"রোমিওপ্যাথি" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ছােট ভাই আশপাশে তাকিয়ে মাথা চুলকায়। ভাই, আপনেতাে ওরে চিনেন। ওই যে আমার ইয়ারে ... সে তাে প্রতি ইয়ারে ইয়ারে চেঞ্জ হয়। ছােটভাই ধরা খাওয়া হাসি হাসে। আচ্ছা আপনার লগে পরিচয় করামু নে। সময় চইলা আসছে । সময় চলে আসছে? কিসের? মেয়াদ শেষের? আরে না। কালকা আমার গার্লফ্রেন্ডের জন্মদিন। আপনেরে। নিয়া যামু লগে। আমাকে! হ। তা বিনিময়ে কি করতে হবে? বিনিময় কইতেছেন ক্যান ভাই। বলেন ভালােবেসে কি করতে হবে। গার্লফ্রেন্ড তাের আর ভালােবাসা দেবাে আমি! আপনে নাহ একটা ‘যাহ দুষ্টু’ টাইপ লােক। ছােট ভাইয়ের ঠোটে এবার আবদারের হাসি। ভাই, জন্মদিন উপলক্ষে অল্পের মইধ্যে সুন্দর দেইখা কিছু একটা লেইখা দেন। আমি শুধু ইতিটা বসাইয়া লমু। ইতি, তােমার আমি। সেটাতাে আমিও বসায়া দিতে পারি। না ভাই। পুরাটা ভেজাল দেয়া ঠিক হবেনা। আপনি সাহিত্য মিশাইয়া প্রেম ভালােবাসা নিয়া কয়েকটা লাইন লেইখা দেন। বােঝেনইতাে, মেয়েরা শিল্প-সংস্কৃতি লাইক করে। আগেরজন তাে করতাে না। ওর কথা আর কইয়েন না। বাপ ইটের ভাটার মালিক তাই মাইয়ার মন-দিল ছিল ইটের মতাে শক্ত। হা হা হা। তা বর্তমানে যিনি আছেন তার মন-দিলের কি অবস্থা? নরম। বাংলার ছাত্রী। জীবনানন্দ দাশরে চেনে। শঙ্খ ঘােষের কবিতা পড়ে। আজিজ মার্কেটে ঢু মারে। আগেরটার মতাে টান দিয়া শাড়ির দোকানে নিয়া যায় না। তাই? হ ভাই। দেননা কিছু লেইখা। আপনার মইধ্যে একটা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আছে। এখন যৌবন যার ... আচ্ছা ঠিক আছে। একটা কাগজ দে। ছােটভাই পুরাে খাতা বাড়িয়ে দেয়।
পলাশ মাহবুব আমাদের লেখালেখি জগতের একটি অতি পরিচিত নাম। লিখছেন প্রায় দুই দশক ধরে। শুরুতে ছড়া লিখেছেন দাপটের সঙ্গে। এরপর গল্প, ছোট-বড় সবার জন্য। উপন্যাস লেখার শুরু তার কিছু পর থেকে। ‘টো টো কোম্পানি’ তার জনপ্রিয় কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সিরিজ। ইতিমধ্যে এই সিরিজের সাতটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে শুরু করেছেন আরেকটি কিশোর সিরিজ ‘লজিক লাবু’। টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। বর্তমানে দেশের জনপ্রিয় নাট্যকারদের মধ্যে তিনি একজন। রম্য লেখায় পলাশ মাহবুবের আছে নিজস্ব কথন ভঙ্গি। সাবলিল ভাষা আর বক্তব্যের তীব্রতা তার লেখার সৌন্দর্য। অনুষ্ঠান নির্মাতা হিসেবেও পলাশ মাহবুব একটি অগ্রগণ্য নাম। টেলিভিশনের জন্য ইতিমধ্যে দুই হাজারেরও বেশি অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। লেখালেখির জন্য পেয়েছেন অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬, পশ্চিমবঙ্গের অন্নদাশঙ্কর রায় সাহিত্য পুরস্কার, মীনা অ্যাওয়ার্ড, এসিআই-আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ আরও কিছু পুরস্কার। নির্মাতা হিসেবে পেয়েছেন নাট্যসভা পদক। পলাশ মাহবুব পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। সেখান থেকে পেশা হিসেবে কিছুকাল সাংবাদিকতা করেছেন সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে। তারপর বেশ একটা লম্বা সময় কাজ করেছেন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগে। বর্তমানে তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেট ও দৈনিক সারাবাংলা’র উপ সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।