"১১ বছরের নির্মম বন্দী জীবন" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ২০০২ সালের গােধরা ট্রেনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এবং তারপর সংঘটিত নির্বিচারে মুসলিম গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে গুজরাটের মুসলমানদেরকে দ্বিমুখী নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। একদিকে মুসলমানদের কচুকাটা করা হয়েছে। তাদের ধন-সম্পদ লুণ্ঠন করা হয়েছে। তাদেরকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। অন্যদিকে তাদেরকেই ওই অন্যায়ের আসামী বানিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানাে হয়েছে।... এই দ্বিতীয় জুলুমের নেতৃত্ব দিয়েছে আহমেদাবাদ ক্রাইম বেঞ্চ ... ১৯৯৭ সালে শিক্ষা সমাপন করার পর থেকে আমি নিজেকে জাতির সেবায় সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেছি। এই জনসেবাই ছিল আমার অপরাধ। এ কারণেই ১৭ আগস্ট ২০০৩ সালে একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে ক্রাইম বেঞ্চ প্রথমে আমাকে গুম করে। এরপর থেকে আমার ওপর শুরু হয় পাশবিক নির্যাতনের ভয়াবহ স্টিমরােলার। যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ বক্ষ্যমান গ্রন্থে উঠে এসেছে। এ বইটি শুধু আমার কাহিনি বা আমার-ই আত্মজীবনী নয়; এর প্রতিটি শব্দ ও প্রতিটি ঘটনা প্রত্যেক ওই নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের রক্তস্নাত জীবনীর প্রতিবিম্ব-যারা বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাগারের লৌহ কপাটের ওপাশে কেঁদে বেড়াচ্ছে। নিজের জুলুমের কাহিনি বর্ণনা করে জনগণের সহমর্মিতা হাসিল করতে আমি বইটি লিখিনি। পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আল্লাহর শপথ! কোনাে পুলিশের প্রতি আমার কোনাে ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই। এ কারণেই আমি বইটিতে যেভাবে কয়েকজন দুর্নীতিপরায়ণ পুলিশ অফিসারের নির্মম অত্যাচারের কথা বর্ণনা করেছি, তদ্রপ সাচ্চা পুলিশ সদস্যদের প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধার কথাও পেশ করেছি।... একজন মানুষও যদি আইনের অপপ্রয়ােগ ও আইন প্রয়ােগকারী সংস্থার কিছু সদস্যের জুলুমের হাত থেকে রক্ষা পান, তাহলে আমি আমার শ্রম স্বার্থক বলে মনে করব এবং এই বইটি যে আল্লাহর কাছে কবুল হয়েছে। তার আলামত হিসেবে ধরে নেব।
আবদুল্লাহ আল ফারুকঃ লেখক, অনুবাদক, মুহাদ্দিস, সম্পাদক। পিতা : মাওলানা দেলাওয়ার হুসাইন সাইফী। মাতা : মুসাম্মাৎ রেদওয়ানুল জান্নাত জন্ম : ২২ নভেম্বর ১৯৮৩ ঈ.। খিলগাঁও, ঢাকা। শিক্ষা : দাওরায়ে হাদিস, আরবি সাহিত্য ও ইফতা. দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারত। পেশা : লেখালেখি, শিক্ষকতা। লেখালেখি : লেখেন কবিতা, অনুবাদ ও কলাম। বই, দেয়ালিকা ও সাময়িকী সম্পাদনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। মুহাদ্দিস হিসেবে জামেয়া মাদানিয়া বারিধারা ও দারুল উলুম রামপুরায় কর্মরত ছিলেন। ছাত্রজীবনেই লেখালেখির সূচনা। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার স্মারকে। বিভিন্ন মাসিক পত্রিকা ও স্মরণিকায় প্রবন্ধ, কবিতা ও অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আরবি ও উরদু থেকে অনুবাদ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বােধ করেন। তার অনূদিত শিশুতােষ বইগুলােও বেশ জনপ্রিয়। সাইয়্যেদ মানাযির আহসান গিলানী, শায়খ হিফযুর রহমান সিওহারভী, মাওলানা ইদরিস কান্ধলভী, মুহাদ্দিস আবদুর রশীদ নু'মানী, শাইখুল হাদীস যাকারিয়া কান্ধলভী, সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী, মুফতী তাকী উসমানী, শায়খ যুলফিকার আহমদ নকশবন্দীসহ বরেণ্যদের বেশ কিছু বইয়ের সার্থক অনুবাদ করেছেন। আরবি থেকে অনূদিত বইয়ের সম্ভারও বেশ ঋদ্ধ। আবদুত তাওয়াব। ইউসুফ, সামাহ কামেল, সামীর হালবী, আহমদ তাম্মাম, সালামা মুহাম্মদসহ আরববিশ্বের বেশ ক’জন খ্যাতিমান লেখকের বইও অনুবাদ করেছেন। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ইতােমধ্যে ৪৪ পেরিয়েছে। আকাবিরের জীবন ও কর্মের ওপর কয়েকটি জীবনী ও স্মারকগ্রন্থ অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন।