বইটি সম্পর্কে— বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংধীজনের অভিমত-- রাজ্য সরকারের সাপ্তাহিক মুখপত্র পশ্চিমবঙ্গ পত্রিকায় প্রখ্যাত রবীন্দ্র গবেষক শ্রীনেপাল মজুমদার --- সম্প্রতিকালে বৃহত্তর কলকাতার উন্নয়ন ও জনজীবনকে ঘিরে যে কয়খানি উপন্যাস রচিত হয়েছে তার মধ্যে দেবল দেববর্মার ‘ওপার কলকাতা' নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। কলকাতার উৎপত্তি অর্থাৎ কিভাবে ইংরেজ আমলে ..কলকাতা মহানগরী আস্তে আস্তে গড়ে উঠলো এবং দেশ বিভাগ ও স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে পূর্ব দিকে বেলেঘাটা, কাদাপাড়া, উল্টোডাঙা, বাগমারী, সল্টলেক ইত্যাদি নিয়ে আধুনিক বৃহত্তর কলকাতা মহানগরী গড়ে উঠেছে, দেবলবাব, তাঁর এই উপন্যাসে এসবের সজীব এবং বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। এই উপন্যাসের শর, ফকির দাস, জিভেগজা ও হীরালালের মতো বেলেঘাটার মানুষদের জীবন কথা নিয়ে । লাখোপতি হীরালালের আমেরিকা যাত্রা আর চরম দারিদ্র ও দৈন্যদশায় ফকির দাসের গঙ্গা যাত্রা বা মৃত্যু দিয়ে উপন্যাসের শেষ পরিণতি টানা, এটা প্রতীকী ও সাংকেতিক দিক থেকেও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ ও অর্থবহ করে তুলেছে। দেশ পত্রিকায় সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ------ বিশেষ একটি চরিত্র বা পরিবার এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু, নয়। এই ফরসাইট সাগার উপজীব্য পরো একটি অঞ্চল, তার যাবতীয় বৈশিষ্ট্য, প্রতিটি বাসিন্দা, দীর্ঘ কালপ্রবাহের কলতান...! এই কলকাতা বদলাবে, — প্রকাণ্ড পথঘাট, নতুন বাড়িঘর, উড়ালপলে, বাইপাস, পাতাল রেল, লবণ হ্রদে প্রাণবন্ত ঝলমলে উপনগরী। যত বদলাবে, জীবন আরো জটিল হবে। একালও প্রাচীন হবে আর ফকির দাসের মতো ভাববে এক বিচিত্র সমৃদ্ধি- ভরা ভবিষ্যৎ বুঝি আসছে, যে ভবিষ্যতে পিতরা হাসবে, চামেলী হবে সলজ্জ কলবধ । আনন্দবাজার পত্রিকায় শ্রীকমল চক্রবর্তী—- দেবল দেববর্মা সাহিত্যে নতুন নন। জনপ্রিয় । ওপার কলকাতা আলোচ্য গ্রন্থ। লেখন ভঙ্গিমা সরেস, দেখার চোখও গভীর। রতীশ, রঘুনন্দন, অরণ্য, ফকির প্রভৃতি খুব চেনা।
Debol Debborma ভন্ম ওড়িশার ঝাড়সুগদায় মাতামহের বাসস্থলে। পিতা চণ্ডীচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ছিল বদলির চাকরি। সেই সুবাদে শৈশব-কৈশাের কেটেছে দূর মফঃস্বলের স্থান থেকে স্থানান্তরে। মেদিনীপুরের পাঁচটি স্কুলে ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়া। সালকিয়া অ্যাংলাে-সংস্কৃতি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন। বেলুড় ও বাঁকুড়ায় আই. এস-সি.। বাঁকুড়া ক্রিশ্চান কলেজ থেকে স্নাতক। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। কর্মজীবনের সূচনায় স্কুল-মাস্টারি। মফঃস্বল এবং কলকাতার স্কুলে। মাস কয়েক এ. জি. বেঙ্গলের চাকরি। তারপর ড. বি. সি. এস. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাণিজ্যকর আধিকারিক সহকারী কমিশনার হওয়ার পর অবসর। বর্তমান নিবাস সল্ট লেকে। কলেজ জীবন থেকেই সাহিত্যরচনায় ঝোক। প্রবাসী আয়ােজিত এক গল্প। প্রতিযােগিতায় জীবনের প্রথম বড়দের গল্প। সেই গল্পে বিশেষ পুরস্কারের সম্মান। এরপর থেকে নিয়মিত লেখালেখি। প্রথম অজিত চট্টোপাধ্যায় এই স্বনামে, পরে দেবল দেববর্মা ছদ্মনামে। প্রকাশিত গ্রন্থ প্রায় ৬০ এর অধিক। বেতারে-দূরদর্শনে একাধিক কাহিনির সম্প্রচার, নাটক সিরিয়াল রূপে। পছন্দ দূরভ্রমণ, সবুজ রঙ।