বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষকঃ শিক্ষাঙ্গণের কতিপয় কীটদের মুখোশ উন্মোচনকারী বই ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষক’। লিখেছেন সাংবাদিক আমিরুল মোমেনীন মানিক। দেশের শীর্ষস্থানীয় এক বিজনেসম্যান একদিন আমিরুল মোমেনীন মানিককে ডাকলেন। বললেন, মানিক আপনার সব সৃজনশীল কাজে আমি বিনিয়োগ করতে চাই। মানিক খানিকটা আপ্লুত হলেন। তাহলে খুবই ভালো হয়। এর ফলে তার কাজের প্রসার হবে।কিন্তু বর্তমান বাজারে যে ধরনের গান ও গদ্য বেশি পপুলার হয়, সে ধরনের কাজ আপনাকে করতে হবে। -সেটা কেমন? চরম রোমান্টিক কিছু গান করুন, স্বল্পবসনা মডেল রাখুন, কিছু মারমারকাট সাহিত্য লিখুন যেখানে সেক্স, ভায়োলেন্স, তোষামোদি ভরপুর থাকবে। মানিকের চোখে-মুখে খানিকটা বিস্ময়! -তাহলে কী হবে? না, আমি ইনভেস্ট করবো। মিনিমাম ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগকরতে চাই। লাভ করার দায়িত্ব আমার। আপনি করুন। এবার মানিক খানিকক্ষণ হাসলেন। উচ্চস্বরে। এরপর কর্কশ কণ্ঠে কি যেনো বললেন! আপনি রাস্তা মাপুন। অন্য কাউকে দেখুন। চটাং চটাং করে বিজনেস ম্যাগনেটের খাসকামরা থেকে বেরিয়ে গেলেন তিনি। বিজনেসম্যানও ক্ষেপে উঠলেন। ছেলেটা কতো বেয়াদব! কি বাবুল, ওর এতো অহংকার কিসের? ও কি মেগাস্টার? এবার মুখ খুললেন বিত্তশালীর পিএস। স্যার, একটা কথা বলি। তোমার আবার কী কথা? স্যার আমি লোকটার ব্যতিক্রমী চিন্তার ভক্ত।
কোনো রকম রাজনৈতিক ও গোষ্ঠীগত অারোপিত পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই, শুধুমাত্র নিরন্তর পরিশ্রমের কারণে স্বার্থান্ধ রাজধানীতে টিকে গেছেন অামিরুল মোমেনীন মানিক ৷ তাঁর কোনো পলিটিক্যাল উইশ নেই ৷ অাছে সোশাল কমিটমেন্ট ৷ মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা-সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের অাদর্শকে তিনি সবসময় সামনে রাখেন ৷ মানিক, সাংবাদিকতা-সঙ্গীত-সাহিত্যের মধ্য দিয়ে মূল্যবোধসম্পন্ন ও যুক্তিনির্ভর মানব সমাজের স্বপ্ন দেখেন ৷ গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে তাঁর ইউনিক দিক হচ্ছে-এক সাথে তিনি মেঠো রিপোর্টিং, জীবনবাদী গান, টক-শো সঞ্চালনা, খবরপাঠ ও গদ্য লেখেন ৷ দেশের ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অামিরুল মোমেনীন মানিককে অাখ্যা দোয়া হয় হয় 'শুদ্ধ উচ্চারণের সংবাদকর্মী' হিসেবে ৷ টিভি সাংবাদিকতায় মানিকের হাতেখড়ি ভারতের এনডিটিভির নির্বাহী প্রযোজক অভিজিৎ দাশুগুপ্তের কাছে ৷ গানের ক্ষেত্রে তিনি ক্ষুদ্র হলেও অালাদা ধারা তৈরী করেছেন ৷ মানিক এর নাম দিয়েছেন-মানুষমুখী গান ৷ অবশ্য প্রচলিত গণমাধ্যম তাঁকে বলে 'ব্যতিক্রমী গানের শিল্পী'৷ অবাক শহরে ও অায় ভোর তাঁর বিপুল অালোচিত এ্যালবাম ৷ ছোটবেলায় কবিতার নামে ছাইপাশ লিখতেন ৷ এখন সচেতনভাবে এটা এড়িয়ে চলেন ৷ সোজাসাপ্টা গদ্য লেখেন ৷ সমাজের অসঙ্গতি চোখে অাঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন ৷ তাঁর লেখা 'বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষক' ছিলো বইমেলায় তরুণদের মধ্যে দ্বিতীয় সবোর্চ বিক্রিত বই ৷ কিংবদন্তি নচিকেতার সঙ্গে তাঁর ভিডিও গানের কৃতিত্ব এপার বাংলা ওপার বাংলায় প্রথম ৷ ২০১৬ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারীতে টিভি সাংবাদিকতায় মানিকের ১০ বছর পূর্ণ হচ্ছে ৷ এর অাগে স্কুল সময়ের ৫, কলেজ বেলার ২, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫, পেশাগত জীবনের ১০; টোটাল ২২ বছরের লড়াই ৷ অামিরুল মোমেনীন মানিক সাংবাদিকতায় পেয়েছেন সম্মানজনক পুরস্কার 'ইউনেস্কো ক্লাব জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড '৷ শুধুমাত্র অন্তহীন কর্মতৎপরতার কারণে তাঁর কিছু শত্রুও তৈরী হয়েছে ৷ মানিক এদের নাম দিয়েছেন- বেকুব নপুংসক ৷ তবে শুভাকাঙ্ক্ষীরাই তাঁর কাজের মূল প্রেরণা ৷ পেয়েছেন উদীচী ইতিাস প্রতিযোগিতা পুরস্কার, রিপোর্টার্স ইউনিটি লেখক সম্মাননা, সাঁকো এ্যাওয়ার্ড, মৃত্তিকা পদকসহ বেশ কিছু পুরস্কার ৷ প্রফেশনালিজ ও প্র্যাগমাটিজম, তাঁর সারাজীবনের ধ্যান ৷ ২০১৬ সালে অামিরুল মোমেনীন মানিকের মূল শ্লোগান- বাঁচো এবঙ বাঁচাও ৷