"আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি প্রসঙ্গে..." বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: “বই লিখতে গেলে নাকি নিজের কথা কিছু লিখতে হয়। এই রেওয়াজটা আদিকাল থেকে চলে আসছে, যদিও এই খামোখামির প্রতি আমার যথাযথ অনীহা। নিজেকে নিয়ে কি-ই-বা বলার আছে? নিজের ঢোল আমি নিজে কখনোই পেটাতে পারিনি—এ আমার সীমাবদ্ধতা ও ব্যর্থতা। এমন কীই-বা আছে আমার জীবন সম্পর্কে বলার, যা পাঠককুল বা সংগীতের ভক্তদের অজানা? সৃষ্টিকর্তার অসীম কৃপায় আমার চাওয়া থেকে পাওয়াই হয়েছে অনেক বেশি। ‘পৃথিবীতে বেড়াতে আসিনি, এসেছি অনেক কাজ নিয়ে’—এই কথা কোনো এক গানে বলেছিলাম। কিন্তু কাজটি কী তা আজ অব্দি বুঝে উঠতে পারলাম না। আমার প্রতিটি কাজ সংগীতের ক্ষেত্রে ভেবেছিলাম এক-একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ভেবেছিলাম এক একটি ছাঁপ এই মাকসুদুল হক নামক প্রাণীটির পৃথিবীতে চলার পথের চিহ্ন হয়ে থাকবে। এ আশাটুকু করেছিলাম। জানি না—আদৌ তা সম্ভব হয়েছে কি না? তবে এইটুকু জানি, আমার আন্তরিকতার কখনোই কোনো কমতি ছিল না। পারিপার্শ্বিকতা ও বাস্তবতা অনেক সময় আমার আকাঙ্ক্ষাগুলোকে অনেক দমিয়ে রাখলেও, আমি সোচ্চার উচ্চারণ করতে চাই, আমি আমার বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করি আমার সকল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। বিশ্বাসটা কী? কাকে বিশ্বাস করি বা করি না, করব বা করব না—এ ভাবনা আমায় কখনো চিন্তিত করেনি। এক মহান কবি বলেছিলেন—‘সত্য পথ বলে কোনো পথ নেই, সত্য কথা বলে কোনো কথা নেই, তবে আছে কেবল সত্য কাজ’। আমিও মনে করি সত্য কাজেই মানুষ এই ‘বিশ্বাস’ নামের বস্তুটিকে খুঁজে পায়...! সে হোক সৃষ্টিকর্তার কোনো বিশ্বাস, প্রেমিকার ওপরে বিশ্বাস, প্রকৃতির ওপর বিশ্বাস এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ—‘অবিশ্বাসের ওপরে বিশ্বাস’...! কারণ অবিশ্বাসও এক ধরনের বিশ্বাস। এই বই লেখার পেছনে একটি ছোট গল্প আছে। বাংলাদেশে লিখতে চাইলেও লেখা যায় না। লিখব কোথায়—পত্রিকায়? সে তো অনেক আগেই পণ্ডিত ব্যক্তিদের দখলে চলে গেছে। ‘অমুকের’ মতো ‘তমুকের’ মতো লেখাও আমার পক্ষে সম্ভব না।... লিখতে চেয়েছি নিজের মতো করে। স্বঘোষিত আমি বাংলাদেশের দালাল, লিখেছি দলিল বস্তাপ্যাঁচানো মলাটে; ‘বস্তাপচা’ মনে হলে ফেলে দিবেন যথাস্থানে, নতুবা তুলে রাখবেন...! বই নয়—ক্যাসেটের তাকে!” সূচিক্রম : ভূমিকার বদলে... [১১-১৪] থিংকিং লাউড: কিছু না বললেই যে নয়... [১৫-২০] নিজের কথা : ‘এ ভাগ্য ক’জনেরই-বা জোটে?’ [২১-২৪] প্রথম পর্ব : তারুণ্য [২৫-৮২] নিষিদ্ধ এইড’স শিক্ষা [২৭-৩৫] আজকের প্রজন্ম ও মুরব্বিতন্ত্র-১ [৩৬-৪০] আজকের প্রজন্ম ও মুরব্বিতন্ত্র-২ [৪১-৪৪] আজকের প্রজন্ম ও মুরব্বিতন্ত্র-৩ [৪৫-৪৮] ঠাট্টা ও এলোপাথাড়ি-১ [৪৯-৫৬] ঠাট্টা ও এলোপাথাড়ি-২ [৫৭-৬২] রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দুই হাজার দশ [৬৩-৭১] দ্রব্যের অপব্যবহার―গঞ্জিকা [৭২-৮২] দ্বিতীয় পর্ব : রাজনীতি [৮৩-১৫০] আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি-১ [৮৫-৯৪] আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি-২ [৯৫-৯৯] আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি-৩ [১০০-১০৫] আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি-৪ [১০৬-১১২] এই প্রবন্ধ যদি ছাপা হয় [১১৩-১৩১] বাংলাদেশের মানুষ আমরা এক ও অভিন্ন [১৩২-১৪১] নিরপেক্ষের পক্ষ থেকে [১৪২-১৫০] তৃতীয় পর্ব : সংগীত [১৫১-২৪৬] এই আমাদের অপরূপ অপসংস্কৃতি [১৫৩-১৬৩] হোক না একটু ডিবেট [১৬৪-১৭০] রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে আমার কথা [১৭১-১৭৪] গগনবিদারি ওয়াহিদুল হক সমীপেষু [১৭৫-১৮৬] রবীন্দ্র রাজাকারের কবলে? [১৮৭-১৯২] বাংলা ব্যান্ডসংগীত আন্দোলন [প্রথম পর্ব] প্রসঙ্গ—ফিডব্যাক ও মাকসুদুল হক: ধন্যবাদ হে গীতিকবি [১৯৩-২০৬] বাংলা ব্যান্ডসংগীত আন্দোলন [দ্বিতীয় পর্ব] প্রসঙ্গ—মাকসুদ ও ঢাকা [২০৭-২২৪] বাংলা রক ও বাঙালির আত্মার দরিদ্রতা [প্রথম পর্ব] [২২৫-২৩১] বাংলা রক ও বাঙালির আত্মার দরিদ্রতা [দ্বিতীয় পর্ব] [২৩২-২৩৯] বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীত-শিল্প [২৪০-২৪৬] চতুর্থ পর্ব : রম্য [২৪৭-২৬৬] মহল্লায় মেগা-মোল্লাহ [২৪৯-২৫৭] মিস্টার চ্যাটার্জির মদের দোকান [২৫৮-২৬১] তোতা পীরের মাজার [২৬২-২৬৬] পঞ্চম পর্ব : মাকসুদ সম্পর্কে [২৬৭-২৯৬] প্রাপ্তবয়স্কের নিষিদ্ধ গান [২৬৯-২৭৪] মাঝি তোর রেডিও নাই : পেছনের গল্প [২৭৫-২৭৮] দি ম্যাক : অফ প্রেম, দ্রোহ অ্যান্ড ছ্যাক! [২৭৯-২৮৪] তুমিহীনতার কোনো যুক্তি নেই [২৮৫-২৯২] নিকেতন আবাসিক এলাকা : মাকসুদুল হক ও আমার শুরু [২৯৩-২৯৬] ষষ্ঠ পর্ব : সাক্ষাৎকার [২৯৭-৩৩৪] মনই জীবনের কথা বলে [২৯৯-৩০৬] ম্যাকের ইন্টার্ভিয়্যু সংগ্রহসূত্র ও অনুষঙ্গের খুটখাট [৩০৭-৩২৭] কিছু মানুষ নাস্তিকতাকে ফ্যাশন মনে করে [৩২৮-৩৩৪] সপ্তম পর্ব : বিবিধ [৩৩৫-৩৭৬] সেই প্যাগোডা [৩৩৭-৩৪১] হাম্বা [৩৪২-৩৪৮] ইতিহাস পাল্টায় কলমের সঙ্গে [৩৪৯-৩৫৭] মানুষ: একটি দর্শন বহির্ভূত মতামত... [৩৫৮-৩৬৮] জীবনপঞ্জি [৩৬৯-৩৭৬]
মাকসুদুল হক ওরফে ম্যাক হক ১৯৫৭ সালে নারায়নগঞ্জের আমলাপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন। দীর্ঘ অনেক বছর ধরে তিনি একজন গায়ক-গীতিকার হিসেবে ও ১৮ বছর কিংবদন্তি ব্যান্ড ”ফিডব্যাক” এর একজন নেতৃত্ব দানকারী সদস্য হিসেবে অসংখ্য শ্রোতাকে, তাঁর ”গান-সুর ও কন্ঠে” মুগ্ধ ও বিমোহিত করেছেন। তাঁর স্বরচিত ৩০টিরও বেশী গানে নিজে কন্ঠ দিয়েছেন এবং ১৯৯০ সালে তাঁর ”মেলায় যাই-রে” গানটি সর্বকালের সেরা গান হিসেবে তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা ও ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। আজও গানটিকে বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উৎসব উদযাপনের জন্য একটি অনানুষ্ঠানিক সঙ্গীত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯৬ সালে তিনি ফিডব্যাক ছেড়ে যান এবং জ্যাজ-রক ফিউশন ব্যান্ড ”মাকসুদ ও ঢাকা” গঠন করেন, যা এখন পযর্ন্ত চলছে। তাঁর একক কৃতিত্বে উভয় ব্যান্ডের সাথে ১২ টিরও বেশী মিউজিক্যাল অ্যালবাম রয়েছে। আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি (২০০৩), বাউলিয়ানা-ওরশিপিং দ্য গ্রেট গড ইন ম্যান (২০০৬), দ্য বাংলাদেশ পোয়েট অব ইমপ্রোপ্রাইটি-হ্যারল্ড রাশিদের শিল্পকর্ম (২০১৭), বাউলিয়ানা-মানুষের মধ্যে সৃষ্টিকর্তার আরাধনা-বাংলাদেশের বাউল এবং লালন ফকির শাহ-নতুন গবেষনা সহ বর্ধিত সংস্করণ (২০১৭), আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি-নতুন নিবন্ধ সহ বর্ধিত সংস্করণ এবং বাংলাদেশের রকগাঁথা-হিস্টোরী অব বাংলাদেশ রক (২০২০) তাঁর উল্লেখ্য যোগ্য সাহিত্যকর্ম।