এই কাহিনি এক জজ কোর্ট চত্বরের। বিচিত্র পেশার ও অদ্ভুত গড়নের জনতার ভিড় সেখানে। কারও আগমন মামলার কারণে, কারও পেশার প্রয়োজনে, কেউ-বা অবশ্যই পেটের দায়ে। মামলা মোকদ্দমা অফিস কাছারির কাজ ফুরোলে চত্বর হয় জনশূন্য, থেকে যায় কেবল পেট আর পেশার দায়ে ভোগা মানুষ; যাদের সাধারণ পরিচয় ক্যানভাসার। ছোট্ট ডুগডুগি বাজিয়ে এখানে আসা মানুষকে যারা আহ্বান জানায়। এই ক্যানভাসারদের ভিতরে বয়সি মোসলেম উদ্দিন, আদালতের আঙিনায় কাপড় ধোয়ার পাউডার বিক্রি যার ভাত জোগায়। আছে গাছতলায় প্রবীণ বইবিক্রেতা বারিক। কিন্তু কাহিনির মূলস্রোত বয়ে চলে বানরের খেলা দেখানো আজগর আর খেলাওয়ালা সুকুমারকে নিয়ে। সঙ্গে আছে আরও কয়েকজন। এখানে একই সঙ্গে তারা বন্ধু ও প্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের কেউ দেখায় সাপের কারসাজি, কেউ বেচে কবিরাজি গাছগাছড়া, কেউ কান পরিষ্কার করে, কেউ দাঁত তোলে। এদিকে আজগর আর সুকুমারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্রোতের শ্যাওলার মতো ভেসে আসা দুই নারী, জরিনা ও ঝিলিক। রহস্যময়ী জরিনা শত অনটনেও আজগরের সঙ্গেই থাকে। ওদিকে গন্তব্যহীন ঝিলিক যেমন এসেছিল, সেভাবেই হঠাৎ নিরুদ্দিষ্ট হয়। এইসমস্ত সর্বহারার জীবন পরম মমতায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে এই উপন্যাসে। এমন ছিন্নমূল বেঁচে-থাকার কথা ইতিপূর্বে এভাবে বলা হয়নি।