“ভালোবেসো তুমিও" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে যূথী বলল, ‘আমি অবন্তী অন্তরা যূথী, আপনার কোনাে সমস্যা না-হলে ভেতরে আসতে পারি? কম্পিউটার থেকে যূথীর দিকে তাকাল রাফি, 'আমি জানতাম আপনার সঙ্গে আমার আবার দেখা হবে। ‘আপনি জানতেন? যূথী রুমের ভেতরে ঢুকে বলল, কীভাবে?' ‘কারণ আপনার সঙ্গে আমার গল্প তাে এখনাে শেষ হয়নি।' হ্যা, আমাদের গল্প এখনাে শেষ হয়নি। চেয়ারে বসে যূথী বলল, তবে আপনার গল্পটা সম্ভবত অন্যরকম, যা আপনি কাউকে জানাতে চান না। সব মানুষের মতাে সব শেষে দন্ত্যন দেখে সে আসলে একা, একাই। সেখানে অর্পা নেই, চৈতী নেই, কবিতাও নেই । জ্যোৎস্নার আলােয় চকচক করা এক নদীর ধারে বসে সে জানতে চায় জীবনের মানে, জ্যোৎস্না মেশানাে নদীর জ্যোত্সাজলে ডুব দিয়ে খুঁজতে যায় জীবনের ছন্দ। হায়! তুচ্ছ এক জীবনের জন্য মানুষের এত আয়ােজন! সকালে ঘুম থেকে উঠে মাসুকের প্রথম কাজ হচ্ছে একটা লিস্ট করা। প্রতিবারের মতাে প্রথমেই সে তার শাশুড়ির কথা লেখে-মাথায় কদুর তেল মালিশ করতে হবে তাকে। আরাে অনেক কাজ থাকে তার । যখন-তখন টিভি দেখা যাবে , চায়ে চিনি আর দুধ কম খেতে হবে, খাওয়ার সময় শব্দ করা যাবে না—আরাে কত কী! সব রকমের কাজ করতে হয় তাকে। কারণ সে একজন ঘরজামাই! মােবাইল বেজে ওঠে অন্তীর। কিছুটা আলসেমি নিয়ে হাতে নেয় সেটটা । রাহাদ ফোন করেছে । দ্রুত সােজা হয়ে বসে সে। রিসিভ করে কিছু বলার আগেই রাহাদ বলল, তুমি কি আজ পুবের আকাশটা দেখেছ? না তাে।' একটু দেখবে। ‘জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়াল অন্তী । বিল্ডিং বেয়ে ওঠা মাধবীলতার ফাঁক গলে আকাশের দিকে তাকাল ও । চাদ উঠেছে, অর্ধ চাঁদ।
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।