"কোয়ান্টাম ফিজিক্স" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই বদলে গেল পদার্থবিদ্যার ইতিহাস। জন্ম হলাে নতুন এক বিজ্ঞানের। প্লাঙ্কের কোয়ান্টাম তত্ত্বের হাত ধরে পথ চলা শুরু বিজ্ঞানের নবতম শাখাটির বিজ্ঞানী নীলস বাের একঝাঁক তরুণ শিষ্য নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লেন অতি পারমাণবিক জগতের রহস্যভেদ করতে। জন্ম হলাে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার। নতুন এই বিজ্ঞান তছনছ করে দিল প্রকৃতির চিরচেনা নিয়মগুলােকে। অনিশ্চয়তাই হয়ে উঠল আধুনিক পদার্থবিদ্যার মূল ভিত্তি। এই বইয়ে পদার্থবিদ্যার নতুন ও জটিলতম শাখাটিকে সাধারণ পাঠকের বােধােগম্যের ভেতরে আনার চেষ্টা করা হয়েছে সহজ-সরল প্রাঞ্জল গদ্যে। সেই সাথে উঠে এসেছে কালের গর্ভে গুমরে মরা আধুনিক বিজ্ঞানের অনেক অজানা ইতিহাস। "কোয়ান্টাম ফিজিক্স" বইয়ের ভূমিকা: কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিয়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক আছে। অনেকেই ভাবে, সাধারণ মস্তিষ্কে এটা বােঝা সহজ নয়। এর জন্য অতি মেধাবী হতে হবে। বিজ্ঞানী-টিজ্ঞানী আরকি। তাছাড়া দুর্বোধ্য গণিত না জনলে নাকি কোয়ান্টাম ফিজিক্স বােঝা অসম্ভব । অনেকে আবার মনে করেন, কোয়ান্টাম জগৎ বাস্তব জ্ঞানে বোেঝা সম্ভব নয়। এটা ঠিক, কোয়ান্টাম ফিজিক্স বেশ জটিল। তবে দুর্বোধ্য নয়। চেষ্টা করলে স্কুলের গণিত আর বিজ্ঞানের জ্ঞান দিয়েই সেটা বােঝা সম্ভব। আমি জানি, এই কথাটা অনেকেই মানতে চাইবেন না। তাঁদের বলব দয়া করে বইটা শুরু থেকে শেষ করুন, আশা করি কোয়ান্টামের ধ্রুম্রজাল কেটে যাবে। অন্তত প্রাচীন কোয়ান্টাম বা কোয়ান্টাম তত্ত্ব কি, সেটা বুঝতে বেগ পেতে হবে না। আর এই বইটা পড়ার জন্য আপনাকে ক্যালকুলাস, টেন্সর বিশ্লেষণ, হ্যামিল্টনীয়ান গতিবিদ্যা, ফুরিয়ার ধারা এমনকি ম্যাটিক্স বলবিদ্যার দখল না থাকলেও চলবে। বাস্তব জগতের সাথে কোয়ান্টাম জগতের সাদৃশ্য তেমন নেই। তবু কিছু কিছু বিষয় বােঝাতে বাস্তব জগতের উদাহরণ টানা হয়েছে। উদ্দেশ্য, পাঠকের মনে কোয়ান্টাম জগতের একটা ছবি তৈরি করা। আর সেই ছবি দেখতে গিয়ে পাঠক কোয়ান্টাম জগৎ আর বাস্তব জগতকে মিলিয়ে ফেলবেন না বলেই আমার বিশ্বাস। বইটাতে শুধু প্রচীন কোয়ান্টাম আর কোয়ান্টাম বলবিদ্যা নিয়েই আলােচন করা হয়নি, কোয়ান্টামের ভীত কীভাবে তৈরি হলাে, কীভাবে জন্ম হলাে পূর্ণাঙ্গ কোয়ান্টাম তত্ত্বের, সেসবও তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে গল্পের ঢংয়ে। তারপরও ভালাে-মন্দ যাচাইয়ের ভার পাঠকদের হাতে। কিছু ভুল-ত্রুটি হয়তাে রয়ে যাবে। তবে তথ্যগত ত্রুটি থাকলে, দয়া করে ই-মেইলে জানাবেন। আপনাদের মূল্যবানুমতমতই বইটির ভবিষ্যৎ সংস্করণ নির্ভল হতে সাহায্য করবে।
আবদুল গাফফার রনি জন্ম ৩ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কাঁটাপােল গ্রামে, মাতুলালয়ে। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় ইছামতীর তীরঘেঁষা শ্যামকুড় গ্রামে তাঁর বেড়ে ওঠা । আধাবােহেমিয়ান । ঘর আছে আবার ঘর ছাড়তেও জানেন । প্রকৃতির হাতছানিতে বেরিয়ে পড়েন। দেশের পথে-প্রান্তরে, সাগরে-পাহাড়ে, জঙ্গলে । ভালােবাসেন বই পড়তে, গান নেতে। বিভূতিভূষণের অপু-দুর্গা, ইছামতী, গ্রাম, প্রকৃতি তার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছে। বিজ্ঞানের বইয়ের ভেতর থেকেও মজা খুঁজে নিতে জানেন । বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়, মুহম্মদ জাফর ইকবাল আর পথিক গুহকে আইডল মেনে লিখে যাচ্ছেন বিজ্ঞান, প্রকৃতি বিষয়ক লেখা এমনকি গল্পও। পড়া, লেখা আর ভ্রমণের পাশাপাশি দেশের জনপ্রিয়তম বিজ্ঞান ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তার সহসম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৫টি। শিশুতােষ গল্পের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড'।