়দার। মানুষ আমাদেরকে সুইপার বলে গালি দেয়। ডাক্তার বলে, পা সারতে দেড় মাস লাগবে। এই সময়ে ওকে রেষ্টে রাখতে হবে। একমাস পর বার্ষিক পরীক্ষা। শিক্ষকরা বলে- ও অসুস্থ, পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু একটি বছর পিছিয়ে থাকতে কিছুতেই রাজি না। পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে এল। ভাঙা পায়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে যাই। বেঞ্চের ওপর শুয়ে থেকে অনেক কষ্টে পরীক্ষাগুলো দিই। একমাস পর রেজাল্ট বের হলো। পরীক্ষায় প্রথম হলাম। আব্বু অনেক খুশি হয়। বাড়ির সবাই অনেক আদর করে। তখন থেকে ভালো করে পড়াশুনা শুরু করি। ক্লাস ফাইভে উঠলে, শিক্ষকরা বলে- বৃত্তি দাও। কিন্তু বৃত্তি দিলে গাইড কিনতে হবে। ভালো শিক্ষকের কাছে পড়তে হবে। অনেক টাকার প্রয়োজন। আব্দুর তো এত টাকা নেই। খাতা-কলম কিনে দিতেই হিমসিম খেতে হয়। সেখানে বই কেনার টাকা পাবে কোথায়! তাই বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়া হলো না। এভাবে দারিদ্রতার মধ্যে পড়ালেখা চলতে থাকে। আমরা তিন বোন, দুই ভাই। ভাইদের মধ্যে আমিই বড়। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। আমার পরে এক ভাই ও বোন আছে। বোনটি...... লেখকের কথাঃ আর.জে. কিবরিয়া মোঃ গোলাম কিবরিয়া সরকার। আরজে কিবরিয়া হিসেবে পরিচিত রেডিও শ্রোতামহলে। দশ বছরের রেডিও ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অনেক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। রেডিও টুডে তে ২০০৬ সালে যোগ দেন কথাবন্ধু হিসেবে। এখন ডেপুটি এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার হিসেবে কর্মরত আছেন। এবিসি রেডিও এফএম ৮৯ দশমিক ২ এ। বর্তমানে তার পরিকল্পনা এবং উপস্থাপনায় এবিসি রেডিওতে “হ্যালো ৮৯২০”, “যাহা বলিব সত্য বলিব” এবং “ডর” নামে তিনটি অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে। কিবরিয়া ১ম বিভাগে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন লোক প্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এমফিল করেছেন ঐ একই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবিসি রেডিওতে কাজের পাশাপাশি মাছরাঙা টেলিভিশন ও ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। এছাড়াও কাজ করেছেন বিবিসি জানালা ও অনলাইন রেডিও লেমন টুয়েন্টি ফোর এ ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে তাঁর অবদানের জন্যে তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড এবং পরপর তিন বার ইউনিসেফ কর্তৃক মীনা এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০১৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত “পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন ইন সাউথ এশিয়াঃ ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ এন্ড পাকিস্তান” এছাড়াও বাংলাদেশে ইভোটিং এর উপর একমাত্র বই ‘ই ভোটিং ও ডিজিটাল প্রসঙ্গে’র সহলেখক তিনি।
রেডিও শ্রোতামহলে আর জে কিবরিয়া নামে ব্যাপক জনপ্রিয় রেডিও সঞ্চালক মো: গোলাম কিবরিয়া সরকার আত্মপ্রকাশ করেছেন লেখালেখির জগতেও। এগারো বছরের দীর্ঘ রেডিও ক্যারিয়ারে তিনি উপহার দিয়েছেন অনেক শ্রোতাপ্রিয় অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানগুলোর নানারকম হৃদয়স্পর্শী, মুখরোচক গল্প আর অভিজ্ঞতার বর্ণনাই প্রকাশ পেয়েছে আর জে কিবরিয়া এর বই সমূহ-তে। আর জে কিবরিয়ার উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাজীবন কেটেছে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুল এবং বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে ১ম শ্রেণী নিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি পরবর্তীতে এমফিল সম্পন্ন করেন। ২০০৬ সালে রেডিও টুডে-তে কথাবন্ধু হিসেবে যোগ দিয়ে শুরু করেন রেডিও ক্যারিয়ার। বর্তমানে এবিসি রেডিও এফএম ৮৯.২ এ ডেপুটি এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার নিজস্ব পরিকল্পনা এবং উপস্থাপনায় এবিসি রেডিওতে ‘হ্যালো ৮৯২০’, ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’ এবং ‘ডর’ নামে একাধারে তিনটি অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে বর্তমানে। এবিসি রেডিওতে কাজের পাশাপাশি মাছরাঙা টেলিভিশন ও ইউল্যাব-এও কাজ করছেন আর জে কিবরিয়া। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে কাজ করেছেন বিবিসি জানালা ও অনলাইন রেডিও লেমন টুয়েন্টি ফোর বাংলাদেশে। ই ভোটিং এর উপর একমাত্র বই ‘ই ভোটিং ও ডিজিটাল প্রসঙ্গের সহলেখক তিনি। অমর একুশে গ্ৰন্থ মেলা ২০১৬-তে প্রকাশিত হয় আর জে কিবরিয়া এর বই ‘জীবনের গল্প পার্ট-১’, যেখানে সম্পাদনার কাজটি করেছেন তিনিই। পাঠকমহলের ব্যাপক সাড়া পেয়ে এরপরের প্রতিটি বই মেলাতেই বের করতে হয়েছে বইটির সিরিজ। রেডিওতে ‘হ্যালো ৮৯২০’ অনুষ্ঠানটির শ্রোতাপ্রিয় গল্পগুলো নিয়েই সিরিজ আকারে সাজানো আর জে কিবরিয়া এর বই সমগ্র ‘জীবনের গল্প পর্ব ১-৪’। তাঁর উপস্থাপনায় তুমুল জনপ্রিয় আরেকটি রেডিও অনুষ্ঠান ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’ থেকে অতিথিদের জীবনের গল্পগুলো ও তাদের ইংরেজি অনুবাদসহ সাজিয়েছেন বই ‘যাহা বলিব সত্য বলিব পার্ট-১’। ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ম্যানহাটন অ্যাওয়ার্ড (দক্ষিণ এশিয়া) ওয়ার্ল্ড সামিট ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড এবং পরপর তিনবার ইউনিসেফ কর্তৃক মীনা অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।