"যুক্তিবাদীর চোখে গীতা রামায়ণ মহাভারত ইত্যাদি" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ রামায়ণের লেখক কতজন? বাল্মিকী, কৃত্তিবাস, তুলসীদাস ইত্যাদির নাম উঠে আসে। আমি খোঁজ করতে গিয়ে শ'তিনেক রামায়ণের খবর পেয়েছি। বিভিন্ন প্রদেশে এবং দেশের বাইরে বহু দেশে রামায়ণ নানারূপে প্রচলিত আছে। এই গ্রন্থে সেসবই নির্মোহভাবে আলােচনায় এসেছি। এইসব গ্রন্থগুলাে থেকে পেয়েছি রাম ছিলেন নিজের হাতের চোদ্দো হাত লম্বা। আর বেঁচে ছিলেন দশ হাজার বছর। এবং শূর্পনখা ছিলেন ‘রাক্ষসী’ অর্থাৎ প্রাক আর্য যুগের রমণী। তখন প্রাক্ আর্যদের বলা হত রাক্ষস। শূর্পনখা ছিলেন দণ্ডকারণ্যের শাসিকা। মহাভারতের চরিত্রগুলাে নিয়েও আলােচনায় এসেছি। পঞ্চপাণ্ডবদের দুই মাতা কুন্তি এবং মাদ্রি ছিলেন বহুগামী। অবশ্য মহাভারতের পঞ্চপাণ্ডবরাও ছিলেন বহুগামী। পুরাণ রচিত হয়েছিল আড়াইশাে খ্রিস্টাব্দ। থেকে এক হাজার খিস্টাব্দের মধ্যে। গীতা, মহাভারত, পুরাণ, উপনিষদ ইত্যাদি বিভিন্ন গ্রন্থ রচনার সময় তখনকার সামাজিক পরিবেশ কী ছিল তা অবশ্যই লেখায় এনেছি। হিন্দু ধর্মে পূজনীয় দেব-দেবী এবং মহাতেজা মুনি-ঋষিদের যৌনজীবন নিয়ে আলােচনায় গিয়েছি তখন অজাচার, যৌন উছুঙ্খলতা ব্যাপক রূপ নিয়েছিল সমাজে। বাউলদের সাধনা হল গােপন তত্ত্ব। সেখানে যে কী বীভৎস যৌন আচরণ চলে, তা লিপিবদ্ধ করেছি।
প্রবীর ঘোষ ( Prabir Ghosh, জন্ম ১ মার্চ, ১৯৪৫) কলকাতাভিত্তিক ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির প্রধান এবং হিউম্যানিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি। একদা তিনি প্রচারমাধ্যমে ভারতীয় যুক্তিবাদী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উল্লেখিত হতেন। তিনি বেশকিছু জ্যোতিষবিদ ও অলৌকিক শক্তি অধিকারী বলে দাবি কৃত ব্যক্তিদের প্রচারণার অসারতা প্রমাণ করেছেন। যার মধ্যকার কয়েকটি ঘটনা নিয়ে চ্যানেল ফোর 'Guru Busters' নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছে। তিনি যুক্তিবাদ প্রসার সহায়ক ও অলৌকিকতা বিরোধী একাধিক গ্রন্থের লেখক। তার উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে আছে: অলৌকিক নয় লৌকিক( ৫ খন্ডে সমাপ্ত),জ্যোতিষীর কফিনে শেষ পেরেক,সংস্কৃতিঃ সংঘর্ষ ও বিনির্মাণ,আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না,পিংকি ও অলৌকিক বাবা,অলৌকিক রহস্য জালে পিংকি,ধর্ম-সেবা-সম্মোহন,গোলটেবিলে সাফ জবাব ইত্যাদি।