ঝমঝম বৃষ্টি হচ্ছে তো হচ্ছেই। টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টিতে পানির উচ্চতা এমন বার বেড়েছে, বসতবাড়ির ভিটা ছুঁইছুঁই করছে। বছরের এই সময়ে হাওরের এক একটি হাটিবাড়িকে দেখতে ছোট দ্বীপের মতো লাগে। নৌকা ছাড়া বাড়ি বের হওয়া যায় না। গৃহস্থ বাড়িতে কাজের চাপও কম থাকে। সাধারণ গৃহস্থের এক কামলা দিয়েই মৌসুম চলে। নাইওরি বৃষ্টি শুরু হলে টানা কয়দিন সুর্যের দেখা মেলে না। মানুষের সাথে সাথে পশুপাখিকেও অদ্ভুত এক বিষণ্ণতায় পেয়ে বসে। সকালে গোয়ালঘর থেকে গরুকে বের করে গোচালায় বেঁধে রাখা হয়। সেখানেই সন্ধ্যার আগ পর্যন ঘাস-খাওয়া, জাবরকাটা আর ঘুম। চড়ে বেড়ানোর অভ্যাস ত্যাগ করতে পশুরও কষ্ট হয়। প্রিয় গরুগুলোর ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে গৃহস্থের বুক মোচড় দিয়ে ওঠে। পরম মমতায় গৃহস্থের হাতের স্পর্শ, গরুগুলোও ঠিক টের পায়। ভালোবাসা এমন-ই এক জিনিস। গোয়ালঘরের পাশেই খড়ের লাছ। কামলা সকালে কচুরীপানা, শাকবন কেটে আনতে নৌকা নিয়ে যায়। সাথে জালও নিয়ে যায়। কয়েক খেউ দিয়ে মাছ ধরে আনে। বাড়ির মহিলারা হাতে হাত লাগিয়ে মাছ কেটে, খলুইয়ে মাছ নিয়ে ঘাটে যায়। বাঁশের ঘাটে বসে, ভালো করে মাছ আছড়ে, ধবধবে পরিস্কার করে নিয়ে আসে। হাটির সুবোধ ছেলেরা বাংলা ঘরে কেরাম খেলে।