"পঁচিশ বছর পরে" ফ্ল্যাপের লেখা: মানুষকে রাস্তায় নামতে হলাে। একাত্তরেই ১৬ ডিসেম্বরে বিজয় অর্জনের পর ২৯ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচারের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর পরই ৭২-এর জানুয়ারিতে নিখোঁজ হলেন জাহির রায়হান তাঁরই নিকটাত্মীয় শহীদুল্লা কায়সারকে মিরপুরে বিহারি এলাকায় খুঁজতে নেমে। বিচার অনুষ্ঠিত হয়, ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে দালাল আইনে। ১৯৭৫ সালের ২০ এপ্রিল শেখ মুজিবর রহমানের ক্ষমতায় থাকাকালিন বিচার হয় ২৮৪৮ জনের এবং শাস্তি পায় ৭৫২ জন। কিন্তু ১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন প্রণয়ন করা হয়। যা সংবিধানে স্থান পায়। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবকে তাঁর পরিবারসহ হত্যা করা হয়। এরপর ৩১ ডিসেম্বর ১৯৭৫ সালে দালাল আইন বাতিল করার মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের প্রভাবে আটক থাকা সকল রাজাকার মুক্তি পেয়ে যায়। মানুষকে রাস্তায় নামতে হলাে। ১৯৮১ সালে ২১ মার্চ মুক্তিযােদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান কাজী নুরুজ্জামান রাজাকার-আলবদরদের বিচারের জন্য ৭ দফা দাবি পেশ এবং আন্দোলনের কর্মসূচি ঘােষণা করে। জিয়ার মৃত্যুর পর দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। এরপর মুক্তিযােদ্ধা সংসদ কর্তৃক ১৯৮৪, ৮৬, ৮৯ সালে, এই রাজাকার আলবদরদের বিচারের জন্য এরশাদ সরকারকে চাপ প্রয়ােগ করা হয়। এর পরই জেনারেল এরশাদের পতন হয় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে। ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গােলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘােষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে, তিনি হন এর আহ্বায়ক। মানুষকে আবার রাস্তায় নামতে হলাে। এরপর ২৫ বছর গড়িয়ে গেলাে। এই ২৫ বছরই এই গ্রন্থ রচনার উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, পঁচিশ বছর পরে’ কবি জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতার নাম। তাঁর সেই কবিতার নামে এই বইটি আপনাদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হলাে।
আমান-উদ-দৌলা সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত। বর্তমানে বাংলাদেশে বইপত্র প্রকাশ করছেন। এইদেশ ডটকম’ (eidesh.com)-এর প্রকাশক ও এর অন্যতম সম্পাদক। এর আগে ২০১৫-১৬ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে বেনারনিউজ ডটঅর্গ (benarnews.org)-এ বাংলা বিভাগে সম্পাদনার দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থে বাংলাভাষায় একটা ওয়েবসাইট (সঠিক সংবাদ) নির্মাণে সহায়তা ও সম্পাদনায় কাজ করেন।। তার আগে দীর্ঘ কয়েক বছর নিউ ইয়র্কে জেনারেল ডাইনামিক্স-এর অনুবাদ কাজে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া ইন্ডিয়ান টিভিতে সাংবাদিক ও বাংলা সাপ্তাহিক কাগজ-এ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে দেশ ছাড়ার আগে দৈনিক জনকণ্ঠ-তে কূটনৈতিক সংবাদদাতা হিসেবে ১৯৯৪ সাল থেকে নিয়ােজিত ছিলেন। এছাড়া সাপ্তাহিক স্বদেশ (১৯৮৫), সাপ্তাহিক বিচিন্তা (১৯৯৭), সাপ্তাহিক সচিত্র সন্ধানী (১৯৮৮), সাপ্তাহিক পূর্বাভাস (১৯৮৯), সাপ্তাহিক খবরের কাগজ (১৯৯০), দৈনিক আজকের কাগজ ও দৈনিক ভােরের কাগজ-এ (১৯৯১ ও ১৯৯২) সালে কর্মরত ছিলেন। নিউ ইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া ও ওয়াশিংটন ডিসিতে সর্বমােট ১৭ বছর কাটিয়েছেন। এখন দেশেই থাকেন। এশিয়া, ইউরােপ ও আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়ানাের ইচ্ছে। বর্তমানে আর কোথাও চাকুরি করবেন না। নিজের লেখক সত্বা গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন এবং এইদেশ ডটকম’-এর কাজে নিয়ােজিত থাকবেন। লেখকের আগের বই- গােলাম আযমের নাগরিকত্ব মামলা (১৯৯১), একাত্তরের ঘাতকদের কেন বিচার চাই (১৯৯৩)। পরবর্তি গ্রন্থ: আগামি ২৫ বছরের গণমাধ্যম (২০১৭-২০৪১)।