"নির্বাচিত কবিতা" ফ্ল্যাপে লেখা কথা: “শামস আল মমীনের ‘লি শেন’ কবিতাটি পড়ে কেন যেন আমি অস্থির হয়ে উঠেছিলাম, আমার মনে হয়েছিল ছুটে যাই লি শেনের কাছে যে একা, বিচ্ছিন্ন বাবা বা মায়ের কাঙাল, যার অন্তরের কান্না প্রতিমুহূর্তে বড় হচ্ছে, বিশাল হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে ইরাকে, লিবিয়ায়, সিরিয়ায়, আফ্রিকায়, পৃথিবীর দেশে দেশে”- বলেছেন কবি মতিন বৈরাগী। মমীনের কবিতা সহজেই ছুঁয়ে যায় মানুষ, প্রকৃতি ও নিসর্গ। তাই তিনি অনায়াসে বলতে পারেন: ‘তােমাদের জন্য রেখে যাব ভরা নদী, খালবিল নদী ও হাওরের কিলবিল মাছ রেখে যাব শস্যক্ষেত ধনেপাতার নরম গন্ধ’ তাঁর কবিতা প্রসঙ্গে সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, ‘সকল বিশ্লেষণ স্থগিত রেখে তাকে শুদ্ধ কবি বলাই আমি সঙ্গত মনে করি। মাত্র গােটা ছয় কবিতার বই লিখিয়াছেন মমীন। তাহাতেই তাহাঁর স্বরলিপি শিলালিপি হইয়া উঠিয়াছে। মমীনের কবিতায় বাংলাদেশের নতুন কথা আছে। আর আছে উত্তর আমেরিকার পুরানা ছবিও। এই অভিজ্ঞতার কিয়দংশ তিনি বাংলা কবিতায় যােগ করিতেছেন। ইহাতে বাংলা কবিতায় একপ্রকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কায়েম করিয়াছেন তিনি। ‘নির্বাচিত কবিতা’ তারই সত্য উদাহরণ।
শামস আল মমীনের জন্ম ১৯৫৭ সালের ২৬শে ডিসেম্বর রংপুরের বদরগঞ্জে । তাঁর প্রাথমিক বিদ্যাপাঠ স্থানীয় স্কুল ও কলেজে । ১৯৮২ সালে যান আমেরিকা। সেখানে তিনি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য এবং শিক্ষাশাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষালাভ করেন। ১৯৮৯ সন থেকে তিনি নগর নিউ ইয়র্কের শিক্ষা বিভাগে ইংরেজির শিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন । ১৯৯০ দশকের শেষে মমীন সাহিত্য পত্রিকা ‘আকার ইকার’ সম্পাদনা করেন। তারও আগে ১৯৮৫ সালের ১০ই জানুয়ারি নাগাদ আমেরিকা থেকে বাংলা ভাষার প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা সাপ্তাহিক দিগন্ত’ প্রকাশ শুরু করেছিলেন। শামস আল মমীন ছিলেন তার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।