কল্লোলকে ঘিরে যে নতুনতর সাহিত্য-সৃষ্টির প্রয়াস, কালি-কলমের আত্মপ্রকাশে তা আরও প্রাণরসে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল। কারণ, কল্লোল ও কালি-কলমের মধ্যে আদর্শগত কোনও প্রভেদ ছিল না। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ভাষায় বলা যায়, একই মুক্ত বিহঙ্গের দুই দীপ্ত পাখা। কালি-কলম দীর্ঘায়ু হয়নি। ক্রমাগত এসেছে নানা প্রতিকূলতা। সম্পাদনার দায়িত্ব থেকে প্রথমে প্রেমেন্দ্র মিত্র, পরে শৈলজানন্দ মুখােপাধ্যায় সরে দাঁড়িয়েছেন। একা সামলেছেন মুরলীধর বসু। কালি-কলমের স্বল্পায়ু জীবন ঘটনাবহুল। প্রকাশিত হয়েছে অজস্র স্মরণীয় রচনা। কোনও কোনও লেখা নিয়ে বিতর্কের ঝড়ও উঠেছে। এমনকি গ্রেফতারি পরােয়ানা নিয়ে পুলিশ হাজির হয়েছে পত্রিকা-দপ্তরে। পুলিশ-বিভাগের বিচারে অশ্লীল-সাহিত্য প্রচার করেছে কালি-কলম। ধুলাে-মলিন কালি-কলমের পাতা থেকে রকমারি রচনা নিয়ে এই সংকলন ‘ নির্বাচিত কালি – কলম ‘। গল্প-উপন্যাস-কবিতার পাশাপাশি গ্রন্থিত হয়েছে মূল্যবান প্রবন্ধ। কালি-কলম প্রাচীন ঐতিহ্যবহ গ্রন্থাগারেও সহজলভ্য নয়। দুষ্প্রাপ্য পত্রিকাটির নির্বাচিত রচনার মহার্থ সংকলন প্রকাশিত হল পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সুযােগ্য সম্পাদনায়।