রানী অহল্যাবাঈ হোলকারকে ইংলণ্ডেশ্বরী প্রথম এলিজাবেথের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এছাড়াও দেশ-বিদেশের আরো অনেক অধিশ্বরীর সঙ্গে তাঁর সমান প্রশংসা করা হয়েছে। আসলে রানী অহল্যাবাঈয়ের কৃতিত্ব যুদ্ধবিগ্রহ, রণকুশলতা অথবা মারাঠা সাম্রাজ্যবাদের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়নি। শ্বশুর, স্বামী এমন কী নিজ পুত্রের অকাল প্রয়াণের পর অহল্যাবাঈ পেশোয়ার সম্মতিক্রমে তাঁর শ্বশুর মলহররাও হোলকারের হাতে তৈরি খান্দেশ এবং মালবের শাসনভার গ্রহণ করেন। তাঁর শাসন ব্যবস্থার সুষ্ঠ রূপায়ণে ইন্দোর দ্রুত বাণিজ্যিক লেনদেনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে। পার্বত্য ভিল উপজাতি যারা তার রাজ্যের সঙ্গে বিদেশি বণিকদের ব্যবসা বাড়াতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছিল, কঠোর হস্তে রানী তাদের দমন করেন। ইন্দোর এত দ্রুত ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে যে লোকে বলতে শুরু করে তারা যেখানে বাস করে যেটি মোট ছয়শত কিমি দূরের বোম্বাই শহরের মিনি সংস্করণ। গোয়ালিয়র, বরোদা কেউ ইন্দোরের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। তাঁর ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের ষোলো কোটি টাকা রানী ব্যয় করেন মন্দির, পথঘাট, দুর্গম গিরিপথে পথিকের আশ্রয়ের চটি নির্মাণে। সুদূর বিলেতে বসে এক ইংরেজ তাঁর সম্বন্ধে একটি কবিতা লেখেন। উপসংহারে সেটি লিপিবদ্ধ হয়েছে। এই মহীয়সী রমণী জীবনে অনেক দুঃখ পেয়েছেন। একমাত্র কন্যা মুক্তাবাঈ স্বামীর মৃত্যুর পর তার সঙ্গে চিতায় সহমরণে গেলে সেই দৃশ্য তাঁর চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। এমন কী তাঁর ফুটফুটে নাতি সহসা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে অহল্যাবাঈকে তাও সহ্য করতে হয়েছে।
Debol Debborma ভন্ম ওড়িশার ঝাড়সুগদায় মাতামহের বাসস্থলে। পিতা চণ্ডীচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ছিল বদলির চাকরি। সেই সুবাদে শৈশব-কৈশাের কেটেছে দূর মফঃস্বলের স্থান থেকে স্থানান্তরে। মেদিনীপুরের পাঁচটি স্কুলে ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়া। সালকিয়া অ্যাংলাে-সংস্কৃতি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন। বেলুড় ও বাঁকুড়ায় আই. এস-সি.। বাঁকুড়া ক্রিশ্চান কলেজ থেকে স্নাতক। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। কর্মজীবনের সূচনায় স্কুল-মাস্টারি। মফঃস্বল এবং কলকাতার স্কুলে। মাস কয়েক এ. জি. বেঙ্গলের চাকরি। তারপর ড. বি. সি. এস. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাণিজ্যকর আধিকারিক সহকারী কমিশনার হওয়ার পর অবসর। বর্তমান নিবাস সল্ট লেকে। কলেজ জীবন থেকেই সাহিত্যরচনায় ঝোক। প্রবাসী আয়ােজিত এক গল্প। প্রতিযােগিতায় জীবনের প্রথম বড়দের গল্প। সেই গল্পে বিশেষ পুরস্কারের সম্মান। এরপর থেকে নিয়মিত লেখালেখি। প্রথম অজিত চট্টোপাধ্যায় এই স্বনামে, পরে দেবল দেববর্মা ছদ্মনামে। প্রকাশিত গ্রন্থ প্রায় ৬০ এর অধিক। বেতারে-দূরদর্শনে একাধিক কাহিনির সম্প্রচার, নাটক সিরিয়াল রূপে। পছন্দ দূরভ্রমণ, সবুজ রঙ।