মলিন মুখে নবাব স্যারের সামনে এসে দাঁড়ায় লেবু। বেচারার মন এমনিতেই খারাপ। কুকুর পাগল হয়েছে। এখন তার চাকরি থাকে কি থাকে না সে আছে সেই চিন্তায়। নবাব স্যার এমনভাবে লেবুর দিকে তাকালেন যেন তিনি লেবুকে চেনন-ই না। কি নাম? স্যার, লেবু। লেবু! আগে পিছে কিছু নাই? কাগজি, বাতাবি, চাইনিজ, বোম্বাই? জ্বি না স্যার। এইটা কেমন কথা? নামের আগে বংশ পরিচয় থাকবে না? তোমার তো নামেই গন্ডগোল। চরিত্রে দোষ। নবাব স্যার পাশে বসা লাবুর দিকে তাকান। লাবু, নোট ইট। বিসমিল্লাহতে গলদ। লেবু কাচুমাচু হয়ে বললো, স্যার, আমার নাম তো আপনি আগেও বহুতবার হুনছেন। আগের কথা একদম ভুলে যাও। আগে তোমার নাম আতা থাকলে কি আর আতাহার থাকলে কি। আগে তো ধরাধরির বিষয় ছিলনা। কুকুর ছিল শান্ত, সুবোধ। এখন কুকুর পাগল হয়েছে তাই ধরাধরি শুরু হয়েছে। তুমি ধরা পড়ছো সবার আগে। কারণ তুমি হইলা কুকুরের কেয়ারটেকার। ডগ ফাদার। লেবু এবার সোজা নবাব স্যারের পা ধরে ফেলে। আল্লাহর কসম স্যার, আমি কিছু জানি না। আঁতকা দেখি কুকুর পাগলা। আল্লায় আমারে নিজ হাতে বাঁচাইছে বইল্যা কামড় খাই নাই স্যার। লেবুর কথা শুনে নবাব স্যার টেবিলে থাকা পেপার ওয়েট ঘোরান। তুমি যে বেঁচে গেছো সেটা নিশ্চিত হলে কিভাবে? আল্লাহর খেলা এত অল্পতেই বুইঝা ফেললা? তিনি হাকিম হইয়া হুকুম করেন, পুলিশ হইয়া ধরেন। সর্প হইয়া দংশন করেন, ওঝা হইয়া ঝারেন। সকল কাজেই আল্লাহ আছেন। এই যে তোমাকে ডাকা হয়েছে সেখানেও তিনি আছেন। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কে বাঁচলো আর কে ধরা খেলো সেটা সময় হলেই বোঝা যাবে।
পলাশ মাহবুব আমাদের লেখালেখি জগতের একটি অতি পরিচিত নাম। লিখছেন প্রায় দুই দশক ধরে। শুরুতে ছড়া লিখেছেন দাপটের সঙ্গে। এরপর গল্প, ছোট-বড় সবার জন্য। উপন্যাস লেখার শুরু তার কিছু পর থেকে। ‘টো টো কোম্পানি’ তার জনপ্রিয় কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সিরিজ। ইতিমধ্যে এই সিরিজের সাতটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে শুরু করেছেন আরেকটি কিশোর সিরিজ ‘লজিক লাবু’। টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। বর্তমানে দেশের জনপ্রিয় নাট্যকারদের মধ্যে তিনি একজন। রম্য লেখায় পলাশ মাহবুবের আছে নিজস্ব কথন ভঙ্গি। সাবলিল ভাষা আর বক্তব্যের তীব্রতা তার লেখার সৌন্দর্য। অনুষ্ঠান নির্মাতা হিসেবেও পলাশ মাহবুব একটি অগ্রগণ্য নাম। টেলিভিশনের জন্য ইতিমধ্যে দুই হাজারেরও বেশি অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। লেখালেখির জন্য পেয়েছেন অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬, পশ্চিমবঙ্গের অন্নদাশঙ্কর রায় সাহিত্য পুরস্কার, মীনা অ্যাওয়ার্ড, এসিআই-আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ আরও কিছু পুরস্কার। নির্মাতা হিসেবে পেয়েছেন নাট্যসভা পদক। পলাশ মাহবুব পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। সেখান থেকে পেশা হিসেবে কিছুকাল সাংবাদিকতা করেছেন সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে। তারপর বেশ একটা লম্বা সময় কাজ করেছেন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগে। বর্তমানে তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেট ও দৈনিক সারাবাংলা’র উপ সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।