মানুষের পরিচয় নাকি সে জীবনে কী হতে চায় তার ভেতরেই। তাহলে আবু জহরত ইমরান, যে স্পষ্ট করে জানত, সে ক্রিকেটার হতে চেয়েছিল, সে কেন ক্রিকেটার হতে পারল না? ঘটনাচক্রে ক্লাব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হলো। পরে সে চেয়েছিল খেলাধুলার শিক্ষক হিসেবে কোনো একটি বিদ্যালয়ে চাকরি করতে। সেই চাকরি খুঁজতে গিয়ে পরিচয় হলো সারাবান তহুরা ওরফে সারাহ্র সঙ্গে। স্কুল শিক্ষিকা সারাহ্ তার একটি দিকের পরিচয় মাত্র, পেশাগত পরিচয়। কোনো এক রহস্যময় কারণে তার স্বামী তাকে ছেড়ে গিয়েছিল। প্রথাগত সুন্দরী সে নয়, কিন্তু রহস্যময়ী, আছে এক অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণ। তার জন্য প্রায় পাগল হতে বসেছিল এলাকার মাস্তান, পরে কমিশনার, আমান ডেভিড। অপহরণ করেছিল সারাহ্কে, করেছিল অদ্ভুত সব আচরণ। সারাহ্কে কাছে টেনে নিয়েছিল নির্বাচনে পরাজিত মিল্লাত হোসেন তরফদার, যিনি কিছুদিন আগেও ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। সারাহ্ সমর্পিত হয়েছিল তার কাছে। নিজেকে দেওয়ার ভেতর দিয়ে অন্যকে জানতে চাওয়ার একটা খেয়াল বার বারই জেগে ওঠে সারাহ্র ভেতরে। কিন্তু জহরত, আমান ডেভিড বা ওই প্রাক্তন সাংসদ, এদের কারো কাছেই আসলে উন্মোচিত হয়নি সারাহ্র প্রকৃত মুখ। সারাহ্ও কতটুকু জানতে পেরেছিল তাদের? সে কি খুঁজছিল কাউকে? নাকি চেয়েছিল, কেউ তাকে খুঁজে নিক? নিয়তি তাকে নিয়ে দাঁড় করাল অন্যখানে। বিস্মৃত অতীত থেকে একজন মানুষ হাজির হলো তার সামনে।
জন্ম ২২ জানুয়ারি ১৯৭৩। লেখালেখি করছেন নব্বই দশকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে। লিখে চলেছেন গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও সমালোচনা; করেছেন অনুবাদ ও গবেষণামূলক কাজও। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বই ৭টি। ২০০৭ সালে রাত্রি এখনো যৌবনে উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির জন্য পেয়েছিলেন ‘কাগজ তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার’। জীবনের বিচিত্র বিভঙ্গের প্রতি আগ্রহের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই তাঁর। বিশ্বাস করেন, ভালোবাসাই হলো জগতের সমস্ত প্রশ্ন, সমস্যা ও সংকটের একমাত্র উত্তর। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনী উচ্চবিদ্যালয় চট্টগ্রাম থেকে প্রাথমিক, সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পার হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর; পরবর্তীকালে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে ‘তুলনামূলক নাট্যতত্ত্বে’ পিএইচডি অর্জন করেছেন।