"গণিত অলিম্পিয়াড সিরিজ ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি জুনিয়র ক্যাটাগরি সংকলন -১" বইটির ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ বহুদিন ধরে একটি বিষয় লক্ষ করা যাচ্ছে যে বহু ছাত্র-ছাত্রী অঙ্ক জানা সত্ত্বেও প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষা বা অন্য পরীক্ষায় ভালাে ফলাফল করতে পারে না। এর মূল কারণ অল্প সময়ে সঠিক অঙ্ক করতে না পারা। বর্তমানে প্রায় সকল প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষাতেই নৈর্ব্যক্তিক বা Multiple Choice Question এর ওপর ভিত্তি করে প্রশ্ন আসে। সেক্ষেত্রে অল্প সময়ে বহু অঙ্কের উত্তর লিখতে হয়। এমনকি খসড়া (Raugh) করার সুযােগও কম থাকে। সুতরাং পরীক্ষায় ভালাে ফল করতে হলে অঙ্কের দ্রুত সমাধান পদ্ধতি জেনে নেওয়া একান্ত প্রয়ােজন। পরীক্ষায় অল্প সময়ের মধ্যে সঠিক অঙ্ক করতে হলে সরাসরি সূত্র প্রয়ােগের মাধ্যমে অঙ্কের দ্রুত সমাধান কৌশল রপ্ত করে নিতে হবে। আমার বিশ্বাস এই বইটি ছাত্রছাত্রীদের অঙ্ক শিখতে এবং পরীক্ষায় ভালাে ফল করতে বিশেষ সহায়ক হবে। বইটিতে সংখ্যাতত্ত্বের প্রাথমিক অথচ দরকারি কিছু বিষয় নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে। বইটি রচনা করা হয়েছে নিম্নমাধ্যমিক স্তর হতে সকল শ্রেণির পাঠক যাতে হৃদয়ঙ্গম করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে। বইটি পড়ে কেউ সংখ্যাতত্ত্ব শিখবে এমনটি নয়, তবে এটা বলতে পারি যে অন্তত কিছুক্ষণ গণিতের সাথে সময় কাটানাে যাবে এবং উপভােগ করা যাবে সংখ্যাতত্ত্বের অপার সৌন্দর্য। প্রাত্যহিক জীবনে সংখ্যাতত্ত্বের গুরুত্ব অনুধাবনের জন্যও বইটি সবাইকে প্রেরণা দেবে নিশ্চয়ই। গণিত আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়। গণিত ছাড়া কোনাে প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়া অসম্ভব। কিন্তু শুধু গণিত জানলেই হবে না, অল্প সময়ে কিভাবে গণিতের জটিল সূত্রাবলী সহজে সমাধান করা যায়, জানতে হবে সেই কৌশল। সেই লক্ষ্যেই এই বইয়ের। রচনা। যারা গণিত অলিম্পিয়ার্ড, বি.সি.এস, ব্যাংকে চাকুরি কিংবা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক। নিবন্ধন বা যে কোনাে ধরনের প্রতিযােগীতা মূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদের কথা মাথায় রেখেই এই বইটি তৈরি করা হয়েছে। আমাদের দেশে সহজে গণিত শেখা এবং অনুশীলনের জন্য যথােপযুক্ত বইয়ের বড়ই অভাব, এই অভাব পূরণ করবার লক্ষ্যে এই বইয়ের প্রকাশনা। বইটিতে পাটিগণিতের সহজ নিয়ম উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা এগুলাে চর্চা করলে অবশ্যই সাফল্য লাভ করতে পারবে।
১৯৮৭ সালের ১ জানুয়ারি রাজশাহীতে জন্ম বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ ও লেখক সৌমিত্র চক্রবর্তীর। কাঞ্চননগর মডেল হাই স্কুল থেকে প্রাইমারি এবং ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। বই পড়ার নেশা ছোটবেলা থেকেই, আর এ বিষয়ে সবসময়ই উৎসাহ দিয়ে গেছেন তার বাবা-মা। তবে ক্যাডেট কলেজে পড়াকালে কলেজের লাইব্রেরিতে থাকা অনেক বিরল বইয়ের খোঁজ পেয়েছিলেন। সেসব বইয়ের মাঝে তাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করতো গণিতের বই। ফলে গণিতের প্রতি আগ্রহটা তার সহজাত, কিন্তু এর পাশাপাশি তিনি জীববিজ্ঞানকেও আপন করে নিয়েছিলেন। অপরদিকে ঝিনাইদহ সরকারি স্বাস্থ্য সহকারী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ বাবা এবং ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার মায়ের অনুপ্রেরণাও তাকে প্রভাবিত করেছে। তাই চিকিৎসক হওয়ার আশায় তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। কিন্তু গণিত এবং জীববিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসা থেকে তিনি পাশাপাশি লেখালেখিও করছেন। সৌমিত্র চক্রবর্তীর বই লেখার ধাঁচ অনেকটা গবেষণাধর্মী, এছাড়াও বাংলায় সহজভাবে তিনি গণিত এবং বিজ্ঞানের গুরুগম্ভীর বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে থাকেন যাতে করে সাধারণ পাঠকের কাছে বিষয়গুলো সহজ হয়ে দাঁড়ায়। সৌমিত্র চক্রবর্তী এর বই সমূহ এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো ‘প্রাণের মাঝে গণিত বাজে’, ‘জীবনের গল্প’, ‘জীবনের গাণিতিক রহস্যঃ পপুলেশন জেনেটিক্স ও গেইম থিওরি’, ‘গণিতের সাথে বসবাস’, ‘খণ্ড ক্যানভাস’ ইত্যাদি। বই লেখার পাশাপাশি তিনি আরো কিছু কাজের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি একাধারে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর, বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী এবং ময়মনসিংহ প্যারালাল ম্যাথ স্কুলের উদ্যোক্তা। তাঁর সময় কাটে অবসরে বই পড়ে ও প্রোগ্রামিং চর্চা করে। ২০২১ সালে "করোনা বৃত্তান্ত" বইয়ের জন্য বাংলা একাডেমি কর্তৃক "হালীমা-শরফুদ্দীন বিজ্ঞান লেখক পুরস্কার" -এ ভূষিত হয়েছেন।