ভূমিকা বিশ্ববিখ্যাত থ্রিলার লেখক সিডনি শেলডনের এই কাহিনিটি রূপান্তর করেছেন সুলেখক অনীশ দাশ অপু । বইটির কাহিনি গড়ে উঠেছে হলিউডের মায়াবি জগৎকে কেন্দ্র করে। এই জগতকে খ্যাতি অর্জন করতে গিয়ে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, এই বইটি যেন এরই বাস্তাব প্রমাণ। কাহিনি বিন্যাসে ও চরিত্র চিত্রণে শেলডন বরাবরের মত এই বইয়েতেও তার মুন্সিয়ানার ছাপ অটুট রেখেছেন।এবার বইটির সামান্য অংশ এখানে তুলে দিচ্ছি: অন্ধকার কেবিনে একটি চেয়পারে জবুথুবু হয়ে বসে আছে জিল। তাকিয়ে আছে শূণ্যে। শোকে কাতর সে।তবে এ শেঅক ডেভিড কেনিয়ন, টবি টেম্পল কিংবা নিজের জন্য নয়।শোক করছে সে জোসেফিন যিনস্কি নামের ছোট্র একটি মেয়ের জন্য। ছোট মেয়েটির জন্য অনেককিছু করতে চেয়েছিল জিল, কিন্তু সে ওর জন্য যে চমৎকার জাদুর স্বপ্নগুলো তৈরি করেছিল তা এখন সব শেষ হয়ে গেছে। ব্যাখ্যাতীত এক পরাজয়ের বেদনা নিয়ে ওখানে বসে রইল জিল। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেও দুনিয়ার অধিশ্বারী ছিল সে, যা চেয়েছিল সব পেয়েছে , আর এখন তার কাছে কিছুই নেই। ধীরে ধীরে বুঝতে পারল জিল, আবার ফিরে এসেছে সেই মাথাব্যথাটা। অন্য সব যন্ত্রণা আর বেদনার প্রাবল্যে এ ব্যথাটা এতক্ষণ অনুভূত হয়নি। এখন টের পাচ্ছে , প্রবল ব্যথায় ছিঁড়ে যাচ্ছে মাথা। এমন সময় বিষয়টি টের পেল সে। বিকট একটা গন্ধযুক্ত ঢেউ এগিয়ে আসছে ওর দিকে..। বইটির কাহিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। সিডনি শেলডনের এই কাহিনিটি বাংলায় রূপান্তেরের ফলে এদেশের থ্রিলার কাহিনির পাঠকেরা পড়ার পসুযোগ পেল। উত্তম সেনের প্রচ্ছদ বইতে ভিন্নমাত্রা যুক্ত করেছে।
পাঠকনন্দিত অনুবাদক অনীশ দাস অপু ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত লক্ষ্মী কান্ত দাস। ১৯৯৫ সালে এই কৃতি লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর পাস করেন। ছাত্রাবস্থায়ই তিনি দেশের জনপ্রিয় ও শীর্ষস্থানীয় সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকাগুলোতে অনুবাদক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন, এবং ফিচার, গল্প ও উপন্যাস অনুবাদ করতে থাকেন। অনীশ দাস অপু এর বইগুলো সাধারণত থ্রিলার ও হরর ধাঁচেরই হয়ে থাকে। তবে ক্লাসিক ও সায়েন্স ফিকশনেও অনুবাদেও পিছিয়ে নেই তিনি। অনীশ দাস অপু এর বই সমূহ এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ, আ স্ট্রেঞ্জার ইন দ্য মিরর (সিডনি শেলডন), দ্য স্কাই ইজ ফলিং (সিডনি শেলডন), সিলেক্টেড মিস্ট্রি স্টোরিজ (আলফ্রেড হিচকক), শ্যাডো অফ দ্য ওয়্যারউলফ (গাই এন স্মিথ), ইলেভেন মিনিটস (পাওলো কোয়েলহো), প্রেত, শাঁখিনী, কিংবদন্তীর প্রেত, আয়নাপিশাচ, পিশাচবাড়ি ইত্যাদি। এ পর্যন্ত তাঁর অনূদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় চার শতাধিক। অনীশ দাস অপু এর বই সমগ্র বাংলাদেশের থ্রিলার ও হরর পাঠকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বাংলাদেশে পাশ্চাত্য ধারার হরর গল্প ও উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রে তিনি যোগ করেছেন এক নতুন মাত্রা, পেয়েছেন তুমুল পাঠকপ্রিয়তা। নিজের মূল পেশা হিসেবে লেখালেখি বেছে নিলেও অনীশ দাস অপু যুক্ত আছেন সাংবাদিকতার সাথেও। ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার সিনিয়র সাব-এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন এই কৃতি অনুবাদক ও লেখক।