"অবিরাম পথ খোঁজা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর অবিরাম পথ খোঁজা বইয়ের প্রবন্ধগুলােতে একটা পথের অনুসন্ধানের চেষ্টা আছে। দার্শনিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিক, সমাজ-সংস্কারক—সবাই চেষ্টা করেন পথের বিষয়ে নিজেদের চিন্তা ও দুশ্চিন্তাকে অন্যদের কাছে পৌছে দিতে এবং আশা রাখেন নিজেদের ভাবনাগুলােকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়িত করার। এ কাজ সারা বিশ্বে যেমন ঘটেছে, তেমনি ঘটেছে আমাদের দেশেও। এ বইয়ের প্রবন্ধগুলােতে ওই পথানুসন্ধানেরই কিছু নিদর্শন নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে যে অসুখ বিরাজমান, তার কারণকে লেখক পতনকালীন পুঁজিবাদের দুঃশাসন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। পুঁজিবাদ ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় বেড়ে উঠেছে। এখন চেষ্টা চলছে তাকে বিদায় করে দিয়ে মানুষের সঙ্গে মানুষের মানবিক সম্পর্ক স্থাপনের পথ উন্মুক্ত করার। লেখক এই চেষ্টার সমর্থক। বইয়ের সব প্রবন্ধেই বিশ্বব্যবস্থার কথা আছে। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তাঁর অতুলনীয় ভাষায় কঠিন বিষয়কে সহজ করে লিখেছেন। প্রবন্ধগুলােতে একটা গল্প বলার ধরন রয়েছে। তাতে বক্তব্য হালকা হয়নি, বরং নিজস্ব গুরুত্ব বজায় রেখে আরও হৃদয়গ্রাহী হয়ে উঠেছে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (জন্ম. ১৯৩৬) পেশায় সাহিত্যের অধ্যাপক এবং অঙ্গীকারে লেখক। এই দুই সত্তার ভেতর হয়তো একটা দ্বন্দ্বও রয়েছে, তবে সেটা অবৈরী, মোটেই বৈরী স্বভাবের নয়। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, অবসরগ্রহণের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রফেসর এমেরিটাস হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি শিক্ষা লাভ করেছেন রাজশাহী, কলকাতা, ঢাকা এবং ইংল্যান্ডের লীডস ও লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখার কাজের পাশাপাশি তিনি ‘নতুন দিগন্ত’ নামে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। তার গ্ৰন্থসংখ্যা আশির কাছাকাছি। তার অকালপ্রয়াত স্ত্রী ড. নাজমা জেসমিন চৌধুরীও লিখতেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।