ফ্ল্যাপে লিখা কথা হিন্দুস্তানের মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ গৌরব ও ঐশ্বর্য শিল্প ও তাজমহল । শুধু হিন্দুস্তানের মুসলমানদের নয়, মুসলিম দুনিয়ারও বটে। তাহমহলর ৯৭.৩% ব্রিটিশ দস্যু-তস্করেরা চুরি করে নিয়ে গেছে, বাকি যা আছে তা থেকে এ দাবি। ইসলাম ধর্মে মিথুন শিল্প জায়েজ নয় এবং প্রেম , সুরা ও সাকি। অথচ কবিরা এসব ছাড়া কাব্য হতে পারে না । তেমনি মনে অগোচরে মসজিদে প্রবেশ ও তার স্থাপত্যশিল্পের উন্নত দিকটি হচ্ছে মিথুন চিন্তা। গম্বুজের স্তন এবং মিনার , প্রত্যেক ভেদ করে দিনে পাঁচবার উপাসনা হয় , সে্ই সবচেতন মগ্ন উদ্দেশ্যে তাজমহলে প্রবেশ এবং তা উৎকৃষ্ট সুস্পষ্ট স্তন ও মিনার সবার জন্য। তাজমহল কিন্তু মসজিদ নয়। লোকে প্রেমের গৌরব চালান করতে এখানে আসে, এ জন্য কেউ হতাশ হয় না। তবে এ তত্ত্বের নিমিত্ত্ব বইটি রচিত নয়, উদ্দেশ্য প্রেম ও প্রেমের দর্শন। তাই যদি নাম তাজমহল দর্শন হয়-সেটা তাজমহল দেখা নয়। ইতিহাসের গভীরে হিন্দুস্তানের মুসলমান চিন্তা ও সৌন্দর্য্যের জাদুকর শাহজাহান ধর্মকে বাইরে রেখে মধ্যযুগে এই স্থাপত্য নির্মাণ করে গেছেন। তাই কেউ যদি তাজমহল আলিঙ্গন করে প্রেমের উপাসনা পায় , সেটাই সার্থক;প্রত্যেক চিত্তের যে হারানো প্রেম তাকে খুঁজে পায় তাজমহলে এসে।
প্রেমহীন দেহ জীবন শেষে দুনিয়া ছেড়ে যায় তার জন্য দু:খ, তাকে যদি জীবনে একটু প্রেমের স্পর্শ হয় বটে। তাজমহল দেখতে এসে পাইয়ে দেয়া হয় সেরা কাজটি সম্পাদন। হ্যাঁ, সম্রাটের অশ্রু দিয়ে প্রিয়তমার স্মৃতি বিশ্বের সকল প্রেমী আর প্রেমহীন জীবনের এ মনিহার মনে ধারণ করে আর কী চাই? এই বইয়েতে মোগল আগমন হিন্দুস্তানে, মুসলমান জীবনের দৃশ্য ইতিহাস-পরিনামে মুসলমানদের আধুনিক রাজনীতি জীবন একটি খেলার মাঠে রয়েছে, তারও দর্শন রয়েছে, আর মধ্যযুগকে মুসলমানরা ছেড়ে আসেনি সে সত্য বিরাজ করছে, অন্যান্য চরিত্র ও কথার স্রোতেও আছে অস্থিরতা, তীব্র ভাঙ্গন-স্রোতে দুর্বল গাঁথুনি এটি এ লিখনে নয়, কারণ ঈশা আফেন্দি পাওয়া যায়নি।
সূচি * শাহেন শাহ হওয়ার লক্ষণ * শাহনাজের হিন্দুস্তানের দুই প্রান্তে দুই টুকরা পাকিস্তান * তাজমহলের ছায়া * শাহজাহানের বংশধর বিহারী এনে * পাকিস্তানের শাহজাহান আইয়ুব খান * বিহারীদের পূর্ব পাকিস্তান দখল * তাজমহলের ছাষা বৃক্ষ * আগ্রায় জীবন বাজ * কেমন তাজ আনার কলি থেকে মমতাজ * সেলিম কা চিড়িয়া * বিরাহ কী প্রেম কী অপ্রেম? * খুররম আরজুমান্দ তাজ সৃষ্টি * মমতাজের মৃত্যু ও শাহজাহানের হিন্দুস্তান বিক্রয় * শাহজাহানের অপত্য স্নেহেরে পরিণাম * যমুনার ভাঙ্গন স্রোতের উপর তাজ গাঁথুনি * তাজের বাকিটুকু কোথায় পেল * কিছু একটা থাকে দুনিয়াতে প্রেম * সহায়ক গ্রন্থাবলি * নির্ঘণ্ট
শামসুল আলম সাঈদ, জন্ম ১৯৪০ সালে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ইছাখালি গ্রামে। পিতা : সৈয়দুল হক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. এবং চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যাপনায় যােগ দিয়েই। চাকরি ছেড়ে একাত্তরের প্রতিরােধ সংগ্রাম এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। আবাল্য সাহিত্য চর্চা করেছেন, ১৯৬৯ সালে প্রথম কবিতার বই প্রকাশ এবং পরে কবিতা, গল্প, উপন্যাস গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ওমর খৈয়াম ও হাফিজের কাব্য ও দর্শন-চর্চা গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে। তার প্রাচীন বাংলা সাহিত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নানা গ্রন্থও রয়েছে। বিশ্বভারতীর শান্তি নিকেতন থেকে। ১৯৮২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ।