“শাকসবজির রোগ " বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বাংলাদেশে প্রায় ১৫৬ রকম শাকসবজি জন্মে। তবে সব শাকসবজি চাষ করা হয় না। কিছু শাকসবজি অপ্রচলিত, আপনা আপনি জন্মে। বাণিজ্যিকভাবে এ দেশে প্রায় ৩০ রকমের। শাকসবজি চাষ করা হয়। এসব শাকসবজির মধ্যে গ্রীষ্মবর্ষাকালে কুমড়া গােত্রীয় সবজি ও শীতকালে কপি গােত্রীয়। সবজি অন্যতম। সারা বছর সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয় বেগুন। এ দেশে প্রায় সারা বছরই কোনাে না কোনাে শাকসবজি উৎপাদিত হয় । কিন্তু শাকসবজি উৎপাদনে রােগ একটি অন্যতম। প্রধান বাধা। শুধু রােগের কারণে প্রতি বছর উৎপাদিত শাকসবজির প্রায় ১০-১৫ শতাংশ ফলন নষ্ট হয়। এতে সবজি চাষিদের বেশ ক্ষতি হয়। সেজন্য লাভজনকভাবে শাকসবজি উৎপাদন করতে গেলে শাকসবজির রােগ নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটা করতে হলে সবজি চাষিদের প্রথমে রােগ। চিনতে হবে, রােগের কারণ ও জানতে হবে। কেননা, ছত্রাকনাশক দিয়ে কখনাে ভাইরাসজনিত বা ব্যাকটেরিয়াজনিত রােগ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সচরাচর চাষিরা বিভিন্ন রােগনাশক ব্যবহার করে শাকসবজির রােগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। সব ধরনের রােগ এক ওষুধে সারে না। এ দেশে বহু রকমের ছত্রাকনাশক বাজারে পাওয়া যায় । ছত্রাকনাশক দিয়ে হয়তাে ছত্রাকজনিত রােগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় । কিন্তু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দ্বারা কোনাে রােগ হলে তা ছত্রাকনাশক দিয়ে সারানাে যায় না। এসব রাসায়নিক রােগনাশক ব্যবহারে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। শাকসবজির রােগ নিয়ন্ত্রণে সাফল্য পেতে চাইলে রােগ চেনার পাশাপাশি রােগ নির্ণয় বা ডায়াগােনস্টিক কৌশলও জানা দরকার। এর সাথে দরকার সমন্বিত রােগ ব্যবস্থাপনার ধারণা ও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গ্রহণ করে যথাসময়ে তা প্রয়ােগ করা। সেজন্য তথ্য চাই, রােগ চেনার ছবি চাই ।। কৃষিবিদ মৃত্যুঞ্জয় রায় শাকসবজি চাষিদের এসব সমস্যার কথা মাথায় রেখে লিখেছেন শাকসবজির রােগ বইটি। শাকসবজির রােগ সম্পর্কে তার দীর্ঘ দু'দশকেরও বেশি সময়ের বাস্তব। অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ বইটিতে তিনি বেগুন, টমেটো, আলু, কুমড়াগােত্রীয় সবজি, শিম, বরবটি, তেঁড়শ, কপি, মিষ্টি আলু, মেটে আলু, কচু, গাজর, ডাটা, লালশাক, লেটুস, পুঁইশাক, গিমাকলমি, শালগম, সজিনা প্রভুতি শাকসবজির রােগের কারণ, লক্ষণ ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আলােচনা করা হয়েছে । সাথে রয়েছে রােগ চেনার জন্য কিছু রঙিন ছবি। আশা করি বইটি শাকসবজি চাষিদের ভালাে সবজি উৎপাদনে সহায়ক হবে।
কৃষিবিদ মৃত্যুঞ্জয় রায় প্রায় তিন দশক ধরে বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় লিখছেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে এম.এসসি.এজি (উদ্যানতত্ত্ব) ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগতভাবে তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে। সর্বশেষ অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রয়েছে কৃষিক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সুদীর্ঘ বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ফসল উৎপাদনের বিশেষ পারদর্শীতা, শিক্ষকতা ও প্রশিক্ষণের দক্ষতা। এর ওপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন ‘বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল’ বইটি।। কৃষি বিষয়ে তিনি ইতােমধ্যে অনেকগুলাে বই লিখেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ৮৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে ৬২টি বই কৃষি বিষয়ক। কৃষি বিষয়ক লেখালেখির জন্য তিনি ২০১২ সালে পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে পেয়েছেন বাংলাদেশ একাডেমী অব এগ্রিকালচার স্বর্ণপদক।