লেখার কাজটি শুরু হয়েছিল কবিতা-গল্প আর নিবন্ধ দিয়ে, সেই স্কুল-কলেজে পড়ার সময়ে। পারিপার্শ্বিক আর পারিবারিক কারণে সেসব থেমে থাকলেও তা রূপ নেয় নানান ধরণের পেশাগত লেখায়। বন্ধু-বান্ধব এবং শুভানুধ্যায়ীরা বারবার চেয়েছেন, আমি আবারাে লিখি। অন্যদিকে কলিগ আর আমার সহযােগীরাও চেয়েছেন, আমি লিখি। তবে মানতেই হবে যে এই দু'য়ের চাওয়া এক নয়। কিন্তু আমি তাে এক এর মধ্যে সময়ের হিসেবে পেরিয়ে এসেছি সাড়ে ছয় দশক। জীবনজীবিকার এই পরিক্রমায় আমার অর্জন খুব একটা কম নয়। তার জন্যে সারা জীবনে যাদের সংস্পর্শে এসেছি, তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তাদের অনুযােগ-অনুরােধ রাখতেই আমার এই বিনীত প্রয়াস। এই দীর্ঘ সময়, ভালাে মন্দ, অনেক কিছুই দিয়েছে আমাকে শিখিয়েছে তারও বেশী, আবার ভাবিয়েছেও। তার কিছু আমার কাজের মাধ্যমে প্রশিক্ষক-সঞ্চালক হিসেবে ছড়িয়েছি যেমন, কাজে লাগিয়েছি কর্মসূচিতে আবার কিছু রেখেছি সঞ্চয় হিসেবেও। এর বেশিরভাগ রূপ নিয়েছে বুদবুদের, যা উন্মুখ হয়ে ছিল মুক্তির অপেক্ষায়, শূণ্যে ভেসে আরাে মানুষের চিন্তায়চেতনায়, বােধে-আচরণে দ্যোতনা তােলার আশায়। সময় বা জীবন ধারাবাহিক হলেও এই লেখাগুলাে ধারাবাহিক নয়। এগুলাে যত না চোখ দিয়ে দেখা তার চেয়ে অনেক বেশি মন দিয়ে আবেগ-অনুভূতি সিক্ত, চিন্তা-চেতনা প্রসূত এবং স্মৃতি-নির্ভর। এখানে সবসময় তত্ত্ব না থাকলেও তথ্য আছে, তাতে ভ্রান্তি কিছু থাকলেও, মিথ্যে নেই। পড়তে গেলে কখনও মনে হবে এগুলাে বুঝি প্রশিক্ষক বা ব্যবস্থাপকদের জন্যে, আবার কখনাে তা যেন উন্নয়ন কর্মী বা পেশাজীবিদের জন্যে। তার পরেও এগুলাে সবার জন্যে- কারণ, আমাদের প্রত্যেককেই পারিবারিক, সামাজিক এবং পেশাগত জীবনে এই ভূমিকাগুলাে নিতেই হয়। তাছাড়া, নতুন বা ভিন্ন কিছু জানা বা দেখা দোষের তাে নয়। আমি মানি যে জ্ঞান-ই হলাে বন্দিত্ব আর বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তির শ্রেষ্ঠ উপায়।