"সামন্তবাদের মুখোমুখি বঙ্কিম রবীন্দ্রনাথ শরৎচন্দ্র" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: সামন্তবাদ আমাদের সংস্কৃতির অনস্বীকার্য অংশ। অর্থনীতি থেকে সে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে, কিন্তু সংস্কৃতিতে এখনাে আছে। আমাদের তিনজন প্রধান লেখক- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সামন্তবাদের মুখােমুখি হতে হয়েছে। তাদের সময়ে সামন্তবাদের সাংস্কৃতিক উপস্থিতি এখনকার তুলনায় যে অধিক প্রত্যক্ষ ও ক্ষমতাসম্পন্ন ছিল তাতে তাে কোনাে সন্দেহ নেই। লেখক হিসেবে তারা নিজেরা অগ্রসর ছিলেন; কিন্তু শিল্পীর অগ্রগমনের সঙ্গে ব্যক্তির অগ্রগমনটা সকল সময়ে সমানমাত্রায় ঘটে না। এঁদের ক্ষেত্রেও ঘটেনি। দেখা যাচ্ছে সামন্তবাদ শিল্পীর জন্য যতটা, ব্যক্তির জন্য সে-তুলনায় বেশি পরিমাণেই সত্য ছিল। সামন্তবাদের উপস্থিতির সঙ্গে এরা তিনজন কে কিভাবে মুখােমুখি হয়েছিলেন সেই বিষয়টি নিয়ে এ বইতে আলােচনা করা হয়েছে। বইটির লেখকের একটি নিজস্ব দৃষ্টিকোণ রয়েছে; সেখান থেকেই তিনি ঘটনাটিকে দেখবার চেষ্টা করেছেন। তিনি প্রমাণ ও যুক্তিসহকারে লিখেছেন, কিন্তু যান্ত্রিকভাবে লেখেননি। বইটি পড়া পাঠাকের জন্য একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হবে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (জন্ম. ১৯৩৬) পেশায় সাহিত্যের অধ্যাপক এবং অঙ্গীকারে লেখক। এই দুই সত্তার ভেতর হয়তো একটা দ্বন্দ্বও রয়েছে, তবে সেটা অবৈরী, মোটেই বৈরী স্বভাবের নয়। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, অবসরগ্রহণের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রফেসর এমেরিটাস হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি শিক্ষা লাভ করেছেন রাজশাহী, কলকাতা, ঢাকা এবং ইংল্যান্ডের লীডস ও লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখার কাজের পাশাপাশি তিনি ‘নতুন দিগন্ত’ নামে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। তার গ্ৰন্থসংখ্যা আশির কাছাকাছি। তার অকালপ্রয়াত স্ত্রী ড. নাজমা জেসমিন চৌধুরীও লিখতেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।