"নোবেল ভাষণ : লাগের্লোফ্ থেকে য়োসা" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ সাহিত্যিক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্বব্যাপী যত পুরস্কার বিভিন্ন দেশে চালু আছে তাদের ভিতরে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক সম্মানজনক হল নােবেল পুরস্কার। আলফ্রেড় বেহার্ড নােবেল (১৮৩৩-৯৬) এর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯০১ সাল থেকে সুইডেনের রাজধানী স্টকহােলম শহরের সুইডিশ একাডেমী এই পুরস্কার দিয়ে আসছেন। নােবেল-ভাষণ সিরিজের শুরু হয় ২০০৮ সালে 'বাক্ থেকে পামুক’ সংকলন প্রকাশের মধ্য দিয়ে। বর্তমান গ্রন্থ এ সিরিজেরই চতুর্থ প্রয়াস। তৃতীয় সংকলনের মতাে এ সংকলনেও আট সাহিত্যরথীকে আসন দেয়া হলাে। নােবেল ভাষণ : লাগের্লোফ থেকে মােসা (ইউরােপ মহাদেশের আট সাহিত্যরথী) গ্রন্থে আমরা অন্তর্ভূক্ত করেছি সেল্মা লাগের্লোফ (সুইডেন),সাভাতাের কোয়াসিমােদো (ইতালি), ইউজেনিও মােন্তালে (ইতালি), ওদিসিউস্ এলাইতি (গ্রিস), ইমরে কার্তেজ (হাঙ্গেরি), ডরিস্ লেসিং (ব্রিটেন), হার্টা মুলা (রুমানিয়া) এবং মারিও বার্গাস গােসা (পেরু)। নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে এঁরা প্রত্যেকেই বিশ্বসাহিত্যে স্বদেশের শিল্প-গরিমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, জগতের সারস্বত-সভার স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। নােবেল পুরস্কার গ্রহণ উপলক্ষ্যে প্রদত্ত তাঁদের ভাষণ তাঁদের সৃজনসত্তা, শিল্পদৃষ্টি ও বিশ্ববীক্ষার এক সারাৎসার। সে কারণেই সাহিত্যরসিকদের নিকট সে-সবের মূল্য অপরিসীম। গ্রন্থভূক্ত আটটি নােবেল-ভাষণ তর্জমা করেছেন পাঁচ অনুবাদব্রতী : সালেহা চৌধুরী, সােহরাব সুমন, সায়ীদ আবুবকর, মােজাফফর হােসেন ও আন্দালিব রাশদী। সম্পাদনা করেছেন হায়াৎ মামুদ। এ ক্ষেত্রে তাঁর সিদ্ধি তর্কাতীত।
হায়াৎ মামুদের জন্ম ব্রিটিশ ভারতে, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মৌড়া নামে আখ্যাত এক গ্রামে, ১৩৪৬ বঙ্গাব্দের ১৭ আষাঢ় (২রা জুলাই ১৯৩৯) তারিখে । ১৯৫০ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার অভিঘাতে মানসিকভাবে বিপর্যন্ত পিতার হাত ধরে চলে আসতে হয় ঢাকা শহরে । অদ্যাবধি সেখানেই বসবাস । স্কুল-কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেছেন এ শহরেই। পিএইচ. ডি. ডিগ্রি তুলনামূলক সাহিত্যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, প্ৰায় প্রৌঢ় বয়সে। রুশ ভাষা অল্পবিস্তর জানেন, অনুবাদের চাকরি করেছেন প্ৰগতি প্ৰকাশনে, মস্কোয়-সুদূর ও স্বপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়নে বসে । দেশের অভ্যন্তরে চাকরি সর্বদাই শিক্ষকতার-প্ৰথমে কলেজে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে । বর্তমানে অবসর-জীবন যাপন করছেন। বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন শিশুসাহিত্যে । দেশ-বিদেশের সারস্বত সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ আছে । সমালোচনা, ছাত্রপাঠ্য বই ইত্যাদি মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ষাটেরও বেশি।