"উনিশ শতকের বাংলা ছাপাখানা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: নীরব এক যন্ত্র মানুষের মন ও মননের সরব সহায়। কালে কালে তার রূপ পালটেছে। চরিত্র পালটায়নি। তাকে নিয়ে দেশে দেশে গবেষণার ঢেউ। সে তার মূল মন্ত্র ভােলেনি। মানুষকে নীরবে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। বিদেশিদের হাত ধরে বাঙালি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে উনিশ শতকের দ্বিতীয় দশক থেকে। প্রতিষ্ঠান, সভা-সমিতি, যৌথ উদ্যোগ, ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় ছাপাখানা ডানা মেলল অনেকদূর। কিছুদিন পরে কারাের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে, কেউ বা সাফল্যে উজ্জ্বল হয়েছেন। কেউ জনমুখে নিন্দিত, কেউ বা নন্দিত। শিক্ষা-সম্পদ-কুল-শীল নির্বিশেষে বাঙালি এগিয়ে এসেছে নতুন যুগের ডাকে সাড়া দিয়ে। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির যে যুগকে ‘আধুনিক’ বলে থাকি, এই যন্ত্র বিনা তা সম্ভব হত কি? কিন্তু সেই ঐতিহ্যকে বাঙালি স্বভাবজাত অনীহায় ধরে রাখেনি হারিয়ে গেছে পারিবারিক স্মৃতি, উত্তরাধিকারীদের হাতে বেঁচে নেই যন্ত্রের স্ত্রীর বা কাহিনী। বিদেশে সাগ্রহে যখন রক্ষণাবেক্ষণ চলে, তখন। আমাদের চোখ বুজে থাকা বড় বেদনাদায়ক। বইটি পড়তে পড়তে পাঠক খুঁজে পাবেন বাঙালির আত্ম-উন্মােচনের এক অধ্যায়কে। নবচেতনাকে জাগ্রত করতে বাঙালির সেপ্রচেষ্টাকে অভিনন্দন না জানিয়ে উপায় নেই।