ভারত উপমহাদেশে পাকিস্তান ও নেপাল সাংবিধানিকভাবে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র। অপরদিকে বাংলাদেশ ও ভারত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। যদিও বাস্তবতায় ভারতের চিত্র ভিন্ন রূপ। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু অসাম্প্রদায়িক এবং এ দেশের পরিবেশ, কৃষ্টি, সংস্কৃতি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৬৪-৬৫ সালে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে একবারই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল যা বাঙালি মুসলিম দ্বারা সংঘটিত হয়নি, তবে এর মুখ্য ভূমিকা পালন করে আদমজী, বাওয়ানী, করিম প্রভৃতি জুট মিলসহ বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরিতে কর্মরত পশ্চিম পাকিস্তানি উর্দুভাষী বিহারি পাটকল শ্রমিকরা। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ছাড়া পূর্বপাকিস্তানের বাঙালি মুসলমানরা তখন হিন্দুদের নিরাপত্তা দিয়েছে, এমনকি কোনো কোনো এলাকায় হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য মসজিদ খুলে দেয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে পার্শ্ববর্তী ভারত সাম্প্রদায়িকতার একটি ইউনিক রাষ্ট্র। সেখানে বার্মার মতো রাষ্ট্রীয় মদদে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়, যার শিকার ভারতের মুসলিমরা। ২৬ নভেম্বর ১৯৪৯ ভারতীয় পার্লামেন্ট The Constitution of India, 1950 অনুমোদন করে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতের সংবিধান ১০৩ বার সংশোধন হয়েছে। ভারত একটি Union of States ভিত্তিক রাষ্ট্র। তাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ভারত একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথমাংশে ‘প্রস্তাবনা’ উল্লেখ রয়েছে : ‘আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যেসব মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেসব আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে’