"পথে হলো দেখা" ফ্ল্যাপের লেখা: “পথে হলাে দেখা” আমার লেখা দ্বিতীয় উপন্যাস। আমি কবি, সাহিত্যিক, উপন্যাসিক, লেখক কোনটায় নই । আমি এক ক্ষুদ্র লেখিয়ে । মনের কথাগুলােকে এক এক করে শিউলি ফুলের ন্যায় সাজিয়ে রাখি, একে যদি আমাকে আপনারা লেখক ভাবেন, সে হবে আমার সবচেয়ে বড় লজ্জা। আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে যা কিছু অসংগত মনে করি, তার প্রতিবাদ আমি মুখে না করলেও, লেখালেখির মাধ্যমে প্রকাশ করি । এটি আমার স্বভাব সম্ভবত। এই উপন্যাসে প্রতিবাদের ভাষা না থাকলেও আছে এক জীবনের উত্থান পতনের ভাষা। আছে জীবন থেকে নেয়া অসম, অসংগতি, সামাজিক পারিপার্শ্বিকতা। ‘পথে হলাে দেখা’ উপন্যাসটিতে শুধুমাত্র পায়ে হাঁটা পথের গল্প লেখা নয়, এখানে আছে জীবন পথের গল্প । কাজী রাসেল, রাধা, সিমা, আবার শুভ, মেহরীমা, আশিক, ডাঃ অভিক। এই মানুষগুলাের জীবনের কথা লিপিবদ্ধ করেছি এক এক করে। পাশাপাশি আছে সমাজের দৈনতা। প্রেম, বিরহের যে সামাজিক অস্থিরতা তারই এক জীবন্ত পদ্ম ফুটিয়ে তুলেছি। এই উপন্যাসে একটি উক্তি আছে, সেটা হচ্ছে.... ‘অসম প্রেম যতটা হয় মধুর ঠিক ততােটায়... অসম বিয়ে হয় বেদনা বিধুর।’ এখানে ‘মেহরীমা’ তার এক জীবনের গল্প ‘শুভ’ কে শােনাচ্ছে ট্রেন জার্নিতে পাশাপাশি বসে। আশা করি মানুষের জীবন থেকে নেয়া এই কথা-বাগানে হেঁটে, কেউ হাঁপিয়ে উঠবেন না। আমি পাঠকের ভালােবাসা ইতিমধ্যে পেয়েছি, আমরণ পেতে চাই । এটুকু থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন না। আমার লেখা প্রকাশিত আরাে চৌদ্দটি কাব্যগ্রন্থ, একটি ছােট গল্প, একটি অনুকাব্য, ও একটি উপন্যাস আছে। তখনাে আপনাদের কে পাশে পেয়েছি, এবারও আমার পথে হলাে দেখা উপন্যাসটির সাথে থাকবেন, এই আশা করতেই পারি।
বাউল সম্রাট লালন শাহ্, কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাঙাল হরিনাথ, নীল বিদ্রোহের নেত্রী প্যারী সুন্দরী এর কুষ্টিয়া জেলার দহকুলা গ্রামের আস্তানা বাড়ির এক রক্ষণশীল পরিবারে ১৯৭৫ সালের ২ ডিসেম্বর ফাতেমা হক মুক্তা’র জন্ম। বাবা- খন্দকার সিরাজুল হক, মা- সৈয়দা কোহিনূর বেগম। ৯ ভাই-বোন মধ্যে সবার ছোট ফাতেমা হক মুক্তা। খুব ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার শুরু বড় বোনের বাসায় থেকে ‘কুষ্টিয়া কলকাকলি স্কুলে’। এরপর ‘দহকুলা প্রাইমারী’ ও ‘দহকুলা মহম্মদ শাহী উচ্চ বিদ্যালয়’ থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকার ‘মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজে’ লেখাপড়া করেন। ফাতেমা হক মুক্তা ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির পাশাপাশি নিজের পোশাক নিজেই ডিজাইন করতেন। সেই সূত্রেই তার ফ্যাশন ডিজাইনিং এ আসা। দীর্ঘদিন ধরে ‘লালন কন্যা ঘরের পোশাক’ নামে হোমবুটিক নিয়েই আছেন। তেমনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছেন লেখালেখি নিয়ে। কাব্য, অনুকাব্য, ছোট গল্প, উপন্যাস সব ক্ষেত্রেই তার সমান বিচরণ। প্রকাশিত সতেরোটি বইয়ের মধ্যে ফাতেমা হক মুক্তা’র প্রথম উপন্যাস ‘উজান গাঙের নাইয়া’ বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত প্রতিটি জেলার গণগ্রন্থাগারে ২০১৬ সালে ঠাঁই পেয়েছে। ফাতেমা হক মুক্তা বাংলাদেশ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি ভালোবাসেন বাংলাদেশকে, খুব ভালোবাসেন নিজের জন্মভূমি কুষ্টিয়াকে। রাজধানীতে বসবাস করলেও ছুটে যান ক্ষণে ক্ষণে মা-মাটির কাছে। নিজ এলাকার গরীব, দুঃখী সবার বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ান, গ্রামের সব ধর্মের মানুষের সাথে তার সু-সম্পর্ক রয়েছে। ভীষণ মানুষ প্রিয় কবি ফাতেমা হক মুক্তা।