"শিশু মনের বিকাশ ও বিকার" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ আজকের শিশুই আগামী দিনের সম্পদ। তাই আজকের শিশুকে যথাযথভাবে গড়ে তােলার ওপরই নির্ভর করছে আগামী দিনের ভবিষ্যত ও সুন্দর সমাজ চিত্র। বীজের মধ্যেই নিহিত রয়েছে মহীরুহের সম্ভাবনা। আমরা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী শিশুদের দেখি অথচ শিশুদের বুঝতে হলে, জানতে হলে শিশুর মতাে মন দরকার। শিশুমনের গতি-প্রকৃতির ওপর নজর দেওয়া, তাদের ঠিকভাবে জানতে চাওয়া, বুঝতে পারার - ওপর নির্ভর করছে শিশুটিকে গড়ে তােলার ব্যবস্থা কেমন হওয়া আবশ্যক। আমাদের সামাজিক লক্ষ্য অনুযায়ী শিশুকে গড়ে তুলতে হলে তাকে একান্তভাবে বােঝা দরকার। শিশুর ভাবনা-চিন্তা, তার আবেগ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, কল্পনা, পরিবেশের গতি-প্রকৃতি, দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রতিক্রিয়া আমাদের বুঝতে হবে। বর্তমান সময়ে মনােবিজ্ঞানের ক্রমােন্নতির ফলে শিশুদের ওপর অনেক গবেষণা হয়েছে। ফলে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের কেমন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা দরকার তাও মনােবিজ্ঞান আবিস্কার করতে সক্ষম হয়েছে। শিশুর জন্য ব্যবস্থা, শিশু পালন, মানসিক রােগ সম্বন্ধে ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সেজন্য আজকের শিশুকে কিভাবে প্রতিপালন করা দরকার সে সম্পর্কে নানা পদ্ধতিও আবিস্কৃত হয়েছে। এই বইটিতে শিশুর মনােজগত সম্পর্কে নানা ধারণা ও পদ্ধতির বিবরণ রয়েছে। যা একজন শিশুর শারীরীক ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ফলপ্রসূ সাফল্য এনে দেবে। শিশুর মনােজগত সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি। শিশু-মন হৃদয়ঙ্গমের ক্ষেত্রে আমাদের প্রথমেই একটা কথা বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার। কারণ শিশুরা বড়দের ক্ষুদ্র সংস্করণ নয় বরং একজন শিশু মনের দিক থেকে শিশুই। তাই শিশুদের বুঝতে শিশুর মতাে মন থাকা চাই। বড়দের মন-মানসিকতা দিয়ে শিশুদের বােঝা অসম্ভব। জন্মলগ্ন থেকেই শিশুমন নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে চলতে চলতে অসংখ্য প্রভাব সংগ্রহ করে নানাভাবে নিজেকে পরিপুষ্ট ও বিকশিত করতে থাকে। শিশুদের এই বেড়ে ওঠার বা বিকশিত হওয়ার সময়টায় আপনাকে বেশ সচেতন হয়ে তাদের প্রতি নজর রাখতে হবে। তাদের বয়ঃবৃদ্ধির সাথে সাথে এই বিকশিত মনই পরিণত মানুষের মনে পরিবর্তিত হয়। তাই পরিণত মানুষের মনের সূত্র দিয়ে শিশুমনের বিচার করতে গেলে হিসাবে গরমিল হবেই। ক্ষুদ্র চারা গাছের পরিচর্যা ও পরিণত বৃক্ষের পরিচর্যা এক নয়। এটা অবশ্যই প্রত্যেক অভিভাবকের মাথায় রাখতে হবে। শিশুর জীবন শুরু হয় গৃহে মা-বাবা ও অন্যান্য ঘনিষ্ঠ আপনজনদের নিয়ে। অর্থাৎ একটি শিশুর প্রাথমিক জীবনের পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেন এঁরা। ধীরে ধীরে এই পরিবেশের বিস্তৃতি ঘটে। বড় হয়ে ওঠার সাথে সাথে শিশুর জীবন বৃহত্তর সমাজ জীবনে পরিবর্তিত হয়। আপনার সন্তান যখন বেড়ে উঠছে তখন থেকেই আপনার একটা পরিকল্পনা ছক দরকার। আপনি সন্তানকে কিভাবে গড়ে তুলছেন তার ওপরই তার ভবিষ্যত নির্ভর করছে। কোন বাবা-মা-ই চান না যে তার সন্তানটি অথর্ব বা বােকা বলে পরিচিত হােক। তাই শুরু থেকেই প্রত্যেক অভিভাবকেরই শিশুর প্রতি মনােযােগী হওয়া আবশ্যক। মানব-শিশুর ক্রমবিকাশের সাথে তার মানসিক বিকাশ আরম্ভ হয়। মানব-শিশুর পক্ষে পরিণত ও স্বাবলম্বী হয়ে ওঠা দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ। অর্থাৎ মানব-শিশুর বড় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বহু বছর নির্ভর করে থাকতে হয় পিতা-মাতা বা অভিভাবকের ওপর। তাই বলা চলে মানুষের শৈশবকালটা বশে গুরুত্বপূর্ণ ও অপেক্ষাকৃত দীর্ঘস্থায়ী। ফলে মানব শিশুকে দীর্ঘদিন ধরে শৈশব ও কৈশাের জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। বিচরণ করে পরিণত জীবনে পৌছতে হয়। সেক্ষেত্রে একজন সচেতন ও দায়িত্বশীল অভিভাবকের নানা করণীয় থাকে তার সন্তানের প্রতি। আর সেসব করণীয় পদ্ধতি ও উপায় নিয়ে অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় রচিত এই বই। শ্রী অমরেন্দ্রনাথ বসু এই গ্রন্থে সেসব ব্যবহারিক পদ্ধতি ও উপায়ের চমকপ্রদ বর্ণনা ও পরামর্শ দিয়েছেন যা প্রত্যেক পিতা-মতা তথা অভিভাবকের একান্ত সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করবে। এই বইটিতে তিনি বাস্তবতার নিরিখে শিশু-জীবনের নানা দিক নিয়ে আলােচনা করেছেন। শিশুমনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, শিশুর মানসিক বিকাশের ধারা, তার মানসিক সমস্যাবলি ও তার প্রতিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও আলােচনা করেছেন। যা প্রত্যেক অভিভাবক তথা পিতা-মাতা এবং যারা বিভিন্ন কেন্দ্রে শিশুদের লালন-পালন ও শিক্ষাদান কর্মে নিয়ােজিত আছেন তাদের এ সম্বন্ধে জানা অত্যন্ত প্রয়ােজনীয়। শিশুমনের বিকাশ ও বিকারের ক্ষেত্রে সমস্ত সমস্যার সহজ সমাধান রয়েছে এই বইটিতে। তাছাড়া বাংলাভাষায় এরকম একটি গ্রন্থের বিশেষ প্রয়ােজন ছিল। তিনি সেই প্রয়ােজন মেটানাের তাগিদে বইটি রচনা করেছেন।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।