"রোহিঙ্গাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির রূপরেখা" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ রােহিঙ্গাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির রূপরেখা বইটি আরাকানের রােহিঙ্গা জনগােষ্ঠীর জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়কে সর্বসমক্ষে উন্মােচিত করেছে। ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই কাজে উপমহাদেশের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও গবেষক অধ্যাপক ড. আবদুল করিম কেবল যে আরাকানে মুসলমানদের আগমন কিংবা তাদের ক্রমবৃদ্ধির পাশাপাশি এর সামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের তথ্যপূর্ণ বিবরণ দিয়েছেন তাই নয়; সেই বিষয় সম্পর্কেও বিশদ আলােকপাত করেছেন, যা পরবর্তী রােহিঙ্গা-ইতিহাসের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছে। বর্মি সামরিক জান্তা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে এসেছে যে, ঐতিহাসিকভাবে বার্মায় রােহাং বা রােহিঙ্গা বলতে কিছু নেই এবং রােহিঙ্গারা বার্মার নাগরিক নয়; আর এই ‘অপরাধেই তারা আজ ভূমিহীন, গৃহহীন ও নাগরিক অধিকার-বঞ্চিত। কিন্তু বর্তমান গ্রন্থের লেখক প্রকৃত সত্য উন্মােচন করে দেখিয়েছেন যে, আরাকানের প্রাচীন নাম রােহাং; এবং রােহিঙ্গাদের একটি দীর্ঘ ইতিহাস, একটি ভাষা, এক সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে, যা তাদের একান্ত নিজস্ব এবং তারা আরাকানের মাটিতে তা তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন তাদের হাজার বছরব্যাপী দীর্ঘ, ঐতিহাসিক বসতির মাধ্যমে; তাদের একাগ্র শ্রম, সাধনা ও অধ্যবসায় দ্বারা। এই বইটি স্বদেশহারা রােহিঙ্গাদের স্বদেশে স্বমর্যাদায় প্রত্যাবাসনের পক্ষে বলিষ্ঠ, তথ্যপূর্ণ এক ঐতিহাসিক প্রেরণা-শক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে বলে বিশ্বাস।