মার খাওয়া মানুষ যারা নিজের পরিচিত জগতের মাঝে খাবি খায়, শিশুর মতো তারাও অবিরাম কল্পনার জগতে ছুটে যায়। নিজের আশ্রয় নির্মাণের চেষ্টা করে। বাস্তবতাকে বুঝে ওঠার একটু সুযোগ তাতে হয়তো আসে। যে কারণে নিঃসঙ্গ মানুষ নক্ষত্রের সঙ্গেও কথা বলে, নানা প্রশ্ন করে। তবে নক্ষত্রের উত্তর শেষ পর্যন্ত নিজের জিভেই নির্মাণ করে নিতে হয় তাকে। তাতে অন্তত একেবারে আত্মনিয়ন্ত্রণহারা হয়ে পড়তে হয় না, যাকে বলে বদ্ধ উন্মাদ। বাস্তবতা থেকে কল্পনায়, কল্পনা থেকে বাস্তবতায় নিরাশ্রয় ওড়াউড়ি করা এসব মার খাওয়া নিঃসঙ্গপ্রায় মানুষের কাছে জগতটা প্রায়ই মনে হয় গোলকধাঁধা। আবার কচিৎ দুয়েকবার এও মনে হয় - ওহ্ তাহলে সবই এমন স্পষ্ট! রবিউল ইসলামের গল্পের মানুষেরা অবিরাম বাস্তবতা-কল্পনার ‘সীমান্ত’লঙ্ঘনকারীদেরই এক অস্থির সত্তা। তারা যোগাযোগ স্থাপন করতে চায়, কিন্তু আবিষ্কার করে চারপাশের মানুষের সঙ্গে যেমন, নিজের সঙ্গেও তা করে উঠতে পারছে না। বরং সম্পর্কের রঙধনুময় পথের ওপর বুটের ছাপ পড়ে যায়। অন্যকে হত্যা করে আবিষ্কার করে, নিজেকেই হত্যা করেছে। কিংবা তাও নয়, ভিন্ন কিছু। বাস্তবতার সীমায় পরাজিত হলেও, একদিন কোনো বিরল মুহূর্তে আবিষ্কার করে বাওবাবের বনসাইয়ে ফুল ফুটেছে। ফুল ফোটার মতো সহজ-স্বাভাবিকতাও তখন কী দুর্লভ হয়ে ধরা দেয়! ব্যক্তির দুই জগতে ওড়াউড়ি গল্পেও যেনো আত্মসমীক্ষারই কাল্পনিক ল্যাব। সেখানে মানুষের সামাজিক পরিসরেরই আরেক রূপ ভাঁজ খুলতে থাকে - দেখায়, এটাও বাস্তব। কিন্তু যুক্তি ও যুক্তি-অতিক্রমী তৃতীয় কোনো জগতেও যেনো সুস্থির কোনো নীড় নেই মানুষের! - রথো রাফি